সমীরণ পাল, উত্তর ২৪ পরগনা: এবার আমডাঙায় সিপিএমে ভাঙন। বিজেপিতে যোগ দিলেন পঞ্চায়েত সমিতির সদস্য জাকির বল্লুক। পঞ্চায়েত ভোটে ৩ তৃণমূল কর্মী খুনে গ্রেফতার হলেও পরে জামিন পান তিনি। তারপর অর্জুন সিংহের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতায়, বিজেপিতে যোগদানের জল্পনা বাড়ে।
খুনের অভিযোগে, যখন গা ঢাকা দিয়েছিলেন, তখন তাঁকে বিজেপি আশ্রয় দিয়েছিল বলে অভিযোগ করেছিল তৃণমূল। এবার আর কোনও রাখঢাক নয়, সরাসরি গেরুয়া শিবিরের হাত ধরলেন জাকির বল্লুক। তাঁর হাতে দলের পতাকা তুলে দিলেন ব্যারাকপুরের বিজেপি সাংসদ। 
জাকির বল্লুক। উত্তর ২৪ পরগনার আমডাঙা পঞ্চায়েত সমিতির নির্বাচিত সিপিএম সদস্য। এলাকার দাপুটে নেতা। ভোটের মুখে বিজেপিতে যোগ দিলেন একদা সিপিএমের স্ট্রংম্যান। আমডাঙার সদ্য সিপিআইএম ত্যাগী বিজেপি নেতা জাকির বল্লুক জানান, ‘‘আমার সিপিএম নিয়ে কোনো আক্ষেপ নেই। কিন্তু, তৃণমূলকে হঠাতে বিজেপিকে আনা প্রয়োজন। আমার ভাইকে মেরেছে। পঞ্চায়েত আমাদের দখল করতে হবে। না হলে ওঁর আত্মা শান্তি পাবে না। পঞ্চায়েত দখলে আনতে হলে বিজেপিকে দরকার ৷’’
যদিও জাকিরের মন্তব্যকে গুরুত্ব দিতে নারাজ তৃণমূল। আমডাঙার তৃণমূল বিধায়ক রফিকুর রহমান জানান, ‘‘ছোটখাটো নেতা। ওঁর যোগদানে কিছুই হবে না...।’’ অন্যদিকে উত্তর দমদমের সিপিআইএম বিধায়ক তন্ময় ভট্টাচার্য জানান, ‘‘দুর্ভাগ্যজনক ঘটনা। তবে কিছু যায় আসে না।’’
২০১৮ সালের ২৮ অগাস্ট পঞ্চায়েতের বোর্ড গঠনকে কেন্দ্র করে রণক্ষেত্রের চেহারা নেয় আমডাঙার তারাবেড়িয়া পঞ্চায়েত এলাকা ৷ গুলি-বোমার লড়াইয়ে মৃত্যু হয় ৪ জনের। তৃণমূল অভিযোগ করে, সিপিএম নেতা জাকির বল্লুকই কুখ্যাত ‘অপারেশন ব্ল্যাক’-এর নেতৃত্বে ছিলেন! ঘটনার ১৭ দিন পর রাজস্থানের আজমেঢ় শরিফ থেকে জাকির বল্লুককে গ্রেফতার করে পুলিশ ৷ সেসময় তৃণমূলের অভিযোগ তোলে, ভিন রাজ্যে জাকিরকে আশ্রয় দিয়েছিল বিজেপিই। ২০১৯ এর লোকসভা ভোটের আগে জেল থেকে ছাড়া পান জাকির। তারপর থেকেই অর্জুন সিংয়ের সঙ্গে আমডাঙার সিপিএম নেতার যোগাযোগ বাড়তে থাকে। জাকিরের বাড়িতেও যান অর্জুন। তা ঘিরে ক্রমশ বাড়তে থাকে জল্পনা। সেই জল্পনাই সত্যি হল। সংখ্যালঘু অধ্যুষিত আমডাঙায় জাকিরকে সঙ্গী করে বিজেপি ভোটের বৈতরণী পার হতে পারে কিনা, সেটাই এখন দেখার।