সুদীপ চক্রবর্তী, রায়গঞ্জ: প্রার্থী পদের জন্য আবেদন করে শেষ পর্যন্ত প্রার্থী হতে পারেননি। তাতে চরম খুশি রায়গঞ্জের বিজেপি কর্মী কমল রাজবংশী। আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনে উত্তর দিনাজপুর জেলায় বিজেপির প্রার্থী তালিকা প্রকাশ করার পরেই জেলাজুড়ে প্রার্থী বদলের দাবিতে বিজেপি কর্মীরা একাধিক দলীয় কার্যালয়ে হামলা ও ভাংচুর চালিয়েছে। প্রার্থী বদল না করা হলে টেলিফোনে জেলা সভাপতিকে আত্মহত্যার হুমকি পর্যন্ত দেওয়া হয়েছে।


জেলা থেকে নিজে প্রার্থী হতে চেয়ে প্রায় হাজারখানেক দরখাস্ত অনলাইনে জমা পড়েছিল। শেষ পর্যন্ত প্রার্থী হতে না পেরে প্রায় সকলেই হতাশ। স্থানীয় সাংসদ তথা কেন্দ্রীয় মন্ত্রী দেবশ্রী চৌধুরীর বিরুদ্ধে ঘুষ নিয়ে টিকিট বিলির অভিযোগ তুলে জেলার ওবিসি মোর্চার সহ সভাপতি মদন বিশ্বাস নির্দল প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনে লড়াই করবেন বলে সিদ্ধান্ত নিয়েছে। ব্যতিক্রম কমল রাজবংশী।


বছর তিরিশের যুবক কমল রাজবংশী। বিজেপির দীর্ঘদিনের কর্মী। রায়গঞ্জ শহরের বিজেপির  জেলা কার্যালয়ে বিগত ১২ বছর ধরে কেয়ারটেকার হিসেবে কাজ করেন। রাতেও কার্যালয়েই নাইট গার্ডের কাজ করে। ইচ্ছে হয়েছিল আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনে রায়গঞ্জ আসনে প্রার্থী হওয়ার। সেইমতো দলের নিয়ম মেনে নিজের বায়োডেটা বানিয়ে প্রার্থী হতে চেয়ে অনলাইনে ও বিজেপির জেলা সভাপতির কাছে লিখিত দরখাস্ত করেন। দল থেকে রায়গঞ্জ আসনে কৃষ্ণ কল্যাণীকে এই কেন্দ্রে প্রার্থী করা হয়। এতে এই কেন্দ্রে প্রার্থী হতে ইচ্ছুক অনেকেই হতাশ হলেও ব্যতিক্রম একমাত্র কমল।


কমল রাজবংশী নামে ওই যুবক জানিয়েছেন, " আমি বিজেপি সমর্থক। কার্যালয়ে দীর্ঘ ১২ বছর ধরে আমি কেয়ারটেকার হিসেবে কাজ করছি। এবার দল থেকে প্রার্থী হতে ইচ্ছুক ব্যক্তিদের দরখাস্ত করার সুযোগ দেওয়া হয়। আমি নিজে প্রার্থী হতে চেয়ে আমার বায়োডাটা দিয়ে অনলাইনের পাশাপাশি জেলা সভাপতির কাছেও লিখিত আবেদন জমা করি। প্রার্থীর নাম ঘোষণার পর দেখি আমাকে প্রার্থী পদে বাদ দেওয়া। স্বাভাবিকভাবেই একটু মন খারাপ হয়েছিল। কিন্তু তারপরই এই প্রার্থী নিয়ে জেলা কার্যালয়ে যে পর্যায়ে হামলা, গালাগালি ও ভাংচুরের ঘটনা ঘটল, তারপর মনে হচ্ছে, ভাগ্যিস আমি প্রার্থী হইনি। বর্তমান পরিস্থিতিতে প্রার্থী হতে না পেরে চরম খুশি আমি। খুব মুক্ত মনে আমি দলের কাজ করতে পারব।"