কলকাতা: লোকসভা এবং বিধানসভা, একসঙ্গে দুই নির্বাচনে হারের মুখ দেখেছে নবীন পট্টনায়েকে বিজু জনতা দল। আর তার পরই সক্রিয় রাজনীতি থেকে সরে দাঁড়ানোর সিদ্ধান্ত নিলেন পট্টনায়ক-ঘনিষ্ঠ ভি কে পান্ডিয়ান (VK Pandian Retirement From Active Politics)। একটি ভিডিও মেসেজে তাঁকে বলতে শোনা যায়, 'নবীনবাবুকে সাহায্য় করতেই আমার রাজনীতিতে আসা। এবার, সচেতন ভাবে সক্রিয় রাজনীতি থেকে নিজেকে দূরে সরিয়ে নিলাম।'
কেন?
ওডিশায় নবীন পট্টনায়েকের ২৪ বছরের শাসনকাল শেষ হয়েছে এবার। লোকসভা নির্বাচনে ওই রাজ্যে মোটে একটি আসন জিতেছে বিজেডি। বিধানসভা ভোটেও তাদের পারফরম্যান্স তথৈবচ। এই ভয়ঙ্কর হারের পর ব্যাপক সমালোচনা ধেয়ে আসে পান্ডিয়ানের দিকে। এদিনের সিদ্ধান্ত ঘোষণার সঙ্গে তিনি আরও বলেন, 'এই গোটা সময়টায় কাউকে আঘাত করে থাকলে, আমি দুঃখিত। আমার বিরুদ্ধে যে প্রচার চলেছে, তার কারণে বিজেডি-র ক্ষতি হয়ে থাকলেও ক্ষমাপ্রার্থী। সর্বোপরি, দলীয় কর্মী থেকে শুরু করে সমস্ত বিজু পরিবার কাছে আমি ক্ষমাপ্রার্থী।' জন্মের সঙ্গে তামিল-পরিচয় জুড়ে থাকায় এবার পান্ডিয়ানকে ঘিরে প্রচার-কৌশল সাজিয়েছিল বিজেপি। তাদের বক্তব্য ছিল, রাজ্যে বিজেপি ক্ষমতায় এলে এমন কাউকে মুখ্যমন্ত্রী করবে যিনি ওডিশায় জন্মেছেন এবং ওডিয়া বলতে পারেন। তাদের আরও বক্তব্য ছিল, এবার বিজেডি ক্ষমতায় চলে এলে মুখ্যমন্ত্রীর গদিতে বসবেন পান্ডিয়ান। কারণ শরীর-স্বাস্থ্য় মোটেও ভাল নেই নবীন পট্টনায়েকের। উত্তরসূরি হিসেবে তিনি যে এই প্রাক্তন আমলাকেই বেছে নিয়েছেন, সেটাই বোঝাতে চেয়েছিল বিজেডি।
তবে, গত কাল, শনিবার, এ ব্যাপারে নিজের অবস্থান স্পষ্ট করেন বিজেপির পোড়খাওয়া নেতা। জানিয়ে দেন, তাঁর উত্তরসূরি কে হবেন, সেটি ওডিশার জনগণ ঠিক করবে। রাজনৈতিক মহলে জল্পনা, এর পর পান্ডিয়ানের অবসর ঘোষণার বিষয়টি নিয়ে তুুমুল চর্চা শুরু হয়ে গিয়েছিল। আজ, রবিবার, সেই জল্পনায় সিলমোহর দিলেন স্বয়ং নবীন-ঘনিষ্ঠ। যদিও বিজেডি-প্রধান সর্বসমক্ষে তাঁর আস্থাভাজন পান্ডিয়ানের পাশে দাঁড়িয়েছেন। জানিয়েছেন, দলের শোচনীয় পরাজয়ের জন্য পান্ডিয়ানকে একপেশে ভাবে দায়ী করা অত্যন্ত 'দুর্ভাগ্যজনক।' তিনি যে দুরন্ত কাজ করেছেন, সে কথাও জানিয়ে দেন পট্টনায়েক। বলেন, 'উনি অত্যন্ত সৎ মানুষ। সেটুকুই মনে রাখা উচিত।'
আমলা হিসেবে...
সক্রিয় রাজনীতি থেকে যেদিন পান্ডিয়ান সরে যাওয়ার কথা ঘোষণা করলেন, সে দিন, আমলা হিসেবে তাঁর দক্ষতার কথাও মনে করতে শোনা যায় পট্টনায়েককে। তিনি বলেন, 'সাইক্লোন হোক বা কোভিড-১৯ অতিমারি, শেষ দশ বছরে, একজন আমলা হিসেবে বিভিন্ন ক্ষেত্রে দুর্দান্ত কাজ করেছেন উনি। এই দুরন্ত কেরিয়ার থেকে অবসরগ্রহণের পর বিজেডি-তে যোগ দিয়েছিলেন। দুরন্ত কাজ করেছেন এখানেও। উনি অত্যন্ত সৎ মানুষ। সেটুকুই মনে রাখা উচিত।'