সন্দীপ সমাদ্দার, পুরুলিয়া: পশ্চিমবঙ্গে প্রায় ৩০ শতাংশ সংখ্যালঘু ভোট। ২০১১ থেকে এই ভোটব্যাঙ্কের কার্যত পুরোটাই তৃণমূলের দিকে। এরই মধ্যে এবার বাংলায় বিধানসভা ভোটে নামার ইঙ্গিত দিয়ে চমক দিয়েছে হায়দরাবাদের আসাদউদ্দিন ওয়েসির দল মিম। আর তারা সংখ্যালঘু ভোটব্যাঙ্কে ভাগ বসালে বিজেপির বড়সড় লাভ হতে পারে, এই আশঙ্কায় মিমকে ঠেকাতে জেলায় জেলায় তৃণমূলের তৎপরতা তুঙ্গে। গত ৭ ফেব্রুয়ারি পুরুলিয়া জেলা তৃণমূলের পার্টি অফিসে অল ইন্ডিয়া হাজি ফাউন্ডেশনের সদস্যদের সঙ্গে বৈঠক করে শাসক দলের জেলা নেতৃত্ব। 


এ বিষয়ে পুরুলিয়া জেলার তৃণমূল কংগ্রেস মুখপাত্র নব্যেন্দু মাহালি বলেছেন, 'হায়দরাবাদ থেকে মুসলিম সম্প্রদায়ের মিমের কিছু লোক জেলাতে এসে যাতে দলের কোনও ক্ষতি করতে না পারে, তার জন্যই হাজিদের ডেকে বৈঠক করলাম।'


পুরুলিয়ার হাজি সংগঠনের সভাপতি রেজাউল হুসেন বলেছেন, 'দিদি অনেক কাজ করেছেv। ২০২১-এ দিদি যাতে জিতে আসেন, তার জন্য মিমকে আটকাতে একজোট হয়েছি।'


পাল্টা জবাব দিয়েছে মিমও। দলের রাজ্য সভাপতি জামিরুল হাসানের দাবি, 'তৃণমূল ভয় পেয়ে গিয়েছে। মুসলিমদের জন্য কাজের কাজ কিছু করেনি। হায়দরাবাদে ইমাম, মৌলানাদের ভাতা সাড়ে ১২ হাজার টাকা। পুরোহিতদেরও ভাতা দেয়। এখানে ২ হাজার টাকা। মানুষ সব বুঝতে পারছে। তৃণমূলের কোনও স্ট্র্যাটেজি এবার কাজ করবে না। মানুষ মিমকেই ভোট দেবে।'


মিমের সুরেই তৃণমূলের দিকে কটাক্ষ ছুড়ে দিয়েছে পুরুলিয়া জেলা বিজেপি নেতৃত্বও। পুরুলিয়ার বিজেপি সহ সভাপতি বিনোদ তিওয়ারি বলেছেন, তৃণমূল তো এখন প্রত্যেকদিনই কোনও না কোনও সংগঠনের সঙ্গে বৈঠকে বসছে। পুরোহিতদের সঙ্গেই বসুক বা হাজিদের সঙ্গেই বসুক, বাইরে থেকে কোন দল আসছে, তা নিয়ে আমাদের কোনও মাথাব্যথা নেই। এই নির্বাচনে আমরাই জয়ী হব।'


সংখ্যালঘু ভোটব্যাঙ্ক কি তৃণমূল ধরে রাখতে পারবে? না কি তাতে ভাঙন ধরবে? বাংলার ক্ষমতার রাশ আগামীদিনে কাদের হাত যাবে, তা অনেকাংশে নির্ভর করছে, এই প্রশ্নের উত্তরের উপর।