নন্দীগ্রাম: জীবনের কঠিন পরীক্ষার দিন সকাল থেকেই চরকির মতো, নিজের নির্বাচনী কেন্দ্রের এপ্রান্ত থেকে ওপ্রান্ত, ছুটে বেড়ালেন নন্দীগ্রামের বিজেপি প্রার্থী শুভেন্দু অধিকারী। 


এদিন সকাল ৭টার মধ্যেই নন্দীগ্রামে ঢুকে পড়েন শুভেন্দু অধিকারী। সাড়ে ৭টায় নন্দনায়ক বাড় প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ভোট দেন নন্দীগ্রামের বিজেপি প্রার্থী। 


বুথটির রাস্তা বেশ সংকীর্ন। গাড়ি ঢোকে না। তাই একজনের বাইকের পিছনে বসে ভোট দিতে যান প্রথমবার নন্দীগ্রামের ভোটার শুভেন্দু। এরপর নন্দীগ্রামে নিজের সহায়তা কেন্দ্রে যান তিনি। সেখান থেকে সাময়িক নজরদারি চালান। 


সকাল সোয়া ৯ টা নাগাদ, ফের বেরিয়ে পড়েন শুভেন্দু। যেখানেই সমস্যার কথা শুনতে পান, দৌড়ে যান। ভোটারদের সঙ্গে কথা বলেন। সমস্যার কথা জানতে চান।


 



 


কোথাও তাঁকে বলতে শোনা যায়, জানলা খুলে রেখেছিল। লাগিয়ে দিয়ে এসেছি। ৬০ পার্সেন্ট ভোট পড়ে গেছে। এতো রেভ্যুলিউশন। ৮৫ শতাংশ ভোট হবে চেঞ্জের পক্ষে। বলেন, সুফিয়ান মডেল, সামাদ মডেল ফেল। বেগমের দুধেল গাইরা কিছু করতে পারবে না।


শুভেন্দুর অভিযোগ, ৭০-৮০টা বুথে এজেন্টই দিতে পারেনি তৃণমূল। বলেন, তৃণমূল তো ৭০-৮০টা বুথে এজেন্ট দিতে পারেনি। লোকই তো নেই। যে বুথে ধমকাচ্ছে, সেখানে যাব।


এরইমধ্যে, সাতেঙ্গাবাড়ির কাছে রানিচক রোড প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সামনে তিনি পৌঁছতেই, জয় বাংলা স্লোগান দেওয়া হয়। শুভেন্দুর গাড়ি লক্ষ্য করে ইট ছোঁড়া হয় বলে অভিযোগ। কিন্তু, তাকে বিন্দুমাত্র গুরুত্ব না দিয়ে তখন আরও উজ্জীবীত বিজেপি প্রার্থী। 


প্রতিপক্ষ সম্পর্কে রীতিমতো কটাক্ষের সুর শোনা যায় বিজেপি প্রার্থীর গলায়। নন্দীগ্রামের বিজেপি প্রার্থী বলেন, ৬৬ বছর, আন্টি। আন্টি কো থোড়া শান্ত রহনা চাহিয়ে (আন্টিকে একটু শান্ত থাকবে হবে)। সংযত থাকতে হবে তাঁকে। গুন্ডাগিরি করা চলবে না। উন্নয়ন জিতবে, তোষণের রাজনীতির পরাজয় হবে।


 



 


ভোটের প্রচারে যে বিশেষণ ব্যবহার করে আগাগোড়া তৃণমূল প্রার্থী কটাক্ষ করেছেন বিজেপি প্রার্থী, তার ব্যবহার বৃহস্পতিবারও করেছেন শুভেন্দু অধিকারী। বললেন, বেগম হারছে। বিকাশ জিতছে। জমির সঙ্গে কঠিনভাবে যুক্ত আমি। গ্রামে পাড়ায় লোকজন আছে। মানুষকে বিশ্বাস শব্দটা খুব বড়। যেটা নন্দীগ্রামে জনগণের সঙ্গে আমার আচে। ২০ বছরের সম্পর্ক। আমার প্রার্থীকে ঢুকতে সকালে বাধা দিচ্ছিল। পরে ঠিক হয়ে যায়। পিসফুল ভোট।


বেলা যত গড়িয়েছে ততই শুভেন্দু অধিকারীর মুখের হাসি চওড়া হয়েছে! নন্দীগ্রামের প্রচারে আগাগোড়া ধর্মের প্রসঙ্গ তুলে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে কটাক্ষ করেছেন তিনি। বৃহস্পতিবার ভোটের দিনও তার ব্যতিক্রম হয়নি! বরং আরও জোরালো হয়েছে!  বলেন, ‘‘যাঁরা জয় শ্রীরাম বলেন, কৃষ্ণ কৃষ্ণ হরে হরে বলেন, যাঁরা দুর্গা পুজো করেন, জয় মা কালী বলেন তাঁরা দুপুর ১২টার মধ্যেই ৬০ শতাংশ ভোট দিয়ে দিয়েছেন।’’


নাম না করে, ফের নির্দিষ্ট একটি সম্প্রদায়ের কথাও বারবার তুলে ধরে প্রচারের অভিমুখ আরও স্পষ্ট করে দিয়েছেন শুভেন্দু। বলেন, এতদিন এখানে কোনও রেজিস্টান্ট ছিল না। অপোজিশন ছিল না। তাই কমপ্লেইন ছিল না। এবার তো জবরদস্ত কমপিটিশন। টিএমসি ডেসপারেট। ওই জিপিতে ১২টি বুথ। ২টি বুথে ওই কমিউনিটির প্রেজেন্স। সেখানেই অ্যাটাক। বাকি ১০টি বুথে জয় শ্রী রাম, মা কালীর ডিভোটি। 


জওয়ানদের ভূমিকাকে প্রশংসা করলেন শুভেন্দু। বললেন, পুলিশ-সিআরপিএফ ওয়ার্কস ভেরি ফাইন। সুস্থ ভোট হচ্ছে।