শৌভিক মজুমদার, কলকাতা: একসময়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মঞ্চে তাঁর সহাস্য উপস্থিতি ছিল প্রায় নিয়মিত। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পুরনো কেন্দ্র ভবানীপুর থেকেই প্রথমবার বিজেপি প্রার্থী হিসেবে ভোটে লড়ছেন রুদ্রনীল ঘোষ।


সেখানে তাঁকে প্রচারে বাধা দেওয়ার অভিযোগ উঠল তৃণমূলকর্মীদের বিরুদ্ধে। তাঁকে কটূক্তি, ধাক্কাধাক্কি করা হয় বলেও অভিযোগ। এনিয়ে আলিপুর থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন ভবানীপুরের বিজেপি প্রার্থী রুদ্রনীল ঘোষ ৷তিনি বলেন, ‘‘তৃণমূলের গুণ্ডা বাহিনী হামলা চালায়। থানায় জানিয়েছি। থানার সবাই জানে, চেনে ওদের ৷’’


অন্যদিকে ভবানীপুরের তৃণমূলপ্রার্থী শোভনদেব চট্টোপাধ্যায় জানান, ‘‘আমি বারবার কর্মীদের বলেছি, অন্য কোনও দলর কর্মীদের প্রচারে বাধা দেওয়া যাবে না।’’


রাজ্যে পালাবদলের পর থেকে রুদ্রনীল ঘোষ তৃণমূলের ঘনিষ্ঠ বলেই পরিচিত ছিলেন। একুশে জুলাইয়ের মঞ্চেও তাঁকে দেখা যেত। তৃণমূলের জমানায় পশ্চিমবঙ্গ বৃত্তিমূলক শিক্ষা ও প্রশিক্ষণ পর্ষদের সভাপতি, জনপরিষেবা অধিকার কমিশনারের মতো পদেও তাঁকে বসানো হয়। যেখানে তাঁর বেতন মাসিক ২ লক্ষ টাকা ছিল বলে সূত্রের খবর। এখন বিজেপিতে নাম লিখিয়ে, এবং গেরুয়া শিবিরের প্রার্থী হয়ে শীর্ষনেতৃত্বের সুরেই সরাসরি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে নিশানা করছেন তিনি। ভবানীপুরে বিজেপি প্রার্থী রুদ্রনীল ঘোষ বলেন, ‘‘মমতা ভয় পেয়ে এই কেন্দ্র ছেড়ে নন্দীগ্রামে দাঁড়িয়েছিলেন। সে কুলও তো গেল ৷’’


তৃণমূল অবশ্য শিবির পাল্টানো রুদ্রনীলের কথায় কোনও গুরুত্বই দিচ্ছে না। ২৬ এপ্রিল হাইপ্রোফাইল ভবানীপুর কেন্দ্রে ভোট। ভবানীপুর কেন্দ্রে এবার বিজেপি প্রার্থী রুদ্রনীল ঘোষের লড়াই তৃণমূল প্রার্থী শোভনদেব চট্টোপাধ্যায় এবং কংগ্রেস প্রার্থী মহম্মদ সাদাব খানের সঙ্গে।


বিজেপির অভিযোগ, এদিন প্রচারের জন্য এসেছিলেন বিজেপি কর্মীরা। সেই সময় বেশ কয়েকজন তৃণমূল কর্মী তাঁদের বাধা দেন। গালিগালাজ ও ধাক্কাধাক্কিও করা হয় বলে অভিযোগ বিজেপি। দলের অভিযোগ, এই অঞ্চলে বারেবারেই তাদের প্রচারে বাধা দেওয়া হচ্ছে না। পুলিশের বিরুদ্ধে নিষ্ক্রিয়তার অভিযোগও করেছে বিজেপি।


উল্লেখ্য, ভোটের আগে তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দিয়েছিলেন রুদ্রনীল। তাঁকে ভবানীপুর আসনে প্রার্থী করেছে বিজেপি। এই আসনে গত দুবার লড়াই করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মুখ্যমন্ত্রী পদে শপথ গ্রহণের পর এই আসন থেকে জিতে বিধায়ক হয়েছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ২০১৬-তেও এই আসন থেকেই জয়ী হন তিনি। এবার এই আসনে লড়ছেন না মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায়।