কলকাতা: বেশ কিছু জায়গায় পুনরায় ভোটগ্রহণ হলেও, মোটামুটি ভাবে পঞ্চায়েত নির্বাচন মিটে গিয়েছে। কিন্তু এ নির্বাচন নিয়ে রাজনৈতিক টানাপোড়েনে ইতি পড়ার লক্ষণ নেই। বরং যত দিন যাচ্ছে বাড়ছে সংঘাত, আক্রমণ এবং পাল্টা আক্রমণ। নির্বাচনী সন্ত্রাসের অভিযোগ খতিয়ে দেখতে রাজ্য়ে যখন উপস্থিত বিজেপি-র ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং টিম। সেই নিয়েও শুরু হয়েছে রাজনৈতিক তরজা। (Panchayat Elections 2023) 


প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী রবিশঙ্কর প্রসাদের নেতৃত্বে জায়গায় জায়গায় পরিস্থিতি খতিয়ে দেখছে বিজেপি-র কেন্দ্রীয় ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং টিম। সেই নিয়ে মন্তব্য করতে গিয়ে সরাসরি রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোসকে (CV Ananda Bose) নিশানা করলেন রাজ্যের পরিষদীয় মন্ত্রী তথা বর্ষীয়ান তৃণমূল নেতা শোভনদেব চট্টোপাধ্যায় (Sovandeb Chattopadhyay)। তাঁর বক্তব্য, "বিজেপি-র ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং কমিটিতে রাজ্যপালেরও থাকা উচিত। মণিপুরেও যাওয়া উচিত রাজ্যপালের। উনি তো রাজনৈতিক কর্মীর মতই কাজ করছেন!"


পঞ্চায়েত নির্বাচনে যে ভূরি ভূরি হিংসা, অশান্তি এবং হানাহাানির খবর সামনে এসেছে, তার নেপথ্যে বিরোধীদের ষড়যন্ত্র রয়েছে বলেো এদিন দাবি করেন শোভনদেব। তিনি বলেন, "গণতন্ত্রে মানুষ নিজের মতামত জানাবেন। নির্বাচন একটি গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া। তাতে হিংসার ঘটনা কাম্য নয় একেবারেই। কিন্তু হিংসার পরিকল্পনা আগে থেকেই সেরে রাখা হয়েছিল। মনোভাব ছিল যে, দিল্লিকে জড়ানোর, কেন্দ্রীয় বাহিনী উপস্থিতিতে গন্ডগোলের পরিবেশ তৈরি করার।"


আরও পড়ুন: Sukanta Majumdar: বাঘে গরুতে একঘাটে জল খাবে, ’২৬ সালে তৃণমূল, সিপিএম, কংগ্রেসের জোট হবে, দাবি সুকান্তের


বিজেপি-র ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং টিমকে এদিন তীব্র কটাক্ষ করেন কামারহাটির তৃণমূল বিধায়ক মদন মিত্রও। তাঁর বক্তব্য, "অমন কমিটি আসবে-যাবে। লায় আসবে, সরকারি টাকায় ফূর্তি করবে, থাকবে ফাইভ স্টার হোটেলে। তার পর আবার চলে যাবে। তৃণমূল গোটা দেওয়াল জুড়ে রয়েছে। বুক চওড়া হয়ে গিয়েছে।" পঞ্চায়েত নির্বাচন ঘিরে বাম আমলেও হিংসা হয়েছে, কিন্তু খুনোখুনি না হওয়া বাঞ্ছনীয় ছিল বলে এদিন মন্তব্য করেন বিধানসভার স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়ও। 


তবে ভোট-সন্ত্রাসের অভিযোগ ঘিরে রাজ্য় রাজনীতির পারদ ক্রমশই চড়ছে। বিজেপি-র বিরুদ্ধে চক্রান্তের অভিযোগ তুলছে তৃণমূল। নির্বাচন চলাকালীন রাজ্যপালের ভূমিকা নিয়েও লাগাতার প্রশ্ন তুলছে তারা। সেই আবহে মঙ্গলবারই রাজ্যে এসেছে বিজেপির ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং টিম। এই টিমে রয়েছেন বিজেপি সাংসদ তথা প্রাক্তন কেন্দ্রীয় আইনমন্ত্রী রবিশঙ্কর, মুম্বইয়ের প্রাক্তন পুলিশ কমিশনার ও বিজেপি সাংসদ সত্যপাল সিংহ, রাজদীপ রায়, রেখা ভার্মা এবং উত্তরপ্রদেশের প্রাক্তন ডিজিপি ও বিজেপির রাজ্যসভার সাংসদ ব্রিজলাল। ইতিমধ্যে রাজভবন থেকেও ঘুরে এসেছে বিজেপি-র কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের প্রতিনিধি দল। সেখানে তাঁদের সঙ্গে ছিলেন রাজ্য বিজেপি-র সভাপতি সুকান্ত মজুমদর-সহ দলের রাজ্য নেতৃত্ব। সেই নিয়েও তরজা চলছে।