কোচবিহার : পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে বিজেপি প্রার্থীদের গ্রেফতারের প্রতিবাদ। কোচবিহারের পুলিশ সুপারের অফিসের সামনে ধর্নায় জেলার ৬ বিজেপি বিধায়ক। ভোটের আগে পুলিশি সন্ত্রাসের অভিযোগ তুলেছে বিজেপি। গেরুয়া শিবিরের প্রশ্ন, যদি বিজেপি প্রার্থীরা গ্রেফতার হয় তাহলে সন্ত্রাস চালানোর অভিযোগ উদয়ন গুহ কেন গ্রেফতার হবেন না ? তৃণমূলের পাল্টা দাবি, হার বুঝতে পেরে নাটক করছে বিজেপি।
পঞ্চায়েত ভোটের আগে, কোচবিহার যেন সন্ত্রাসের আঁতুরঘর। একের পর এক গুলি। বোমা। প্রাণহানি। ঝরছে রক্ত। সমানে লেগে রয়েছে বিজেপি-তৃণমূল দ্বৈরথ। কেউ কাউকে এক চুলও জমি ছাড়তে নারাজ। এই পরিস্থিতিতে উভয় দলই একে অপরের বিরুদ্ধে সমানে অভিযোগ তুলে যাচ্ছে। পঞ্চায়েত ভোটের মুখে ৫ বছরের পুরনো মামলায় গ্রেফতার করা হয়েছে বিজেপির জেলা পরিষদের প্রার্থীকে। এনিয়ে বিতর্ক দানা বেঁধেছে কোচবিহারের দিনহাটায়। বিজেপি অভিযোগ করেছে, হেরে যাবে বুঝেই তৃণমূলের ইন্ধনে পুলিশ অতি সক্রিয়। যদিও আইন মেনেই পুলিশ পদক্ষেপ করেছে বলে পাল্টা দাবি করেছে তৃণমূলও। ধৃত বিজেপি প্রার্থীকে ১৪ দিনের জেল হেফাজতে পাঠিয়েছে দিনহাটা মহকুমা আদালত।
তরণীকান্ত বর্মন। কোচবিহারের দিনহাটা ২ নম্বর পঞ্চায়েত সমিতির বিদায়ী সদস্য। তৃণমূল নেতা তরণীকান্ত বর্মন, জেলার রাজনীতিতে উদয়ন গুহর বিরোধী গোষ্ঠীর নেতা বলে পরিচিত ছিলেন। এবার পঞ্চায়েত ভোটের তৃণমূলের প্রার্থীপদ না পেয়ে, তিনি বিক্ষুব্ধ হিসাবেই মনোনয়নপত্র জমা দেন। পরে কোচবিহারের বিজেপি সাংসদ ও কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী নিশীথ প্রামাণিকের হাত ধরে তরণীকান্ত যোগ দেন বিজেপিতে। দলবদলের পরে, তরণীকান্ত বর্মনকে জেলা পরিষদের ২৬ নম্বর আসনে প্রতীক দেয় গেরুয়া শিবির। কেন্দ্রীয় বাহিনীর নিরাপত্তাও দেওয়া হয়। বুধবার রাতে, ২০১৯-এর মামলায় বিজেপির ওই জেলা পরিষদ প্রার্থীকে গ্রেফতার করে কোচবিহার জেলা পুলিশের ক্রাইম ব্রাঞ্চ।
এই ঘটনার পর নির্বাচনের আগে বিরোধী প্রার্থীদের জব্দ করতেই পুলিশকে ব্যবহার করছে তৃণমূল বলে অভিযোগ উঠেছে !
কিন্তু কেন বারবার অশান্ত হচ্ছে কোচবিহার ?
২০১৯-এর লোকসভা ভোটে কোচবিহার আসনটি তৃণমূলের থেকে ছিনিয়ে নেন বিজেপিতে যোগ দেওয়া নিশীথ প্রামাণিক।
তাঁকে অমিত শাহের ডেপুটি অর্থাৎ কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী করেন নরেন্দ্র মোদি। ২০২১-এর বিধানসভা ভোটেও কোচবিহারে দাপট দেখায় বিজেপি। ৭টি আসন দখল করে গেরুয়া শিবির। মাত্র ২টি আসনে জেতে তৃণমূল। কিন্তু উপ নির্বাচনে ১ লক্ষ ৬৩ হাজার ভোটে জিতে দিনহাটা আসনটি বিজেপির থেকে ছিনিয়ে নেন তৃণমূলের উদয়ন গুহ। তাঁকে উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী করেন মমতা বন্দ্য়োপাধ্য়ায়। তারপর থেকেই দুই হেভিওয়েটের দ্বৈরথে বারবার উত্তপ্ত কোচবিহার।