মনোজ বন্দ্যোপাধ্যায় ও কৌশিক গাঁতাইত, পশ্চিম বর্ধমান: গতকাল বিক্ষোভের মুখে পড়েছিলেন। আজ ফের স্বমহিমায় দেখা গেল আসানসোল দক্ষিণের তৃণমূল প্রার্থী, অভিনেত্রী সায়নী ঘোষকে। বাড়ি বাড়ি ঘুরে প্রচার সারলেন আসানসোল দক্ষিণের তৃণমূল প্রার্থী।


আগের দিন সন্ধেয় রানিগঞ্জ থানা এলাকার এগারায় প্রচারে বেরিয়েছিলেন তৃণমূলের তারকা প্রার্থী। তখন হিন্দু দেব-দেবীদের অপমান করার অভিযোগে তাঁকে ঘিরে বিক্ষোভ দেখান আরএসএস-এর ছাত্র সংগঠন এবিভিপি-র কয়েকজন সমর্থক। তাঁরা গো ব্যাক স্লোগানও দেন।


এরপর পুলিশের সামনেই বচসায় জড়িয়ে পড়েন তৃণমূল ও এবিভিপি-র কর্মীরা। এমনকি যে শিব-দুর্গা মন্দিরে গিয়েছিলেন সায়নী ঘোষ, সেখানে পরে জল দিয়ে ধুয়ে পরিষ্কার করে এবিভিপি। আসানসোলের এবিভিপি নেত্রী অনুশ্রী মণ্ডল বলেন, ‘আমরা মনে করেছি উনি হিন্দু দেবদেবীকে অপমান করেছেন। আগেও এরকম অনেক প্রার্থী এসেছিলেন, যাঁদের জেতার পর আর দেখা যায়নি।’


এদিন ইসমাইল এলাকায় প্রচার করতে গিয়ে যার পাল্টা জবাব দেন সায়নী ঘোষ। তিনি বলেন, ‘বিজেপির হাতে কোনও ইস্যু নেই, তাই তারা এই ধরনের বিক্ষিপ্ত ঘটনা ঘটিয়ে প্রচারের আলোয় আসতে চাইছে।’ নিরাপত্তার অভাব, কমিশনে অভিযোগ জানাবেন? এই প্রশ্নের জবাবে সায়নী বলেছেন, ‘আমার দলের কর্মীরাই আমাকে নিরাপদে রেখেছেন।’


অন্যদিকে পশ্চিম বর্ধমানের বিজেপি সভাপতি লক্ষ্মণ ঘড়ুই এই অভিনেত্রীকে আক্রমণ করে বলেন, ‘সায়নী যেভাবে শিব ও শিবলিঙ্গকে অপমান করেছেন, তারই প্রতিবাদ করছেন সাধারণ মানুষ। এর সঙ্গে বিজেপির কোনও সম্পর্ক নেই। হেরে যাবেন, তাই বিজেপির নাম করে চালানোর চেষ্টা করছেন।’


২৬ এপ্রিল, সপ্তম দফায় ভোট হবে আসানসোল দক্ষিণে।


অন্যদিকে, দুর্গাপুর পশ্চিমে ফের প্রকাশ্যে চলে এল তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব। বিশ্বনাথ পাড়িয়ালের নামে দেওয়াল না লেখার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্বের একাংশ। পাল্টা আক্রমণ করেছেন বিশ্বনাথ পাড়িয়াল। তৃণমূলের দ্বন্দ্ব নিয়ে কটাক্ষ করতে ছাড়েনি বিজেপি। 


দুর্গাপুর পশ্চিম কেন্দ্রে বিশ্বনাথ পাড়িয়ালকে প্রার্থী করেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তৃণমূল থেকে কংগ্রেসে গিয়ে ২০১৬-র বিধানসভা ভোটে এই কেন্দ্রে জিতেছিলেন বিশ্বনাথ। ছ’মাসের মধ্যেই ফের তৃণমূলে ফিরে আসেন তিনি। ২১-এর ভোটে বিশ্বানাথের উপরই আস্থা রেখেছেন তৃণমূলনেত্রী। কিন্তু, দুর্গাপুর পশ্চিমের তৃণমূল নেতা-কর্মীদের একাংশের অভিযোগ, দলীয় প্রার্থী তাঁদের সঙ্গে কোনও যোগাযোগ রাখেন না। এরপরই তাঁর সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, ভোটের জন্য দেওয়ালে তৃণমূলের প্রতীক আঁকলেও, কোথাও দলীয় প্রার্থীর নাম তাঁরা লিখবেন না।