বিটন চক্রবর্তী, পূর্ব মেদিনীপুর: ভোটগণনা হয়েছে ২ মে। দীর্ঘ টানাপোড়েনের পর ৫ দিনের মাথায় গণনাকেন্দ্র থেকে প্রশাসনিক কার্যালয়ে পৌঁছল নন্দীগ্রামের সব ইভিএম।
বৃহস্পতিবার পুলিশ ও কেন্দ্রীয় বাহিনীর কড়া নিরাপত্তায় নন্দীগ্রাম বিধানসভা কেন্দ্রের সমস্ত ইভিএম হলদিয়া গভর্নমেন্ট স্পনসর্ড হাইস্কুল থেকে সরিয়ে অতিরিক্ত জেলাশাসকের অফিসের পাশে ওয়াররুমে নিয়ে যাওয়া হয়।
প্রশাসনের তরফে পুরো প্রক্রিয়াটির ভিডিওগ্রাফি করা হয়। ২ মে রাতে নন্দীগ্রাম আসনে বিজেপি প্রার্থী শুভেন্দু অধিকারীকে জয়ী ঘোষণা করে নির্বাচন কমিশন।
তারপর থেকেই ওই কেন্দ্রে গণনায় কারচুপির অভিযোগে সরব তৃণমূল কংগ্রেস। নন্দীগ্রামে পুনর্গণনার দাবিতে ২ মে রাত থেকে হলদিয়ার মঞ্জুশ্রী মোড়ে অবস্থান বিক্ষোভ শুরু করেন তৃণমূল কর্মীরা।
তাঁদের আপত্তিতে গণনাকেন্দ্র হলদিয়া গভর্নমেন্ট স্পনসর্ড হাইস্কুল থেকে ইভিএম সরানো সম্ভব হচ্ছিল না। বৃহস্পতিবার সকালে পূর্ব মেদিনীপুরের নব নিযুক্ত জেলাশাসক পূর্ণেন্দু মাজির আশ্বাসে জট কাটে।
তিনি বলেন, এই ইভিএমগুলো সর্বোচ্চ সুরক্ষা দিয়ে আলাদা জায়গায় রাখা হচ্ছে। ইভিএম, ভিভিপ্যাট সবই রাখা হবে। নন্দীগ্রামের ইভিএম প্রশাসনিক কার্যালয়ে সংরক্ষণের সময় তৃণমূল কংগ্রেসের কয়েকজন প্রতিনিধি সেখানে উপস্থিত ছিলেন।
তাঁদের অভিযোগ, ইভিএম বোঝাই একটি ট্রাঙ্ক খোলা অবস্থায় ছিল। একটি ইভিএমের বাক্সে লাগানো ট্যাগে শুধুমাত্র বিজেপি এজেন্টের সই থাকায়, তা নিয়ে সরব হয় তৃণমূল।
দলের এক যুব নেতা বলেন, আমরা যে অভিযোগ আগেই করেছিলাম, আজ দেখা গেল বাক্সে সিল নেই। সেখানে শুধু বিজেপি এজেন্টের সই। নন্দীগ্রামের গোকুলনগরের গ্রামপঞ্চায়েত এলাকার ইভিএম সেগুলো। কারচুপি হয়েছে।
পাল্টা বিজেপির দাবি, তৃণমূলের অভিযোগ ভিত্তিহী। দলের এক নেতা বলেন, নির্বাচন হয়ে গিয়েছে। কমিশন সার্টিফিকেট দিয়ে দিয়েছে। তারপরেও কেন এই ধরনের অভিযোগ। তৃণমূলের অভিযোগ ভিত্তিহীন।
এবিষয়ে জানতে চাওয়া হলে হলদিয়ার মহকুমা শাসক জানান, খোলা বাক্সে ইভিএম ছিল না, পোস্টাল ব্যালট ছিল। কী কারণে বাক্সে সিল ছিল না, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
নন্দীগ্রামে ভোট গণনায় কারচুপির অভিযোগ করেছেন খোদ মুখ্যমন্ত্রী তথা ওই কেন্দ্রের তৃণমূল প্রার্থী। বলেছেন, এক জনের কাছ থেকে এসএমএস পেয়েছি। নন্দীগ্রামের এক রিটার্নিং অফিসার জানিয়েছেন, বন্দুকের নলের মুখে কাজ করতে হচ্ছে। তিনি যদি পুনর্গণনার নির্দেশ দেন, তাহলে তাঁর প্রাণ সংশয় হতে পারে। নন্দীগ্রামে মেশিন পাল্টে দেওয়া হয়েছে।
এবিষয়ে আদালতে যাওয়ার কথা জানিয়ে রেখেছে তৃণমূল। নন্দীগ্রামে হার-জিত বিতর্কের জল কতদূর গড়াবে, তা বলবে সময়। আপাতত কড়া পাহারায় বন্দি ইভিএম।