কলকাতা: লোকসভা ভোটেও (Lok Sabha Election) বাংলায় তৃণমূলের (TMC) দাপট। সবুজ ঝড়ে ধরাশায়ী হল গেরুয়া শিবির। এদিকে, সোশাল মিডিয়ায় বলা হচ্ছে, বাংলায় আসন সংখ্যা ধরে রাখল বামেরা (CPIM)। শূন্য ছিল, শূন্যই রইল। যদিও ব্রিগেড থেকে সোশাল মিডিয়া, লাল দাপট থাকে দেখার মতো। সেই ট্রেন্ডে কোনও দলই আশেপাশে থাকে না। কিন্তু তবু কেন ভোটবাক্সে সে জবাব পাওয়া গেল না? ২৪-এর লোকসভা ভোটের ফলাফলের পর সেই প্রশ্নই উঠছে।

  


যেমন, বহরমপুরে রাজনীতিতে নবাগত ইউসুফ পাঠানের কাছে হারলেন পাঁচ বারের সাংসদ অধীর চৌধুরী। মুর্শিদাবাদে হারলেন মহম্মদ সেলিম। দাগ কাটতে পারলেন না সৃজন ভট্টাচার্য, দীপ্সিতা ধর, সায়ন বন্দ্যোপাধ্যায়, প্রতিকূর রহমানরা। এক কুম্ভ হয়ে শুধু মালদা দক্ষিণ লোকসভা কেন্দ্র রক্ষা করলেন কংগ্রেসের ঈশা খান চৌধুরী।    


প্রচারে সাড়া জাগিয়েও কোনও দাগ কাটতে পারল না সিপিএমের তরুণ ব্রিগেড। বামেরা এবার তরুণ ঝকঝকে মুখেদের প্রার্থী করেছে। তাঁরা কেরিয়ারগতভাবেও সফল, প্রচারে কোনও ফাঁকি দেননি। প্রতিদিন জনসংযোগ করে গিয়েছেন। এমনকী এবারে বাম-কংগ্রেস জোটও অনেক শক্ত তাও কেন শূন্য-হাত বামেদের। কোথাও কি সার্বিক প্রত্যাখ্যান? 


বিশেষজ্ঞের মতে, দেশজুড়েই প্রতিষ্ঠান বিরোধীতা চলেছে। কিন্তু ছোট ছোট ইস্যুগুলি তৃণমূলের কালো অন্ধকার ঝাঁঝে হারিয়ে গিয়েছে। এছাড়াও মেরুকরণ যত হয়েছে ততই ভোট কেটেছে। যতবার প্রধানমন্ত্রী এসে এ রাজ্যে ধর্মীয় মেরুকরণ করেছে, সংখ্যালঘু ভোট তত বেশি করে তৃণমূলে গিয়েছে। বাম ও কংগ্রেসরা যেহেতু ধর্মের এই মেরুকরণের বিরোধিতা করে গিয়েছে, তাই হিন্দু ও মুসলিম কোনও ভোটই পায়নি।


আরও পড়ুন, বিজেপির ভোটে নেই 'সন্দেশখালি প্রভাব'! কেন জয় পেল না পদ্ম শিবির?


এই একই দাবি করেছেন বহরমপুরের পরাজিত কংগ্রেস প্রার্থী অধীর চৌধুরী। তিনি বলেছেন, 'বাংলার রাজনীতি ক্রমশ ধর্মনিরপেক্ষ রাজনীতির জন্য বিপজ্জনক হয়ে উঠছে। উদার ও ধর্মনিরপেক্ষ শক্তি যারা আছে, তাদের জন্য নির্বাচন কঠিন হচ্ছে। আমি ইউসুফ পাঠানের কাছে পরাজিত হয়েছি।আমি স্যান্ডউইচ হয়েছি। এক দিকে, হিন্দু ভোটের বিভাজন, অন্য দিকে মুসলিম ভোটের বিভাজন। আমি হিন্দু হতে পারিনি। মুসলিমও হতে পারিনি।’  


যদিও বিজেপি-তৃণমূল দাবি করেছে বাম-কংগ্রেস ভোটে ভাগ বসিয়েছে। তাই আসন সংখ্যায় বদল এসেছে, এমনটাই দাবি। যদিও বামেদের দাবি , বড় বিপদ বিজেপির থেকে রক্ষা পেতেই রাজ্যের বিপদ তৃণমূলে গিয়েছে ভোট। আবার তৃণমূল থেকে বাঁচতে অনেকেই বিজেপিকে ভোট দিয়ে থাকতে পারে। 


তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কটাক্ষ করে বলেছেন, সিপিএম নিয়ে আমি কিছু বলতে চাইনা। ওরা লস্ট কেস। 


বঙ্গ রাজনীতির বিশেষজ্ঞদের মতে, 'পাওয়ার'(ক্ষমতা)-এ নেই এবং কিছু পাওয়ার আশা নেই, সে কারণেই হয়তো এবারও শূন্য বামেরা। 


আপনার পছন্দের খবর আর আপডেট এখন পাবেন আপনার পছন্দের চ্যাটিং প্ল্যাটফর্ম হোয়াটস অ্যাপেও। যুক্ত হোন ABP Ananda হোয়াটস অ্যাপ চ্যানেলে