আমদাবাদ: কিছুদিন আগেও নিয়ম করে রোজই বিজেপির মুন্ডপাত করত শিবসেনা। শেষ পর্যন্ত মহারাষ্ট্রে আসনরফা হওয়ার পর সুর বদলেছে উদ্ধব ঠাকরের দল। স্বয়ং উদ্ধব আজ বিজেপি সভাপতি অমিত শাহের গাঁধীনগর কেন্দ্র মনোনয়ন দাখিলের আগে এখানে তাঁর সমর্থনে জমায়েতে ভাষণ দেন। মঞ্চে ছিলেন ২ কেন্দ্রীয় মন্ত্রী রাজনাথ সিংহ, নিতিন গডকরী, শরিক শিরোমনি অকালি দলের প্রধান প্রকাশ সিংহ বাদল, লোকজনশক্তি পার্টি সভাপতি রামবিলাস পাসোয়ান। ভাষণে মোদির ভূয়সী প্রশংসা করে উদ্ধব বলেন, বিরোধীদের ওঁর সমকক্ষ কোনও নেতাই নেই। অতীতে বিজেপির সঙ্গে তাঁদের কিছু মতপার্থক্য থাকলেও এখন সব মিটে গিয়েছে বলে জানান, দু দলের আদর্শ ও হৃদয় এক সুরে বাঁধা বলেও মন্তব্য করেন শিবসেনা সভাপতি।
বিজেপি সভাপতিকে শুভেচ্ছা জানাতেই তিনি জনসভায় এসেছেন বলে জানিয়ে উদ্ধব বলেন, অনেকের চোখ কপালে উঠেছে আমি এখানে আসায়। অনেকে খুশিও হয়েছেন, কিন্তু কারও কারও পেটে ব্যথা হচ্ছে! একই আদর্শবাহী দুটি দলের পারস্পরিক ঝগডায় অনেকে উল্লসিত হয়েছিল। আমাদের মধ্যে কিছু মতপার্থক্য, মনান্তর ছিল। কিন্তু অমিত শাহ আমার বাড়ি এসে বৈঠকের পর সব বিরোধ মিটে গিয়েছে। আমাদের লক্ষ্য এক। আদর্শ, হৃদয়-মন একসূত্রে বাঁধা। আমরা একজোট হয়েছি। হিন্দুত্বই আমাদের বেঁধে রেখেছে। আমার বাবা বাল ঠাকরে শিখিয়েছিলেন, যা-ই করব, আড়াল থেকে করব না। আমরা জনগণের ইস্যুই তুলেছি। কখনও পিছন থেকে ছুরি মারিনি, কখনও মারবও না। শিবসেনা, বিজেপির আদর্শ একই-হিন্দুত্ব। বাবা বলতেন, হিন্দুত্ব আমাদের শ্বাস। শ্বাস-প্রশ্বাসই থেমে গেলে বাঁচব কী করে?
শিবসেনা, বিজেপির মধ্যে যা ঘটেছে, তা আজ অতীত বলে মন্তব্য করেন উদ্ধব। বলেন, ৫ বছরের আগের ২৫ বছরের বোঝাপড়ার ইতিহাস ভুলে যাওয়া উচিত নয় আমাদের। আমরা এই দুটো দল গেরুয়া ঝান্ডা বহন করে চলেছি। বাদল সাহেব বাদে আর কেউ আমাদের হাত ধরতে চায়নি। আমরা চলতে শুরু করি। ২৫টা বছর কেটেছে। দিল্লিতে গেরুয়া পতাকা তোলার স্বপ্ন সফল হয়েছে। আজ আমাদের ভাবনাচিন্তা, আদর্শ, নেতা-সব এক।
বিরোধী দলগুলিও পরস্পরের হাত ধরলেও শিবসেনা, বিজেপির হৃদয়ের মিলন হয়েছে বলে জানান তিনি। উদ্ধব বলেন, ওদের ৫৬ জন নেতা সভায় হাত মেলাতে পারে। কিন্তু সবাই প্রধানমন্ত্রী হতে চায় বলে ভোটের আগেই দড়ি টানাটানি শুরু হয়েছে। কতদিন একসঙ্গে থাকবে, তার ঠিক নেই। ওদের জিজ্ঞাসা করতে চাই, কে ওদের নেতা। ওরা সভা করলে ওদের সমর্থকরা আপনাদের মতো একজনের নাম সমস্বরে বলবে? জনসভা থেকে দর্শকরা ‘মোদি’, ‘মোদি’ ধ্বনি তোলে।