কোচবিহার:   শীতলকুচিতে কেন্দ্রীয় বাহিনীর গুলিতে নিহতদের শেষকৃত্য সম্পন্ন হল। জোড় পাটকি গ্রামে শোকের ছায়া। গতকাল ভোট চলাকালে গুলি চালনায় জোড় পাটকিতে ঝরে গিয়েছে চার চারটে তাজা প্রাণ। তারপর থেকে স্বজনহারাদের কান্নায় ভারী হয়ে ওঠে গ্রামের পরিবেশ।  ময়নাতদন্তের পর এদিন হাসপাতাল থেকে মৃতদের দেহ এসে  পৌঁছয় গ্রামে। শোক মিছিল করে নিহতদের শেষকৃত্যে যোগ দেন গ্রামবাসীরা।


ভোটের বুথের কাছে যে মাঠে এই মর্মান্তিক ঘটনা ঘটেছে, সেখানে শহিদ বেদি তৈরি হয়। শ্রদ্ধাজ্ঞাপন করেন গ্রামবাসীরা।  সেখান থেকে  মৃতদেহগুলি তাঁদের বাড়িতে নিয়ে যাওয়া হয়।


এ ধরনের ঘটনা গ্রামে এর আগে কোনওদিন ঘটেনি। ঘটনার আকস্মিকতায় বিহ্বল গ্রামবাসীদের মনে একাধিক প্রশ্ন ঘোরাফেরা করছে। প্রথমত, কেন গুলি চালাতে হল? দ্বিতীয়ত যারা গুলি চালিয়েছে তাদের বিরুদ্ধে কী ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে ?


কোচবিহারে পুলিশ সুপার গতকাল  দাবি করেছিলেন, ২০০-৩০০ জন কেন্দ্রীয় বাহিনীকে ঘিরে ফেলেছিল। সেই দাবি অস্বীকার করেছেন গ্রামবাসীরা। পাশাপাশি তাঁদের প্রশ্ন, যদি এমন ঘটনা ঘটেও থাকে, তাহলে কেন রবার বুলেট বা টিয়ার গ্যাস ব্যবহার করা হয়নি?


তাঁদের আরও প্রশ্ন, পায়ে গুলি না করে বুক লক্ষ্য করে  কেন গুলি চালানো হয়েছে?


গ্রামবাসীরা জানিয়েছেন, যাঁরা গুলিতে মারা গিয়েছেন, তাঁদের বেশিরভাগই তৃণমূল সমর্থক ।  কিন্তু প্রত্যেকেই হতদরিত্র পরিবারের। একজন কৃষক, দুজন রাজমিস্ত্রী, একজনমাথাভাঙা কলেজের প্রথম বর্ষের ছাত্র।


গতকাল গুলি চালনায় চার জনের মৃত্যুর প্রতিবাদে আজ কালাদিবস পালন করেন গ্রামবাসীরা। পাশাপাশি, গ্রামে শোকমিছিল করেন তাঁরা। কেন্দ্রীয় বাহিনীর গুলিতে চারজনের মৃত্যুর ঘটনায় নির্বাচন কমিশনকেও কাঠগড়ায় তুলছেন তাঁরা। সেইসঙ্গে ন্যয়বিচার দাবি করেছেন তাঁরা।


নির্বাচন কমিশন আগামী ৭২ ঘণ্টা রাজনৈতিক নেতা-কর্মীদের প্রবেশ কোচবিহারে নিষিদ্ধ করেছে। তাই এদিন শীতলকুচিতে যাওয়ার কথা থাকলেও সেই কর্মসূচী বাতিল করেন তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। শিলিগুড়ি থেকে ভিডিও কলে নিহতদের পরিজনদের সঙ্গে কথা বলছেন তিনি। নিহতদের পরিবারের পাশে দাঁড়ানোর আশ্বাস দিয়েছেন তৃণমূল নেত্রী।  ৭২ ঘন্টার শেষে তিনি আসবেন বলেও জানিয়েছেন তৃণমূল নেত্রী।