রানাঘাট: সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন (CAA) নিয়ে কেন্দ্রের বিজেপি সরকারকে এবার চ্যালেঞ্জ ছুড়লেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় (Abhishek Banerjee)। সেই ২০১৯ সালের আগে থেকে CAA চালুর কথা বললেও, ২০২৪ সালের লোকসভা নির্বাচনের আগে তা কার্যকর করার সিদ্ধান্ত আসলে 'জুমলা' বলে অভিযোগ করেন তিনি। CAA-র পর NRC আসবে না বলে কেন্দ্রের তরফে বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হলে, তিনিও CAA-কে সমর্থন করবেন বলে এদিন চ্য়ালেঞ্জ ছুড়ে দেন অভিষেক। (Abhishek on CAA)
রবিবার রানাঘাটে নির্বাচনী সভা করেন অভিষেক। CAA নিয়ে সেখান থেকেই কেন্দ্রের বিজেপি সরকারকে নিশানা করেন তিনি। তাঁর অভিযোগ, ২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনের আগে CAA-র ঘোষণা করেছিল বিজেপি। মতুয়া, নমশূদ্র, উদ্বাস্তুদের নাগরিকত্ব দেবেন বলে ঘোষণা করেছিলেন স্বয়ং নরেন্দ্র মোদি। কিন্তু পাঁচ বছর আগে পাস হওয়া বিল নিয়ে নিয়মাবলী ঠিক লোকসভা নির্বাচনের আগেই ঠিক করার নেপথ্যে বিজেপি-র রাজনৈতিক স্বার্থ রয়েছে বলে অভিযোগ করেন অভিষেক।
অভিষেক এদিন জানান, নির্বাচনের ঠিক মুখে যে CAA কার্যকর করেছে বিজেপি, তার আবেদনপত্রটিই ৪০ পাতার। সেখানে আগে আবেদনকারীকে বাংলাদেশী, পাকিস্তানি অথবা আফগান ঘোষণা করতে হবে। এর পর তাঁর আবেদনপত্র খতিয়ে দেখা হবে। সরকারি পরিষেবা মেলে যে ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে, বন্ধ হয়ে যাবে তা-ও। এর পর জাতীয় নাগরিক পঞ্জি (NRC) এনে সকলকে বের করে দেওয়া হবে বলে দাবি করেন অভিষেক।
CAA নাগরিকত্ব কেড়ে নেওয়ার নয়, দেওয়ার আইন বলে ইতিমধ্যেই একাধিক বার দাবি করেছেন কেন্দ্রের মন্ত্রী থেকে বিজেপি নেতারা। সেই নিয়েওকেন্দ্রের বিজেপি সরকারকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে অভিষেক বলেন, "আপনারা সকলেই দেশের নাগরিক। তর্কের খাতিরে যদি নাগরিকত্ব দেওয়ার বিষয়টি মেনেও নিই, তাহলে সাত দিনের মধ্যে নাগরিকত্ব দেওয়া হোক। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র বিভাগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে জানাক যে CAA-র পর NRC হবে না, তাহলে অভিষেক বন্দ্য়োপাধ্যায় নিজে CAA-কে সমর্থন করবে। এরা শুধু মিথ্যা বলে, ভাঁওতা দেয় মানুষকে, ঠকিয়ে বেড়ায়, মৃত্যুর মুখে ঠেলে দেয়। বিজেপি-র পায়ের নখ থেকে মাথার চুল পর্যন্ত দু'নম্বরী।"
নাগরিকত্বের প্রশ্নে অসমের উদাহরণও টানেন অভিষেক। তিনি জানান, অসমে ১৯ লক্ষ মানুষের নাম উঠেছে, যার মধ্যে ১২ লক্ষ হিন্দু বাঙালি রয়েছেন। তাঁদের বন্দি শিবিরে পাঠানো হয় যাঁর নেতৃত্বে, তাঁকেই রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী করেছে বিজেপি। যাঁরা প্রধানমন্ত্রী, মুখ্যমন্ত্রী, সাংসদ, বিধা.ক নির্বাচন করেন ভোট দিয়ে, তাঁদের নাগরিকত্বের জন্য আবেদন করতে হবে কেন, প্রশ্ন করেন অভিষেক। পাশাপাশি, বিজেপি-র কোনও নেতা CAA-র জন্য আবেদন জানিয়েছেন, প্রশ্ন তোলেন।