শুভেন্দু ভট্টাচার্য, কোচবিহার: কোচবিহারের নাটাবাড়ি কেন্দ্রে বিজেপি প্রার্থী মিহির গোস্বামীকে ‘দুর্যোধন’ বলে সম্বোধন করলেন এই কেন্দ্রের তৃণমূল প্রার্থী রবীন্দ্রনাথ ঘোষ। সবার সব কথার জবাব মানুষই ভোটবাক্সে দেবে, পাল্টা বিরোধী শিবিরের যোদ্ধাকে কটাক্ষ নাটাবাড়ির বিজেপি প্রার্থীর। তৃণমূল প্রার্থী রবীন্দ্রনাথ ঘোষ বলেন, ‘‘আমি অর্জুনের মতো রথ চালিয়ে লড়াই করব। আমার বিপরীতে দুর্যোধন।’’ কোচবিহারের নাটাবাড়ির বিজেপি প্রার্থী মিহির গোস্বামী বলেন, ‘‘মোদিই হলেন অর্জুন। অন্য কারও অর্জুন হওয়ার যোগ্যতা নেই।’’


দীর্ঘ ১৮ দিন ধরে চলেছিল মহাভারতের কুরুক্ষেত্রর যুদ্ধ। আর বাংলায় এবার ভোটের কুরুক্ষেত্র যুদ্ধ চলবে ৮ দফায়। ১০ই এপ্রিল, চতুর্থ দফায় কোচবিহারের নাটাবাড়ি বিধানসভা কেন্দ্রে ভোটগ্রহণ। এই কেন্দ্রে ত্রিমুখী লড়াইয়ে জোড়াফুল চিহ্নে লড়ছেন রবীন্দ্রনাথ ঘোষ, পদ্মফুলের হয়ে লড়ছেন মিহির গোস্বামী, লড়াইয়ে রয়েছেন সিপিএম প্রার্থী আকিক হাসান। একসময় তৃণমূল কংগ্রেসের দুই সহকর্মী একুশের ভোটযুদ্ধে এবার একে অপরের বিরুদ্ধে সম্মুখ সমরে নামছেন।


শুক্রবার সকাল-সকাল কোচবিহার শহরের মদনমোহন মন্দিরে পুজো দিয়ে তুফানগঞ্জের মহকুমা শাসকের দফতরে মনোনয়ন পত্র জমা দেন নাটাবাড়ির তৃণমূল প্রার্থী রবীন্দ্রনাথ ঘোষ।  মুখে শোনা যায় খেলা হবে স্লোগানও। রবীন্দ্রনাথ ঘোষ বলেন, ‘‘উনি গোত্র বদলে ফেলেছেন। সুতরাং আগের সম্পর্ক আর থাকছে না। উনি ভুল পক্ষে যুদ্ধ করেছেন। এখন যে লড়াই হবে জেতার লড়াই হবে, এক ইঞ্চি মাটি ছাড়ব না। আমি অর্জুনের মতো রথ চালিয়ে লড়াই করব। আমার বিপরীতে দাদা দুর্যোধন। কুরুক্ষেত্রের যুদ্ধে যা ফল হয়েছিল, নাটাবাড়ির যুদ্ধেও একই ফল হবে।’’


রবীন্দ্রনাথের পরই তুফানগঞ্জের বিজেপি প্রার্থী মালতি রাভা রায় ও কোচবিহার দক্ষিণের প্রার্থী নিখিলরঞ্জন দে-কে সঙ্গে নিয়ে মদনমোহন মন্দিরে পুজো দেন নাটাবাড়ির বিজেপি প্রার্থী মিহির গোস্বামীও। মন্দির চত্বর থেকেই বিরোধী শিবিরের প্রার্থীর উদ্দেশে কটাক্ষবাণ ছুড়ে দেন নাটাবাড়ির গেরুয়া শিবিরের সৈনিক। বিজেপি প্রার্থী মিহির গোস্বামীর মতে, ‘‘আমি বিশ্বাস করি, সবার উপর মানুষ সত্য তাঁর উপর নেই। কে কী বলল সেটা বড় প্রশ্ন নয়। যুগে যুগে মহাপুরুষরা সত্যকে প্রতিষ্ঠার জন্য আবির্ভূত হয়েছেন। তেমনই মোদি হলেন অর্জুন। অন্য কারও অর্জুন হওয়ার যোগ্যতা নেই। যারা দিবাস্বপ্ন দেখছেন তাঁদের দেখতে দিন।’’


গতবছরের নভেম্বরেই তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দেন কোচবিহার দক্ষিণের বিদায়ী বিধায়ক মিহির গোস্বামী। এখন দেখার, একসময় ঘাসফুলের জমির সহযোদ্ধারা একে অপরকে কতটা শক্ত লড়াইয়ের সামনে ফেলতে পারেন?