মনোজ বন্দ্যোপাধ্যায়, পূর্ব বর্ধমান: পূর্ব বর্ধমানের মানকরে ফের প্রকাশ্যে বিজেপির গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব। আদি বিজেপির নামে দেওয়াল দখল। দলে গুরুত্ব না পেলে অন্য প্রতীকে লড়ার হুঁশিয়ারি কর্মীদের একাংশের। দলের নিয়ম মেনে চলতে হবে, বার্তা বিজেপির জেলা নেতৃত্বের। ঘটনায় কটাক্ষের সুর তৃণমূলের গলায়।


‘আদি’ বিজেপি কর্মী প্রবীর দত্ত প্রবীর দত্ত জানান, ‘‘রাজ্য নেতৃত্ব গুরুত্ব না দিলে এখানে পদ্মফুল ফুটবে না ।নির্বাচন কমিশন যে সিম্বল দেবে সেই প্রতীকে লড়ব ৷’’


 পূর্ব বর্ধমানে  এভাবে ফের প্রকাশ্যে এল আদি ও নব্য বিজেপির সংঘাত! এবার দলে গুরুত্ব না পাওয়ার অভিযোগে সরাসরি বিজেপি ছেড়ে অন্য প্রতীকে লড়ার হুঁশিয়ারি দিলেন বিজেপি কর্মীদের একাংশ। ঘটনাস্থল গলসি ১ নম্বর ব্লকের মানকর এলাকা! রবিবার থেকে সেখানে বিজেপির তরফে দেওয়াল লিখন শুরু হয়। কিন্তু আশ্চর্যের বিষয় দেওয়ালে লেখা নেই কোনও স্লোগান বা প্রার্থীর নাম! বদলে দেওয়াল জুড়ে লেখা রয়েছে ‘আদি বিজেপি’!


বিজেপি কর্মীদের একাংশের অভিযোগ, দলের পুরোনো কর্মীরা গুরুত্ব পাচ্ছেন না।  প্রবীর দত্ত জানান, ‘‘৯৩ সাল থেকে করি, গুরুত্ব পাচ্ছি না, তৃণমূল থেকে আগতরা গুরুত্ব পাচ্ছেন, রাজ্য নেতৃত্ব গুরুত্ব না দিলে পদ্মফুল ফুটবে না, নির্বাচন কমিশন যে সিম্বল দেবে সেই প্রতীকে লড়ব’’।


কর্মীদের একাংশের ক্ষোভের মুখে পাল্টা হুঁশিয়ারি দিয়েছে জেলা বিজেপি নেতৃত্ব। পূর্ব বর্ধমানের বিজেপি সহ সভাপতি কমন শর্মা জানান, ‘‘আমাদের দলের আদর্শ ব্যক্তির চেয়ে দল বড় , দলের চেয়ে দেশ বড়, শ্যামাপ্রসাদের আদর্শ মেনে চলি, আদর্শ মেনে যারা চলবে তারা থাকবে, আগামী দিনে বিজেপি ক্ষমতায় আসবে ৷’’ জেলায় ক্রমাগত বিজেপির অন্তর্দ্বন্দ্ব প্রকাশ্যে চলে আসায় খুশির হাওয়া জোড়াফুল শিবিরে। গলসি ১-এর তৃণমূল ব্লক সভাপতি জনার্দন চট্টোপাধ্যায় জানান, ‘‘ওদের এই লড়াই নতুন নয়, পূর্ব বর্ধমান পশ্চিম বর্ধমান থেকে গোটা রাজ্যে ছড়িয়ে পড়বে ,মমতার আদর্শ নিয়ে চলি,আমরাই জিতব ৷’’ এদিকে মাত্র তিনদিন আগে গলসির ঝাড়ুলে দলীয় পতাকা হাতে রীতিমতো ঢাক-ঢোল বাজিয়ে আদি বিজেপির নামে দেওয়াল দখল করা হয়!!


সম্প্রতি বিজেপির গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের জেরে রণক্ষেত্রের চেহারা নেয় বর্ধমান শহরের ঘোড়দৌড়চটি! পার্টি অফিসে মুহূর্মুহূ ইটবৃষ্টি করা হয়! এমনকী দু’টি গাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। সব মিলিয়ে বিধানসভা ভোটের আগে পূর্ব বর্ধমানে দলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের জেরে অস্বস্তি বাড়ছে গেরুয়া শিবিরের।