কলকাতা : বঙ্গ বিধানসভা এই প্রথমবার বাম-কংগ্রেস শূন্য়। নজিরবিহীন যে প্রসঙ্গে মুখ খুললেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কালীঘাটে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে তৃণমূল কংগ্রেস সুপ্রিমো বলেছেন, 'কাউকে শূন্য হতে দেখতে চাই না।’ যদিও বিধানসভায় অস্বিস্তহীন হয়ে যাওয়ার দায় বাম-কংগ্রেসের উপরই চাপিয়ে তিনি জুড়েছেন, 'কংগ্রেস-সিপিএম বিজেপির কাছে বিক্রি হয়ে গেছে। বিজেপিকে দেখতে গিয়ে নিজেরা সাইনবোর্ড হয়ে গেছে’।
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় টেনে এনেছেন কিছুদিন আগের বিহার বিধানসভা ও সেখানকার ভোটে সিপিআই(এমএল)-র ভালো ফলাফলের প্রসঙ্গও। তারা বিজেপির বিরুদ্ধে লড়াই করার ফলেই নিজেদের অস্তিত্ব প্রবলভাবে জানান দিতে পেরেছিল বলেই মনে করেন তৃতীয়বার বাংলার মুখ্যমন্ত্রীর মসনদে বসতে চলা মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায়।
২০১৬-র বিধানসভা ভোটে মুখ থুবড়ে পড়েছিল বাম-কংগ্রেস জোট। এবার আইএসএফকে সঙ্গী করেও জোটের হাল ফেরাতে পারল না তারা। উল্টে রক্তক্ষরণ হতে হতে একেবারে রক্তশূন্য হয়ে পড়ল বামফ্রন্ট ও কংগ্রেস। কংগ্রেসের গড় বলে এতদিন পরিচিত মালদা, মুর্শিদাবাদও এবার হাতছাড়া হয়েছে। কলকাতায় একমাত্র বামঘাঁটি যাদবপুরও হল হাতছাড়া। সবমিলিয়ে বঙ্গ রাজনীতিতে এই মুহূর্তে অস্বস্তি সংকটের সামনে দুই দল।
আব্বাস সিদ্দিকির সঙ্গে হাত মিলিয়ে ভিড় উপচে পড়া ব্রিগেড হল বটে, কিন্তু ভোটের বাক্সে তার কোনও ডিভিডেন্টই তুলতে পারল না তারা। আর তারপরই জোরালোভাবে উঠে গেল নতুন প্রশ্ন। আইএসএফের হাত ধরাতেই কী আখেরে ক্ষতি হল বাম-কংগ্রেসের।
২০১৬-র বিধানসভা ভোটে রাজ্যে ৭৭টি আসনে জিতেছিল বাম-কংগ্রেস জোট। ২০১৯-র লোকসভা ভোটের বিধানসভা ভিত্তিক ফলে কংগ্রেস এগিয়ে ছিল ৯টি আসনে, বামেরা অবশ্য কোনও আসনেই এগিয়ে ছিল না। গত লোকসভায় অবশ্য জোট হয়নি দুই পক্ষের। আর এবার জোট হলেও বাম-কংগ্রেসের ভাঁড়ার শূন্য। সংযুক্ত মোর্চার শিবরাত্রির সলতে বলতে ভাঙড়ে আইএসএফের প্রার্থী নৌসাদ সিদ্দিকির জয়।
এদিকে, বিজেপির বিরুদ্ধে আক্রমণের ঝাঁঝ বজায় রেখে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, 'বিজেপি শাহেনশা নয়, মানুষের হাতেই সব। বিনাশকালে বুদ্ধিনাশ আটকেছে বাংলার মানুষ। বাংলার মানুষের মেরুদন্ড যথেষ্ট শক্তিশালী। বাংলার মা-বোনেরা নতুন করে পথ দেখিয়েছে। মহিলা শক্তিই একমাত্র পারে বিজেপিকে রুখতে।'