আলিপুরদুয়ার: আলিপুরদুয়ার শহর লাগোয়া মথুরা এলাকায় তৃণমূলের বুথ সভাপতিকে খুনের অভিযোগ উঠল বিজেপির বিরুদ্ধে। খুনে জড়িত সন্দেহে একজনকে আটক করেছে আলিপুরদুয়ার থানার পুলিশ।


জেলা তৃণমূল নেতৃত্বের দাবি, গতকাল রাত ১টা নাগাদ গাড়ি চালিয়ে বাড়ি ফিরছিলেন তৃণমূল বুথ সভাপতি দীপক রায়। অভিযোগ, মাঝরাস্তায় গাড়ি আটকে তৃণমূল নেতাকে ধারাল অস্ত্র দিয়ে কোপায় বিজেপি আশ্রিত দুষ্কৃতীরা। বাবুরহাট প্রাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্রে নিয়ে গেলে তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন চিকিত্সকরা। বিজেপির প্রতিক্রিয়া এখনও মেলেনি।


ভোটের ফল বেরনোর পর রাজ্যে বিক্ষিপ্ত হিংসা নিয়ে তৃণমূল-বিজেপির চাপানউতোর। উল্লেখ্য, সোমবারই বিজেপি অভিযোগ করে তাদের কর্মীদের ওপর হামলা চলছে। তাদের ছয় কর্মীকে খুন করা হয়েছে। তৃণমূলও দাবি করে, তাদের কয়েকজন কর্মীকে খুন করেছে বিজেপি। এই পরিস্থিতিতে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় শান্তি বজায় রাখার আবেদন জানান।কিন্তু এরপরও হিংসার ঘটনা নিয়ে তৃণমূল-বিজেপি বাকযুদ্ধ চলছে। 


বাড়ি ভাঙচুর...কোথাও আক্রান্ত তৃণমূল... কোথাও বিজেপি।রিসের্টে আগুন....কর্মীদের ওপর হামলা...এমনকি সমর্থকের মাকে মারধর...বাদ যাচ্ছে না কিছুই।কোথাও আক্রান্ত বিজেপি...কোথাও প্রাণ হারাচ্ছেন তৃণমূল কর্মী।


ভোটের ফল প্রকাশের পর থেকে রাজ্যের বিভিন্ন অংশে বিক্ষিপ্ত অশান্তি শুরু হয়েছে। এই পরিস্থিতিতে পাশে থাকার বার্তা দিতে মঙ্গলবার নরেন্দ্রপুর ও বেলেঘাটায় আক্রান্ত দলীয় কর্মীদের বাড়ি গিয়ে তাঁদের সঙ্গে কথা বলেন বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি জগত্‍ প্রকাশ নাড্ডা।পরিস্থিতি ঘুরে দেখেন তিনি। মৃত বিজেপি কর্মীর পরিবারের সদস্যদের পাশে থাকার প্রতিশ্রুতি দেন। 
তিনি অভিযোগ করেন,  আমাদের কর্মীদের মারা হচ্ছে। ভাঙচুর হচ্ছে। গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে লড়ব। ৩ দিনের মধ্যে ২টি রেপ হয়েছে। আমরা আগেই বলেছিলাম। এখন সেটাই হচ্ছে। 


পাল্টা সুব্রত মুখোপাধ্যায় বলেছেন, ভারতে যত রাজ্য আছে, তারমধ্যে বাংলা স্বর্গ রাজ্য। ২-১ টা ঘটনা ঘটছে তাতে বিজেপির উস্কানি রয়েছে। সব মুখ্যমন্ত্রী দেখছেন। এরা আসলে অন্যরকম পরিকল্পনা করতে চায়। যেহেতু জিততে পারেনি তাই গায়ের জ্বালা মেটাতে নানারকম পরিকল্পনা করছে।


এই চাপানউতোরের মধ্যেই মঙ্গলবার রাজ্যপাল টুইট করে জানান, প্রধানমন্ত্রী ফোনে বাংলার আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে ফোনে খোঁজ নিয়েছেন। সেইসঙ্গে তিনি উদ্বেগপ্রকাশও করেন। অকারণ রাজনৈতিক হিংসা, গুণ্ডামি, লুঠপাট, খুনের ঘটনা বন্ধ হোক।  এটা গণতন্ত্রের লজ্জা।...
পাল্টা ট্যুইট করে তৃণমূলের রাজ্যসভার সাংসদ ডেরেক ও’ব্রায়েন বলেন, প্রধানমন্ত্রী ‘রাজনৈতিক সন্ত্রাস’ নিয়ে কথা বলতে রাজ্যপালকে ফোন করেছেন। এটা ২১৪ শতাংশ অতিরঞ্জিত। 


রাজ্য বিজেপি সভাপতি দিলীপ ঘোষ বলেন, রাষ্ট্রপতি শাসন জারি করা উচিত। মমতাকে দায়িত্ব নিতে হবে...দায়িত্ব এড়িয়ে যেতে পারবেন না।


গতকালই রাজভবনে গিয়ে জগদীপ ধনকড়ের সঙ্গে দেখা করেন বাবুল সুপ্রিয় ও শুভেন্দু অধিকারী। 


উল্টোদিকে, ভোটের ফল প্রকাশের পর এদিন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বাড়িতে যান মুখ্যসচিব, স্বরাষ্ট্রসচিব, রাজ্যপুলিশের ডিজি এবং কলকাতার পুলিশ কমিশনার।


এরইমধ্যে বিজেপি নেতা গৌরব ভাটিয়া, বাংলায় ভোটের ফল বেরনোর পর হিংসার ঘটনায় সিবিআই তদন্তের দাবিতে সুপ্রিম কোর্টে জনস্বার্থ মামলা দায়ের করেছেন।