কলকাতা:  ভোটের ফল বেরনোর পরই দলীয় কর্মীদের সংযত থাকার বার্তা দিয়েছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কিন্তু, তার কিছুক্ষণের মধ্যেই কলকাতা থেকে জেলা, বিভিন্ন জায়গায় বিরোধীদের ওপর হামলার অভিযোগ উঠতে শুরু করল তৃণমূলের বিরুদ্ধে।
তৃণমূল প্রার্থীর জয়ের পরেই বেলগাছিয়ায় সিপিএমের লোকাল কমিটির অফিস ভাঙচুরের অভিযোগ উঠেছে তৃণমূলের বিরুদ্ধে। টালা থানায় দায়ের হয়েছে অভিযোগ।
এন্টালির গোবরা রোডে সিপিএমের জোনাল অফিস ভাঙচুর ও লুঠপাটের অভিযোগ উঠেছে তৃণমূল-আশ্রিত দুষ্কৃতীদের বিরুদ্ধে। পুলিশের সামনেই গোটা ঘটনা ঘটে বলে দাবি সিপিএম প্রার্থী দেবেশ দাসের। যদিও হামলার অভিযোগ অস্বীকার করেছেন তৃণমূলের জয়ী প্রার্থী স্বর্ণকমল সাহা।
দমদম উত্তরের অন্তর্গত নিমতার এম বি রোডে সিপিএমের ২ নম্বর লোকাল কমিটির অফিস এবং শিবাচল রোডে বিরাটি পশ্চিম লোকাল কমিটির অফিসে ভাঙচুর চালানোর অভিযোগ উঠেছে শাসক দলের কর্মীদের বিরুদ্ধে।
বেহালায় ১৪২ নম্বর ওয়ার্ডে সিপিএমের পার্টি অফিসে ভাঙচুরের অভিযোগ উঠেছে তৃণমূলের বিরুদ্ধে।
রাজারহাট-নিউটাউনে সিপিএম প্রার্থী নেপালদেব ভট্টাচার্যর নির্বাচনী এজেন্টের বাড়িতে ভাঙচুর এবং বাড়ি লক্ষ্য করে বোমাবাজির অভিযোগ উঠেছে তৃণমূলের বিরুদ্ধে। নিউটাউন থানায় দায়ের হয়েছে অভিযোগ। সমস্ত ঘটনাতেই তৃণমূল অভিযোগই অস্বীকার করেছে। বিরোধীদের দাবি, এসব ঘটনাই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের হুমকির পরিণাম।
কলকাতার পাশাপাশি বিভিন্ন জেলাতেও ভোটের ফল বেরোনোর পর রাজনৈতিক হিংসা শুরু হয়েছে।
ব্যারাকপুরে তৃণমূল প্রার্থী জয়ী হওয়ার পরেই ১৪ নম্বর রেলগেটের কাছে সিপিএমের শাখা কমিটির অফিস ভাঙচুরের অভিযোগ উঠেছে তৃণমূলের বিরুদ্ধে।
ফল বেরনোর পরই কামদুনির কয়ালপাড়ায় একটি ক্লাব তছনছ করার অভিযোগ উঠেছে তৃণমূলের বিরুদ্ধে।
সোনারপুর দক্ষিণ কেন্দ্রের পঞ্চবটী মোড়ে সিপিএমের শাখা অফিস ভাঙচুর করা হয়। অভিযোগ তৃণমূলের বিরুদ্ধে। সোনারপুর থানায় অভিযোগ দায়ের হয়েছে।
তৃণমূল প্রার্থী রেজ্জাক মোল্লা জয়ী হওয়ার পরই কংগ্রেস নেতা আবদুর রহমানের বাড়িতে চড়াও হয়ে তৃণমূলকর্মীরা ভাঙচুর চালায় বলে অভিযোগ। তাঁকে না পেয়ে তাঁর বৃদ্ধ বাবা-মাকে হুমকিও দেওয়া হয় বলে অভিযোগ।
তৃণমূল প্রার্থীর জয়ের পর সিপিএমের জোনাল অফিস ভাঙচুর করে আগুন লাগিয়ে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে শাসক দলের বিরুদ্ধে।
দুর্গাপুরে রানিগঞ্জ ও পাণ্ডবেশ্বর বিধানসভা কেন্দ্রে সিপিএমের শ্রমিক সংগঠন সিটু-র অফিস দখলের অভিযোগ উঠেছে তৃণমূলের বিরুদ্ধে। পাশাপাশি, পাণ্ডবেশ্বরের নবগ্রামেও কয়েকজন সিপিএম সমর্থকের ওপর হামলার অভিযোগ উঠেছে তৃণমূল আশ্রিত দুষ্কৃতীদের বিরুদ্ধে।
জামুড়িয়ায় প্রাক্তন সিপিএম বিধায়ক পেলব কবির বাড়ি-সহ পাঁচটি বাড়িতে ভাঙচুরের অভিযোগ তৃণমূল আশ্রিত সশস্ত্র দুষ্কৃতীদের বিরুদ্ধে। মণ্ডলপুরে সিপিএমের একটি দলীয় কার্যালয়ে আগুনও লাগিয়ে দেওয়া হয়।
জাঙ্গিপাড়ায় সিপিএমের দু’টি দলীয় কার্যালয়ে ভাঙচুর, একটিতে আগুন। অভিযোগ তৃণমূলের বিরুদ্ধে। তালতলাতেও সিপিএমের একটি কার্যালয়ে ভাঙচুর চালানো হয় বলে অভিযোগ।
সূর্যকান্ত মিশ্রর হারের পরই নারায়ণগড়ে সিপিএমের দুটি লোকাল কমিটির অফিস দখলের অভিযোগ উঠেছে তৃণমূলের বিরুদ্ধে।
ময়নায় তৃণমূল প্রার্থীর জয়ের পরই সিপিআইয়ের জোনাল কমিটির অফিস ও আরএসপি-র দলীয় কার্যালয়ে হামলা, ভাঙচুর হয়। অভিযোগ তৃণমূলের বিরুদ্ধে। যদিও, সব ক্ষেত্রেই অভিযোগ অস্বীকার করেছে শাসক দল।
যদিও, বৃহস্পতিবার ফল ঘোষণার পরই অবশ্য মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দলীয় কর্মীদের সংযত থাকার বার্তা দেন। কিন্তু, এই বার্তায় কি রাজ্যজুড়ে এই হিংসায় দাঁড়ি পড়বে? সেদিকেই তাকিয়ে বিরোধীরা।