কলকাতা: ভূরি ভূরি প্রতিশ্রুতি সত্ত্বেও পঞ্চায়েত নির্বাচনে বেলাগাম হিংসার সাক্ষী হয়েছে বাংলা। নয় নয় করে ৩৬টি প্রাণ ঝরে গিয়েছে। তা নিয়ে প্রশ্নের মুখে পড়ে নিজেদের হতাহতের সংখ্যা তুলে ধরেছে শাসকদল তৃণমূল (TMC)। সেই আবহে এবার মুখ খুললেন উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী উদয়ন গুহ (Udayan Guha)। নিজের দলের হয়ে সাফাই দিলেও, সবটা যে নিয়ন্ত্রণ করা যায়নি, মেনে নিলেন তিনি। (Panchayat Elections 2023)


রবিবার এবিপি আনন্দে মুখ খোলেন উদয়ন। বলেন, "যা হয়েছে, তা মোটেই কাঙ্খিত ছিল না। কিন্তু সবটা কি আমাদের হাতে আছে? কেউ কেউ চাইছেন গোলমালটা হোক, যাতে রাজ্যকে ছোট করা যায়, রাজ্যের বাইরে বিষয়টি হাইলাইট করা যায়।" কিন্তু বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই কাঠগড়ায় তোলা হচ্ছে তৃণমূলকে, যা নিয়ে উদয়ন বলেন, "ভারতের সঙ্গে পাকিস্তানের যুদ্ধ হলে, কাকে খারাপ বলবেন, ভারতকে, না পাকিস্তানকে? তেমনই আমরা ভাল, বাকিরা খারাপ বলা হচ্ছে।" সন্ত্রাসের প্রশ্নে উদয়ন বলেন, "এই সন্ত্রাস কাঙ্খিত নয়। অনেকে উস্কানি দিচ্ছে। এখন সবারই টার্গেট তৃণমূল। কেউ বুথ দখল করতে এলে, ব্যালট বাক্স ছিনতাই করতে এলে, আমাদের কর্মীরাই প্রতিরোধ করবেনই। কী ঘটছে তা দেখতে হবে।"


আরও পড়ুন: Chandrima Bhattacharya: BJP-র মুখপাত্র হয়ে হিংসায় প্ররোচনা রাজ্যপালের, রক্তস্নাত ভোট নিয়ে মন্তব্য মন্ত্রী চন্দ্রিমার


পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে বার বার শান্তিপূর্ণ নির্বাচন করানোর কথা শোনা গিয়েছে তৃণমূলের মুখে। বিশেষ করে দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় এ ব্যাপারে আশ্বাস জুগিয়েছিলেন। বিরোধীদের কেউ প্রার্থী দিতে না পারলে, তাঁকে এসে জানানো যেতে পারে বলেও জানিয়েছিলেন। কিন্তু পঞ্চায়েত নির্বাচনে বেলাগাম হিংসা, প্রাণহানি নিয়ে এখনও পর্যন্ত কোনও মন্তব্য করতে শোনা যায়নি তাঁকে।


সেই নিয়ে প্রশ্ন করলে উদয়ন বলেন, "মমতা বন্দ্য়োপাধ্যায় এবং অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় সন্ত্রাসমুক্ত নির্বাচন চেয়েছিলেন। অভিষেক প্রচুর চেষ্টা করেছিল। জেলায় জেলায় ঘুরেছিল। কিন্তু সবটা নিয়ন্ত্রণ করা যায়নি।  কারণ একাধিক শত্রুর আক্রমণের মুখে পড়তে হয়েছে। তাতে অনেক জায়গায় মেজাজও হারাতে হয়েছে হয়ত। প্রতিরোধ করতে গিয়ে সংঘর্ষ হয়েছে।"


এদিন আরও উদয়ন বলেন, "যুদ্ধ একপক্ষ হয় না, অপর পক্ষ প্রতিরোধ করে। যেভাবে প্ররোচনা দেওয়া হয়েছে, তাতে সবটা নিয়ন্ত্রণ করা যায়নি। এসব না ঘটলেই ভাল হত। কিন্তু অনেক জায়গায় কেন্দ্রীয় বাহিনী ভোটারদের লাঠিপেটা করেছে। সন্ধের পর কিছু জায়গায় জুলুমবাজি করেছে কেন্দ্রীয় বাহিনী। বিজেপি-কে ভোট দেওয়ার কথা বলেছে কেন্দ্রীয় বাহিনী। পঞ্চায়েতে কেউ এক ইঞ্চি জমি ছাড়তে চান না। ভোট ঘিরে এত সংঘর্ষ কেন, সবাইকে এটা নিয়ে ভাবতে হবে। এটা শুধু তৃণমূল কংগ্রেসের দায় নয়। যাঁরা উস্কানি দিচ্ছেন, তাঁদের ভাবতে হবে কোথায় তাঁরা থামবেন।"