পূর্ব মেদিনীপুর: ২১-এর বিধানসভা ভোটের আগে বাংলার রাজনীতি উথালপাথাল হচ্ছে দলবদল ঘিরে। তৃণমূল সাংসদ শতাব্দী রায়কে ঘিরে নতুন জল্পনার মধ্যেই পূর্ব মেদিনীপুরের শিল্পশহর হলদিয়ার পুরপ্রধানের পদ থেকে ইস্তফা দিলেন শ্যামল আদক। যিনি আদতে বিজেপি নেতা শুভেন্দু অধিকারীর ঘনিষ্ঠ বলেই পরিচিত।


পদত্যাগী পুরপ্রধানের দাবি, ব্যক্তিগত কারণে তিনি ইস্তফা দিয়েছেন।

কিন্তু, সূত্রের দাবি, ঘনিষ্ঠমহলে শ্যামল আদক জানিয়েছেন, পুরপ্রধান হিসেবে দলের একাংশের বিরোধিতায় কাজ করা অসম্ভব হয়ে পড়ছিল। এমনকি, শুভেন্দুর প্রসঙ্গ টেনে একাধিকবার দলেরই অন্দরে তাঁকে হেনস্থাও করা হয়।

এই অভিযোগের সারবত্তাও আছে যথেষ্ট। গত ১২ ডিসেম্বর, হলদিয়ার দুর্গাচকে বঙ্গধ্বনি প্রচারে শ্যামল আদককে হেনস্থার অভিযোগ ওঠে দলেরই একাংশের বিরুদ্ধে।

শুভেন্দুর দলবদলের পর, গত ৯ জানুয়ারি হলদিয়ায় আইএনটিটিইউসি-র কমিটি গঠন নিয়ে বিবাদের জেরে শ্যামল আদককে নিগ্রহের অভিযোগ ওঠে।

জানা গেছে,  শুভেন্দু ঘনিষ্ঠ হওয়ায় শ্যামল আদককে হলদিয়ার পুরপ্রধানের পদ থেকে সরানোর জন্য অনাস্থা আনার তোড়জোড় শুরু করেন কাউন্সিলরদের একাংশ। যদিও এমন সম্ভাবনার কথা খারিজ করেছে হলদিয়া শহর তৃণমূল নেতৃত্ব।হলদিয়া টাউন তৃণমূল কংগ্রেস সভাপতি সুধাংশু মণ্ডল বলেছেন, উনি ইস্তফা দিয়েছেন বোর্ড অফ কাউন্সিলরের কাছে, উনি ব্যক্তিগত কারণ দেখিয়েছেন, নতুন চেয়ারম্যান যতদিন না হচ্ছেন আমি এই দায়িত্ব সামলাব।

গত ১৯ ডিসেম্বর মেদিনীপুরে অমিত শাহ-র সভায় শুভেন্দু অধিকারীর সঙ্গে বিজেপিতে যোগদান করেন হলদিয়ার বাম বিধায়ক তাপসী মণ্ডল।

এবার কি সে পথে হাঁটবেন শ্যামল আদক? এ বিষয়ে তাঁর প্রতিক্রিয়া মেলেনি।

তবে তৃণমূলকে কটাক্ষ করেছে বিজেপি।তমলুক সাংগঠনিক জেলার সহ সভাপতি প্রলয় পাল বলেছেন, ওখানে থেকে কাজ করতে পারছেন না শ্যামল-সহ অনেকেই। দল ক্ষমতায় আসতে পারবেন না জেনেই ওখান থেকে বেরিয়ে আসছেন।

পুরসভা দখলে থাকলেও, ২০১১ থেকে এখনও অবধি হলদিয়া বিধানসভায় জেতেনি তৃণমূল। আর শিল্পশহরে বিজেপির উত্থানের আবহে, পুরপ্রধানের পদত্যাগ, একুশের নির্বাচনে তৃণমূলের লড়াই-কে আরও কঠিন করে দিল বলেই মত রাজনৈতিক মহলের।