কলকাতা: পশ্চিমবঙ্গে বিধানসভা নির্বাচনে প্রথম দফার ভোটগ্রহণ শনিবার। আজ সংশ্লিষ্ট কেন্দ্রগুলিতে প্রচার শেষ হয়েছে। সব দলই প্রচারে জোর দিয়েছে। বিভিন্ন প্রতিশ্রুতি দিয়েছে রাজনৈতিক দলগুলি। তাতে কতটা কাজ হয়েছে, সেটা জানা যাবে ২ মে ফল প্রকাশিত হওয়ার পর। তার আগে দেখে নেওয়া যাক বিজেপি-র ইস্তেহারে কী কী প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছে।


বাংলায় এবার ক্ষমতা দখল করতে মরিয়া গেরুয়া শিবির। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ, প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিংহ, উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ সহ বিজেপি-র সর্বভারতীয় নেতারা রাজ্যে প্রচার করছেন। বাংলার মানুষের মন জয় করার লক্ষ্যে ইস্তেহারে একগুচ্ছ প্রতিশ্রুতি দিয়েছে বিজেপি। বলা হয়েছে, বাংলায় ক্ষমতায় এলে রেশনে ১ টাকা কেজিতে মিলবে চাল-গম। অন্নপূর্ণা ক্যান্টিনে ৫ টাকা করে পাওয়া যাবে তিনবেলা খাবার। কেজি থেকে পিজি পর্যন্ত বিনামূল্যে মেয়েদের শিক্ষার প্রতিশ্রুতিও দেওয়া হয়েছে। রাজ্য সরকারি চাকরিতে মহিলাদের জন্য ৩৩ শতাংশ সংরক্ষণের ব্যবস্থা করা হবে। আরও বলা হয়েছে, সরকারি বাসে মহিলাদের ভাড়া লাগবে না। বিজেপির ইস্তেহারে বলা হয়েছে, ক্ষমতায় এলে প্রথম মন্ত্রিসভার বৈঠকেই শরণার্থীদের নাগরিকত্ব দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।


ভোটের ময়দানে বহিরাগত অস্ত্রে বিজেপিকে বেকায়দায় ফেলতে চাইছে তৃণমূল। সেই অস্ত্র ভোঁতা করতে পাল্টা ইস্তেহারে বাংলার মনীষী ও দিকপালদের নামে তহবিল ঘোষণা করেছে বিজেপি। বাঙালি আবেগকে ছুঁয়ে গেরুয়া ইস্তেহারে প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছে, ‘স্বাস্থ্য ব্যবস্থার উন্নয়নে কাদম্বিনী গঙ্গোপাধ্যায়ের নামে ১০ হাজার কোটির তহবিল, স্কুল পরিকাঠামোর জন্য বিদ্যাসাগরের নামে ২০ হাজার কোটির তহবিল, শৈলেন মান্না স্পোর্টস ইউনিভার্সিটি তৈরি করা হবে, নোবেলের মতো টেগোর অ্যাওয়ার্ড দেওয়া হবে।’


সর্বভারতীয় মেডিক্যাল ও ইঞ্জিনিয়ারিং পরীক্ষায় বাংলায় প্রশ্নপত্র, সব বিশ্ববিদ্যালয়ে বাংলার মনীষীদের নামে চেয়ার, সরকারি কাজে বাংলা ভাষা ব্যবহার আবশ্যিক করার চেষ্টা করা হবে বলেও প্রতিশ্রুতি দিয়েছে বিজেপি। শান্তিনিকেতনকে বিশ্বমঞ্চে প্রতিষ্ঠিত করতে ১৫০ কোটি টাকা দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছে বিজেপির ইস্তেহারে।


এছাড়াও বিজেপির ইস্তেহারে সার্বিকভাবে বাংলার শহরাঞ্চলে পরিকাঠামো উন্নয়নে ৩০ হাজার কোটি এবং শুধুমাত্র কলকাতার উন্নয়নে ২২ হাজার কোটির তহবিল গঠন, কালীঘাটের আদিগঙ্গা সংস্কারের প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছে। ক্ষমতায় এলে কেন্দ্রের পর রাজ্যেও সপ্তম পে কমিশন চালুর প্রতিশ্রুতি দিয়েছে বিজেপি।


কিষাণ নিধি সম্মান, নাকি কৃষক বন্ধু প্রকল্প? আয়ুষ্মান ভারত নাকি স্বাস্থ্যসাথী? কোন প্রকল্প বেশি ভাল, তা নিয়ে ভোটের আগে তুঙ্গে কেন্দ্র-রাজ্য তরজা। এই প্রেক্ষাপটে বিজেপির ইস্তেহারে বলা হয়েছে, বাংলায় তারা ক্ষমতায় এলে, কিষাণ সম্মান নিধিতে কৃষকদের অ্যাকাউন্টের বকেয়া ১৮ হাজার টাকা পাঠানো হবে। তারপর বছরে ১০ হাজার টাকা করে দেওয়া হবে। মৎস্যজীবীরা পাবেন বছরে ৬ হাজার টাকা অনুদান। চা বাগানের শ্রমিকদের দৈনিক মজুরি বাড়িয়ে ৩৫০ করা হবে। আয়ুষ্মান ভারত প্রকল্পের আওতায় রাজ্যের সব গরিবকে আনা হবে।