মনোজ বন্দ্যোপাধ্যায়, দুর্গাপুর : এবার মাঠে নেমে বিজেপির বিরুদ্ধে 'ছক্কা হাঁকালেন' প্রথম বিশ্বকাপ জয়ী ভারতীয় দলের কিংবদন্তি ক্রিকেটার কীর্তি আজাদ। হঠাৎ করে জেলায় প্রচারে আসায় শিল্পতালুকে জল্পনা ছড়িয়েছে, তিনি বর্ধমান-দুর্গাপুর কেন্দ্রের প্রার্থী হতে পারেন।সেদিন ওয়েস্ট ইন্ডিজের মুখোমুখি হয়ে কপিল দেবের নেতৃত্বে প্রথম জয় ছিনিয়ে এনেছিল ভারত। এবার তিনি মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায়ের নেতৃত্বে তৃণমূলের হয়ে ময়দানে নেমেছেন। মানুষের সঙ্গে করছেন জনসংযোগ। 


দিনকয়েক আগে রাজ্যে প্রচারে এসেছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। হুগলির আরামবাগে ও নদিয়ার কৃষ্ণনগরে সভা করেন তিনি। দুই সভা থেকেই তৃণমূলের বিরুদ্ধে আক্রমণ শানান। সন্দেশখালি ইস্যুতে রাজ্যের শাসকদলকে চাঁচাছোলা ভাষায় বিঁধেছেন। শুধু তা-ই নয়, রাজ্য বিজেপি নেতৃত্বকে দেওয়া অমিত শাহের ৩৫ আসনের টার্গেটের লক্ষ্যমাত্রাও বাড়িয়ে দিয়ে গিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি ৪২-এ ৪২টি আসনেই পদ্ম ফোটানোর আহ্বান জানিয়েছেন। এরপর আজ ফের রাজ্যে তিনি। আগামীকাল বারাসাতে সভা করার কথা রয়েছে মোদির।


এই আবহে পশ্চিম বর্ধমান শিল্পাঞ্চলে কীর্তি আজাদ। মোদির দেওয়া ৪২ আসনের লক্ষ্যমাত্রা নিয়ে কীর্তি আজাদ বলেন, 'সে তো ক্ষমতায় আসার আগে নরেন্দ্র মোদি বলেছিলেন প্রত্যেক মানুষের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে ঢুকবে ১৫ লক্ষ টাকা। ২ কোটি বেকার যুবক-যুবতিকে চাকরি দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। গ্যাসের দাম কমানোর প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল এই বিজেপি সরকার। সেইসব প্রতিশ্রুতি আজ মিলেছে। ' অন্যদিকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রশংসা করে তিনি বলেন, 'তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় মানুষের কাজ করেন। তিনি তৃতীয়বারের জন্য মুখ্যমন্ত্রী হয়েছিলেন। ২০২৪ লোকসভা নির্বাচনেও মানুষ জবাব দেবে।'


এরপরেই তিনি দুর্গাপুর ইস্পাত নগরীতে দুর্গাপুর ক্রিকেট ক্লাবে ব্যাট হাতে নেমে পড়েন। বেশ কয়েকটি ছয় ও চার হাঁকান। উৎসাহ দেন খেলোয়াড়দের। সঙ্গে ছিলেন রাজ্যের পঞ্চায়েত গ্রামোন্নয়ন ও সমবায়মন্ত্রী প্রদীপ মজুমদার, পশ্চিম বর্ধমান জেলা তৃণমূলের সভাপতি নরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তী, ১ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূলের সভাপতি রাজীব ঘোষ-সহ জেলা তৃণমূল নেতৃত্ব।


কীর্তি আজাদকে প্রশ্ন করা হয়, আপনি কি লোকসভা নির্বাচনে তৃণমূলের হয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন ? উত্তরে জানান, তিনি ব্রিগেডে জনগর্জন সভায় মানুষকে আহ্বান করতে দুর্গাপুরে এসেছেন। তবে বর্ধমান দুর্গাপুর লোকসভা কেন্দ্রের প্রার্থী কীর্তি আজাদই হবেন এমন জল্পনা রয়েছে তুঙ্গে। জেলা সভাপতি নরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তী বলেন, দল যাকে প্রার্থী করবে তাকে নিয়েই লড়াইয়ে নামব।


এ বিষয়ে দুর্গাপুর পশ্চিমের বিজেপি বিধায়ক লক্ষণ ঘোরুই বলছেন, "লোকসভা নির্বাচন ঘোষণা হতে এখনও বেশ কিছুদিন বাকি আছে। তার আগে এ রাজ্যের অনেক তৃণমূল নেতা-নেত্রী বিজেপিতে যোগ দেবেন। আর বর্ধমান দুর্গাপুর বিজেপির গড়। এখানে যতই প্রচার করুক তৃণমূল, জয় নিশ্চিত হবে বিজেপিরই।


দিল্লিতে ২০২১ সালে ২৩ নভেম্বর মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উপস্থিতিতে তৃণমূলে যোগ দিয়েছিলেন কীর্তি আজাদ।