নয়াদিল্লি: ভোটের জন্য গত তিনদিন নন্দীগ্রামেই রেয়াপাড়ার ভাড়াবাড়িতে ছিলেন তৃণমূলপ্রার্থী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।  ভোট মিটতেই আজ প্রচারের জন্য উত্তরবঙ্গের উদ্দেশে রওনা দিচ্ছেন তিনি।ইতিমধ্যেই তিনি রেয়াপাড়ার বাড়ি থেকে বেরিয়েছেন। এরপর অস্থায়ী হেলিপ্যাড থেকে চপার ধরে কলকাতা বিমানবন্দরে আসবেন। সেখান  থেকে উত্তরবঙ্গে  রওনা দেবেন তিনি।  আজই উত্তরবঙ্গে একাধিক কর্মসূচি রয়েছে তাঁর। বেলা ১২টায় কোচবিহারের দিনহাটায় সভা রয়েছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের।  এরপর বেলা ১২টা ৪০ নাগাদ নাটাবাড়ি ও তুফানগঞ্জে সভা করবেন তিনি।  দুপুর দেড়টায় আলিপুরদুয়ারে সভা রয়েছে তৃণমূলনেত্রীর। 


 


 গতকালই রাজ্য বিধানসভা নির্বাচনের দ্বিতীয় দফায় নন্দীগ্রাম আসনের ভোট সম্পন্ন হয়েছে। এক বছরের জন্য রেয়াপাড়ায় বাড়ি ভাড়া নিয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। গতকাল নন্দীগ্রামে ভোট চলাকালে ব্যাপক উত্তেজনা ছড়ায়।


 


গতকাল সকাল থেকে রেয়াপাড়ার বাড়িতে ছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। নন্দীগ্রামের বয়ালের ৭ নম্বর বুথে পোলিং এজেন্টকে ঢুকতে না দেওয়ার অভিযোগে সকাল থেকে সরব হয় তৃণমূল। এই খবর দেখার পর এবং তাঁর নির্বাচনী এজেন্টের কাছ থেকে অভিযোগ পাওয়ার পর, দুপুরের দিকে বের হন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বয়ালে পৌঁছতেই উত্তপ্ত হয়ে ওঠে এলাকা।যে স্কুলে বুথ, তার বারান্দায় তখন হুইলচেয়ারে বসে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বাইরে চরম বিক্ষোভ। বিক্ষোভরত তৃণমূল ও বিজেপির কর্মীদের সামলাতে হিমসিম খেতে হয় পুলিশ ও কেন্দ্রীয় বাহিনীকে। 


 


দু’দলের কর্মীদের মধ্যে হাতাহাতির পরিস্থিতি তৈরি হয়। পরস্পরকে লক্ষ্য করে চলে ইটবৃষ্টি। বাঁশ হাতে বেরিয়ে আসেন অনেকেই।পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করতে মাঠে নামতে হয় আইপিএল অফিসারদের।


 


বয়ালের বুথ থেকেই ফোনে রাজ্যপালের কাছে ভোটলুঠের অভিযোগ করেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। পরিস্থিতি বেগতিক দেখে দিল্লি থেকে হস্তক্ষেপ করে নির্বাচন কমিশন।
এরপর মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে কথা বলতে আসেন নন্দীগ্রাম থানার দায়িত্বপ্রাপ্ত আইপিএস অফিসার ও কমিশনের পর্যবেক্ষক।


 


নন্দীগ্রামের ওসির কাছে অভিযোগ দায়ের করেন তিনি।প্রায় দু’ঘণ্টা পর বিক্ষোভকারীদের সরিয়ে কোনওক্রমে বয়ালের স্কুল থেকে বের করে আনা হয় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে। 


 



বয়ালের স্কুল থেকে বেরিয়ে নন্দীগ্রামে তৃণমূলের পার্টি অফিসে পৌঁছে বৈঠকে বসেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।তারপরই বয়ালে পৌঁছন শুভেন্দু অধিকারী।


 


এদিকে সূত্রের দাবি, বৃহস্পতিবার নন্দীগ্রামের একাধিক বুথে ওয়েবকাস্টিং ব্যহত হয়। প্রথমে তৃণমূলের তরফে অভিযোগ করা হয়, বিজেপি কর্মীরা ক্যামেরার মুখ ঘুরিয়ে দিচ্ছেন। সঙ্গে সঙ্গে নির্বাচন কমিশন লোক পাঠিয়ে ক্যামেরার অ্যাঙ্গল ঠিক করে। কিন্তু, তারপরও আবার একই ঘটনা ঘটে বলে অভিযোগ। 


 


সব মিলিয়ে দ্বিতীয় দফার ভোটের দিনে ধুন্ধুমার পরিস্থিতি দেখা দিয়েছিল নন্দীগ্রামে।এর আগে মনোনয়ন জমা দিয়ে ফেরার সময় বিরুলিয়া বাজারে আহত হয়েছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। হাসপাতালে ভর্তি হন তিনি। হাসপাতাল থেকে ছাড়া পেয়ে হুইলচেয়ারে চড়েই বিভিন্ন সভা ও রোড শো-র মাধ্যমে ভোটের প্রচার করছেন মমতা।