চণ্ডীপুর: তৃণমূল প্রার্থী অভিনেতা সোহম চক্রবর্তীর সমর্থনে পূর্ব মেদিনীপুরের চণ্ডীপুরে জনসভায় গিয়ে বিজেপিকে তীব্র আক্রমণ করলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর দাবি, প্রথম দফার ভোটে ৩০টি আসনের মধ্যে একটিও পাবে না বিজেপি। নাম না করে অধিকারী পরিবারকেও আক্রমণ করেন তৃণমূলনেত্রী।


এদিন মমতা বলেন, ‘আজ যারা বড় বড় মীরজাফর, গদ্দাররা বলছে, তারা তখন ঘরে ঘুমিয়ে ছিল। সোহম সারা বছর কাজ করে, মানুষের পাশে থাকে তাই জেতাতে চাই। দিঘা-তমলুক রেললাইন কে করে দিয়েছিল, চণ্ডীপুর সমস্যার সমাধান করে দিয়েছিল। চণ্ডীপুরের মানুষের কাছে দেনার শেষ নেই, অনেক উন্নয়ন হয়েছে, ১২ লক্ষ মানুষের কাছে পানীয় জল পৌঁছে দিতে প্রকল্প করছি। আপনার পাশের ঘরে থাকব নন্দীগ্রামে। আজ কাল, পরশু, তরশু থাকব। ভোটটা করে যাব। আপনাদের সঙ্গে দেখা হবে, সব লক্ষ্য রাখব। ভোটের দিন কেন্দ্রীয় বাহিনীকে দিয়ে মারধর করানো হয়েছে। কারা করিয়েছে জানি। বহিরাগতরা বাইরে থেকে গুন্ডা, বন্দুক নিয়ে এসেছে। ভোটে জেতার ক্ষমতা নেই বাপ-ব্যাটা, জ্যাঠাদের। বুথ দখল করছে। মহিলা-দৃষ্টিহীনকে ভোট দিতে দেওয়া হয়নি। মাস্ক পরে বুথে যাবেন, বাহিনী কিছু বললে কেউ চলে যাবেন না। কে ক্ষমতা দিল? মেয়েদের ভোট দিতে না দিয়ে থ্রেট করছে। একই জিনিস দেখেছিলাম ২০১৬, ২০১৯-এ। বাংলায় কাজ করতে আসছো, থাকা-খাওয়ার খরচ আমাদের আর তুমি আমাদের লাঠি মারবে? আমি জানি কার নির্দেশে মেরেছে। একটা মা-বোনের গায়ে হাত পড়লে হাতা-খুন্তি নিয়ে তেড়ে যাবেন। যদি একজনকেও বুথে ঢুকতে না দেয়, রুখে দাঁড়ান, বিদ্রোহ করবেন। এজেন্টরা যদি এই গুন্ডাদের ভয়ে পালিয়ে যাও, তাহলে আমি ক্ষমা করব না।’


নাম না করে শুভেন্দু অধিকারী-শিশির অধিকারীদের আক্রমণ করে মমতা বলেন, আমি জানি কাঁথি, ভগবানপুরে কারা কী করেছে, কার সাথে কারা কী সমঝোতা করছে। জ্যাঠার ছেলে টাকা ছড়াচ্ছিল, হাতেনাতে ধরেছে, ওকে গ্রেফতার করা উচিত ছিল। এত পেট্রোল পাম্প, ট্রলার কোথা থেকে হল? এত সমবায় ব্যাঙ্কের টাকা কোথায় গেল? আমার দোষ। মেদিনীপুরকে ভালবেসে ফেলেছিলাম, ভেবেছিলাম জলঢোঁড়া হবে। কী করে জানব, গোখরো হবে?’


দলীয় কর্মীদের উদ্দেশে তৃণমূল নেত্রীর বার্তা, ‘এজেন্টদের বলে যাই, ভোট মেশিন ভাল করে দেখবেন। ইভিএম খারাপ হলে চলে যাবেন না। ওরা এটাই চায়। ওই মেশিনটাও পরীক্ষা করতে হবে। কাউন্টিংয়ের দিন নিজের বাড়ি থেকে খাবার নিয়ে যান। ভোট হয়ে গেলে একমাস পাহারা দেবেন। আমারও দুটো চোখ ঘুরে বেড়াবে। কে কোথায় কী করছে নজর রাখব। একমাত্র এই জেলাতে এই ঘটনা।’


ভোটাদের উদ্দেশে মমতা বলেন, আয়ুষ্মানে ৪০ শতাংশ কেন্দ্র দেব, বাকি আপনাদের দিতে হবে। স্বাস্থ্যসাথীর কার্ডও প্রয়োজনে পৌঁছে দেব। সব বিধবাদের পেনশন দেব ১ হাজার টাকা। মে মাসে পড়ুয়াদের হাতে ১০ লক্ষ টাকার ক্রেডিট কার্ড। মনে করবেন প্রার্থী মমতাদি, তা না হলে কন্যাশ্রী, রূপশ্রী বন্ধ হয়ে যাবে। আমি কি ভোটের মেশিনের মধ্যে ঢুকতে যাব? কী করে জানব কটা আসন পাব? মানুষ ভোট দিয়েছে, মানুষ বুঝবে। ৮৪ শতাংশ ভোট হয়েছে মানে আমরা বলব তারা আমাদের পক্ষে ভোট দিয়েছে। বিজেপির এক নেতা বলছে, তিরিশের মধ্যে ২৬ পাব। তিরিশের মধ্যে ৩০ বলতে পারতে। গোল্লা পাবে। চারটে সিপিএম-কংগ্রেসের জন্য ছেড়ে দিয়েছো। বাংলায় সবাই একসঙ্গে থাকে। এখন এসেছে সংখ্যালঘুদের ভোট ভাগ করতে। হায়দরাবাদের দল থেকে সাবধান। বহিরাগতদের সমর্থন করবেন না। আপনার ঘর দখল করে নেবে। এনআরসি, এনপিআর লজ্জা।’