কলকাতা: মুর্শিদাবাদ থেকে নদিয়া, হুগলি থেকে উত্তর ২৪ পরগনা। প্রার্থী নিয়ে বিজেপির অন্দরের ক্ষোভ-বিক্ষোভ চরমে। কান্দিতে দলীয় কার্যালয়ের সামনেই টায়ার জ্বালিয়ে বিক্ষোভ দেখালেন বিজেপির একাংশ। বিষয়টি নিয়ে বিজেপিকে তীব্র কটাক্ষ করেছে তৃণমূল।
রাজ্য বিধানসভায় প্রার্থী নিয়ে ক্ষোভ-বিক্ষোভ আছে প্রত্যেকটি দলেই। কিন্তু প্রার্থী নিয়ে বিজেপির অন্দরের ক্ষোভ-বিক্ষোভ কার্যত চরম সীমায় পৌঁছেছে! আগুন জ্বলছে বিভিন্ন জেলায়! শুক্রবার নদিয়ার রানাঘাট উত্তর-পূর্ব কেন্দ্রের দলীয় প্রার্থীর বিরুদ্ধে পথে নামেন বিজেপি কর্মীদের একাংশ। ধানতলা থানার পানিখালি মোড়ে টায়ার জ্বালিয়ে রাস্তা অবরোধ করা হয়।
রানাঘাট উত্তর-পূর্বে অসীম বিশ্বাসকে প্রার্থী করেছে বিজেপি। ওই কেন্দ্রের তৃণমূল প্রার্থী সমীর পোদ্দার। সংযুক্ত মোর্চার তরফে আইএসএফ-এর প্রার্থী দীনেশচন্দ্র বিশ্বাস। বিক্ষুব্ধ বিজেপি কর্মীর কথায়, ‘একাধিক দুর্নীতির সঙ্গে যুক্ত। তাই তাকে অবিলম্বে প্রার্থী পদ থেকে বাতিল করে অন্য কাউকে প্রার্থী করতে হবে ৷’
মুর্শিদাবাদের কান্দিতে, গত বিধানসভা উপনির্বাচনে তৃণমূলের প্রার্থী ও কান্দি পুরসভার প্রাক্তন চেয়ারম্যান গৌতম রায়-কে টিকিট দিয়েছে বিজেপি। দলে যোগ দিয়েই তিনি কীভাবে প্রার্থী হলেন, সেই প্রশ্ন তুলে আদি বিজেপি কর্মীরা এদিন কান্দির কার্যালয়ের সামনেই টায়ারে আগুন জ্বালিয়ে বিক্ষোভ দেখান।
হুগলির সপ্তগ্রামেও বিজেপিতে ক্ষোভ-বিক্ষোভ! সপ্তগ্রাম পঞ্চায়েত সমিতির সদস্য দেবব্রত বিশ্বাস সম্প্রতি তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দেন। তাঁকেই ওই কেন্দ্রে প্রার্থী করেছে বিজেপি। প্রতিপক্ষ তৃণমূল হেভিওয়েট তপন দাশগুপ্ত। এবং সংযুক্ত মোর্চা সমর্থিত কংগ্রেস প্রার্থী পবিত্র দেব।দলের অফিসিয়াল প্রার্থীর বিরোধিতায় এদিন পোলবায় বিক্ষোভ-মিছিল করেন বিজেপি কর্মীরা। বিজেপির প্রথম দফার প্রার্থী তালিকা ঘোষণার পর থেকেই ঘরোয়া কোন্দল রাস্তায় নেমে এসেছে।
চৌরঙ্গী এবং কাশীপুর-বেলগাছিয়ায় প্রার্থী নিয়ে কার্যত মুখ পুড়েছে গেরুয়া শিবিরের। তৃণমূল সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের মতে, 'প্রার্থী তালিকা নিয়ে কী হচ্ছে দেখুন। যারা নিজেদের দলে শান্তি বজায় রাখতে পারছে না, তারা বাংলা সামলাবে কী করে।'
বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ বলেন, ‘‘বড় পরিবার, ক্ষোভ-বিক্ষোভ থাকেই, লোকজন জিতবে, তাই সবাই প্রার্থী হতে চাইছেন ৷’’
এগরার সভায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, সিপিএমের হার্মাদ আর তৃণমূলের কিছু লোক গিয়ে এখন বিজেপিতে ছড়ি ঘোরাচ্ছে। বিজেপির যারা পুরনো লোক তারা কাঁদছে ৷
দক্ষিণবঙ্গ থেকে উত্তরবঙ্গ...দিকে দিকে প্রার্থী নিয়ে অসন্তোষের মাসুল কি ভোটে গুণতে হবে বিজেপিকে? না কি, সব সামলে তৃণমূলের থেকে বাংলার রাশ নিজেদের হাতে নিতে পারবে গেরুয়া শিবির? উত্তর মিলবে ২ মে।