কলকাতা: রাজ্যে ভোটের ফল প্রকাশের পর দলের কর্মীরা আক্রান্ত হয়েছে বলে অভিযোগ করেছে বিজেপি। পাল্টা তৃণমূলও বিজেপির বিরুদ্ধে তাদের কর্মীদের ওপর হামলার অভিযোগ করেছে। এরইমধ্যে রাজ্যপাল জগদীপ ধনকড়কে ফোন করে রাজনৈতিক হিংসার ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। রাজ্যপাল এ কথা জানিয়েছেন। তিনি বলেছেন, প্রধানমন্ত্রী ফোন করে আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির বেহাল অবস্থা নিয়ে ক্ষোভ ও উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। হিংসা, ভাঙচুর অগ্নিসংযোগ, লুঠ ও খুনের ঘটনায় আমি উদ্বেগের কথা জানিয়েছি। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসনে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে উপযুক্ত ব্যবস্থা নিতে হবে।
রাজ্যপাল ট্যুইট করে এ কথা জানিয়েছেন।
এ ব্যাপারে প্রধানমন্ত্রীকে পাল্টা কটাক্ষ ছুঁড়ে ট্যুইট করেছেন তৃণমূল নেতা ডেরেক ও ব্রায়েন। তাঁর ট্যুইট, প্রধানমন্ত্রী 'রাজনৈতিক হিংসা' নিয়ে পশ্চিমবঙ্গের রাজ্যপালকে ফোন করেছেন (২১৪ শতাংশ অতিরঞ্জিত)। বরং কোভিড পরিস্থিতি নিয়ে ফোন করুন।
এর আগে সকালে একটি ট্যুইট করে হিংসার ঘটনার নিন্দা করেছিলেন রাজ্যপাল। হিংসার ঘটনা রুখতে রাজ্য ও কলকাতা পুলিশকে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহন করতে বলেছেন। এদিন রাজ্যপাল ট্যুইট করে বলেন, পশ্চিমবঙ্গ পুলিশ ও রাজ্য পুলিশকে এই অর্থহীন রাজনৈতিক হিংসা, ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ, হত্যা ও হুমকি প্রতিরোধে অবশ্যই ব্যবস্থা নিতে হবে। এ ধরনের ঘটনা গণতন্ত্রের পক্ষে লজ্জাজনক। সারা বিশ্বের সমগ্র বঙ্গ সমাজই আইন-শৃঙ্খলার অভাব সম্পর্কে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। শুধু পশ্চিমবঙ্গেই কেন ভোট-পরবর্তী হিংসা? গণতন্ত্রের ওপর এই নিগ্রহ কেন?উল্লেখ্য, ভোটের ফল ঘোষণার পর তাদের কর্মীরা আক্রান্ত হচ্ছে, এই অভিযোগে গতকালই রাজ্যপালের দ্বারস্থ হয়েছিল বিজেপির প্রতিনিধি দল।
ইতিমধ্যেই, ভোট-পরবর্তী হিংসা নিয়ে সোমবারই পশ্চিমবঙ্গ সরকারের কাছ থেকে বিস্তারিত রিপোর্ট চেয়ে পাঠিয়েছে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক। শান্তি বজায় রাখার আবেদন জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
গতকাল বিজেপি রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ বলেন, আমাদের ৬ জন কর্মীকে খুন করা হয়েছে। জেলায় জেলায় আমাদের কর্মীদের বাড়ি ভাঙচুর হচ্ছে।
তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় গতকাল বলেন, পূর্ব বর্ধমানে আমাদের কর্মীদের খুন করা হয়েছে। বিজেপি অত্যাচার এখনও চালিয়ে যাচ্ছে। শীতলকুচিতেও ওরা অত্যাচার চালাচ্ছে। কোচবিহারের এসপির ইন্ধনে যা হয়েছে আপনারা জানেন।
হিংসা বন্ধে পদক্ষেপের আর্জি জানিয়ে সোমবার রাজ্যপালের দ্বারস্থ হয় বিজেপির একটি প্রতিনিধি দল। সন্ধেয় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও রাজভবনে যান। তাঁর সঙ্গে সাক্ষাতের পর রাজ্যপাল ট্যুইট করে জানান, একঘণ্টার বেশি সময় ধরে বৈঠকে আমি যে বিষয়টির ওপর জোর দিয়েছি, তা হল ভোট-পরবর্তী হিংসা থামাতে রাজ্য সরকার কী পদক্ষেপ নিচ্ছে।
গতকাল রাজ্য পুলিশের ডিজি এবং কলকাতা পুলিশের কমিশনারকেও রাজভবনে ডেকে পাঠান জগদীপ ধনকড়। রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে যে অশান্তির ঘটনা ঘটেছে এবং তা নিয়ন্ত্রণে কী পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে, জানতে চেয়ে রাজ্য সরকারের কাছে রিপোর্ট চেয়েছেন বলেও ট্যুইটারে জানান তিনি।