কলকাতা: দলীয় প্রার্থীকে না মেনে নির্দল হয়ে দাঁড়ানোর শাস্তি। পঞ্চায়েত ভোটের মুখে ৫৬ জন নেতা-কর্মীকে সাসপেন্ড করল তৃণমূল। দল বিরোধী কাজের অভিযোগে সাসপেন্ড একঝাঁক তৃণমূল নেতা। নদিয়ার ২১, দক্ষিণ দিনাজপুরের ১৭ ও মুর্শিদাবাদের ১০ জন সাসপেন্ড। 


অন্যদিকে দলের নির্দেশে সিপিএম প্রার্থী ভাইয়ের মনোনয়ন প্রত্যাহার করাতে না পারায়, তৃণমূল থেকে বহি্কৃত আইএনটিটিইউসি নেতা।এই অভিযোগেই বহিষকৃত বাগদা পূর্বের আইএনটিটিইউসি-র ব্লক সভাপতি গণেশ ঘোষকে বহিষ্কার করা হয়েছে। এর আগে দলের নেতাদের বিরুদ্ধে গোঁজ প্রার্থী দেওয়ার অভিযোগ উঠলে ব্যবস্থা নেওয়ার হুঁশিয়ারি দেন বনগাঁ সাংগঠনিক জেলা তৃণমূলের সভাপতি বিশ্বজিৎ দাস। গোঁজ প্রার্থীদের ৭২ ঘণ্টার মধ্যে লিফলেট বিলি করে ভোটে না লড়ার কথা জানানোর নির্দেশ দেন বাগদার তৃণমূল বিধায়ক। বিজেপির কটাক্ষ, ভোটে জিতলে এই বিক্ষুব্ধরাই শাসকদলের গলার মালা হয়ে যাবে। 


বাঁকুড়াতেও চরমে তৃণমূলের কোন্দল! প্রকাশ্য সভামঞ্চে গতকাল গঙ্গাজলঘাটি গ্রাম পঞ্চায়েতের বিদায়ী প্রধানকে বহিষ্কার করেন তৃণমূলের ব্লক সভাপতি। পঞ্চায়েত ভোটে দলের টিকিট না পেয়ে নির্দল হয়ে দাঁড়িয়েছিলেন বিদায়ী প্রধান চঞ্চল নায়েক। তার জেরেই দল থেকে বহিষ্কার বলে দাবি তৃণমূলের ব্লক সভাপতি হৃদয় মাধব দুবের। একের পর এক বহিষ্কারে তৃণমূল দলটাই শেষ হয়ে যাবে। কটাক্ষ করেছে বিজেপি।



পঞ্চায়েত ভোট ঘোষণার পর থেকেই, কখনও পয়েন্ট ব্ল্যাঙ্ক রেঞ্জ থেকে গুলি, বিরোধী প্রার্থীদের বাড়ি ভাঙচুর, বাড়িতে সাদা কাপড়ের থান পাঠিয়ে হুমকির পর এবার, বাঁশ দিয়ে বিজেপি প্রার্থীকে বেধড়ক মারধরের অভিযোগ উঠল তৃণমূলের বিরুদ্ধে। 


দাঁতন ২ নম্বর ব্লকের বিজেপি প্রার্থী কাকলি পাত্র এবং তাঁর স্বামী-পুত্রকেও বাঁশ দিয়ে মাথায় আঘাত করা হয় বলে অভিযোগ।  দাঁতনের বিজেপি প্রার্থী কাকলি পাত্রের কথায়, আমাকে তৃণমূলের লোক মেরেছে। আমি মন্দিরে গেছিলাম পুজো জিতে। আমার ছেলে কাজ করতে গেছিল। আমার স্বামী চা খেতে এসেছিল দোকানে। আমার স্বামীকে মারছে, আমার ছেলেকে মারছে। আমি প্রার্থী দাঁড়িয়েছি বিজেপি থেকে, আমাকে মার্ডার করবে প্ল্যান ছিল।


যদিও, বিজেপির ওপর হামলার অভিযোগ অস্বীকার করেছে তৃণমূল। তৃণমূল বিধায়ক বিক্রমচন্দ্র প্রধান বলছেন, কেশরম্ভায় শক্তিশালী বিজেপি। আমাদের লোক মারতে যাবে কেন। এবং যে ভিডিও দেখা যাচ্ছে সেখানে তো প্রমাণিত হয়নি যে তৃণমূলের ঝান্ডা নিয়ে মারতে ছুটে যাচ্ছে। কে করেছে তৃণমূলের ছাপ নেই ব্যক্তিগত কারণ হতে পারে আর সেটাকে রাজনীতির রং দিচ্ছে বিজেপি।


এই ঘটনায় তৃণমূলের বিরুদ্ধে তীব্র আক্রমণ শানিয়েছে বিজেপি নেতৃত্ব। দিলীপ ঘোষ বলছেন, বহু প্রার্থী এখনও ভয়ে বাড়ির বাইরে। সব জায়গায় প্রায় ৯০ শতাংশ প্রার্থী দিয়েছি। ওরা সেটা সহ্য করতে পারছে না। এক দু জায়গায় ঝামেলা করে ভাবছে ভয় দেখাবে সেটা হবে না। পার্টি এবার সর্বশক্তি দিয়ে প্রতিরোধ করবে।


আহতদের উদ্ধার করে নিয়ে যাওয়া হয় দাঁতন গ্রামীণ হাসপাতালে। পঞ্চায়েত ভোটের দিন যত এগোচ্ছে, ততই বিরোধীদের ওপর নেমে আসছে আক্রমণ। সবক্ষেত্রেই অভিযোগ উঠছে শাসকদলের দিকে। যদিও, তারা অভিযোগ অস্বীকার করেছে।