বীরভূম:  নজরবন্দি থেকেও কমিশনের সঙ্গে কার্যত লুকোচুরি অনুব্রত মণ্ডলের! নজরদারির জন্য মোতায়েন কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ানদের সামনে দিয়েই সকালে গাড়ি নিয়ে বেরিয়ে যান অনুব্রত মণ্ডল। রাস্তায় তাঁর গাড়ির হদিশ হারিয়ে ফেলে কেন্দ্রীয় বাহিনী। পরে কমিশনের তরফে জানানো হয়েছে, মাঝরাস্তায় ট্রাফিক সিগনালে একটু বেশিই এগিয়ে যায় অনুব্রতর গাড়ি, পরে নাগাল পায় নজরদারি দল।


উল্লেখ্য,  বীরভূমে ভোটের আগে নির্বাচন কমিশনের নজরবন্দি তৃণমূলের জেলা সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল।  মঙ্গলবার বিকেল ৫টা থেকে ৩০ এপ্রিল সকাল ৭টা পর্যন্ত তাঁকে নজরবন্দি রাখবে কমিশন। এর জন্য বোলপুরে অনুব্রতর বাড়ির বাইরে মোতায়ন হয়েছে ৮ জন কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ান। আজ সেই জওয়ানদের এড়িয়ে গাড়ি নিয়ে বেলা সাড়ে ১১টা নাগাদ বেরিয়ে যান অনুব্রত।


বুধবার সকাল থেকেই নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে লুকোচুরির মধ্যেই তারাপীঠ মন্দিরে গিয়ে পুজো দেন অনুব্রত মণ্ডল। পুজো দিয়ে মন্দির থেকে বেরিয়ে বীরভূম জেলা তৃণমূলের সভাপতি বলেন, 'মাকে যা বলার বলে দিয়েছি। মাকে যা বলার বলেছি।' 


রাত পোহালের বীরভূমের ১১টি আসনে ভোটগ্রহণ। ভোট শুরুর কয়েক ঘণ্টা আগে অনুব্রত মণ্ডল অভিযোগ করেন, "নির্বাচন কমিশনের পুলিশ নোংরামি করছে। আমি চাই বীরভূমে যেমন শান্তিপূর্ণ ভোট হয়, এবারও তাই হোক। কোন ঝামেলা যেন না হয়।" তিনি অভিযোগ করেন, 'সব থানা থেকেই তৃণমূল কংগ্রেস কর্মীদের ডেকে পাঠিয়েছে পুলিশ। অন্যদিকে দুষ্কৃতীদের ধরছে না পুলিশ।'


একধিক অভিযোগ জমা পড়েছে অনুব্রত মণ্ডলের বিরুদ্ধে। এমনটাই জানা গিয়েছে । নির্বাচন কমিশন সূত্রে গতকাল জানা গিয়েছিল, ভিডিওগ্রাফি করা হবে। নজরদারিতে থাকবেন বাহিনীর জওয়ানরা। বীরভূমের তৃণমূল জেলা সভাপতির সঙ্গে থাকবেন একজন এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট। 


উল্লেখ্য, এর আগে ২০১৬ সালের বিধানসভা ভোট, ২০১৯ সালের লোকসভা ভোটের সময় নজরবন্দি করা হয় অনুব্রত মণ্ডলকে। এ বিষয়ে বীরভূম জেলা সভাপতি বলেন, নজরবন্দি মানে কি গৃহবন্দি না কি? নজরবন্দি মানে তো আমার সঙ্গে এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট এবং জওয়ানরা থাকবেন। আমি যেখানে যেখানে যাব আমার সঙ্গে তাঁরা যাবেন।" স্বভাবসিদ্ধ ভঙ্গিতেই তিনি বলেছিলেন "খেলা হবে।" 


অনুব্রত মণ্ডলের নজরদারি নিয়ে আগেই আশঙ্কা প্রকাশ করেছিলেন তৃণমূলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বলেন, "প্রত্যেকবার ভোটের আগে অনুব্রতকে নজরবন্দি করে রেখে দেওয়া হয়। এটা ঘোরতর অপরাধ। ওঁকে বলেছে এইবার এরকম কিছু হলে তুমি আদালতে যাবে। নিরাপত্তা নেবে।"