ঋত্বিক প্রধান, পূর্ব মেদিনীপুর: বঙ্গ রাজনীতিতে কু-কথার স্রোত। অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের কু-কথার জবাব সেই ভাষাতেই দিয়েছিলেন শুভেন্দু অধিকারী ঘনিষ্ঠ বিজেপি নেতা কণিষ্ক পণ্ডা। এনিয়ে সমালোচনা শুরু হতেই নিজের মন্তব্যের জন্য ক্ষমা চাইলেন বিজেপি নেতা। এই প্রসঙ্গে কটাক্ষ ছুড়ে দিয়েছে তৃণমূল।
গত ৬ ফেব্রুয়ারি ডায়মন্ড হারবারের তৃণমূল সাংসদ এক জনসভায় বলেছিলেন, আয়,তোর বাপকে গিয়ে বল, আমি ৫ কিলোমিটারের মধ্যে এখানে আছি, কী করবি কর।
পরের দিনই শুভেন্দু ঘনিষ্ঠ বিজেপি নেতা বলেছিলেন, ভাইপো তোমায় আমরা বলে রাখি, তোমার পিঠের চামড়া আমরা গুটিয়ে নেব।
একজনের কু-কথার জবাব দিতে গিয়ে সেই ভাষাতেই আক্রমণ শানিয়েছিলেন আরেকজন।
প্রথমজন তৃণমূল যুব কংগ্রেসের রাজ্য সভাপতি তথা ডায়মন্ড হারবারের সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়।আর দ্বিতীয়জন শুভেন্দু ঘনিষ্ঠ বিজেপি নেতা কণিষ্ক পণ্ডা।
ভোটমুখী বাংলায় যেন কু-কথার স্রোত!
কে কত খারাপ ভাষায় একে অপরকে আক্রমণ করতে পারে, তারই যেন প্রতিযোগিতা চলছে।
গত শনিবার কাঁথির সভায় শুভেন্দু অধিকারীকে টার্গেট করতে গিয়ে তীব্র আক্রমণ করেন তৃণমূল সাংসদ। বলেছিলেন, বিশ্বাসঘাতকদের ঝেঁটিয়ে বিদায় করতে হবে...এমন আওয়াজ তুলুন, যাতে শান্তিকুঞ্জ থরথর করে কাঁপে...বাড়িতে একজন বয়স্ক আছেন, তাই বেশি বলছি না।
পরের দিনই এর পাল্টা জবাব দেন শুভেন্দু অধিকার ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত বিজেপি নেতা কণিষ্ক পণ্ডা। তিনি বলেছিলেন, ভাইপো তোমায় আমরা বলে রাখি, তোমার পিঠের চামড়া আমরা গুটিয়ে নেব, আপনার স্ত্রীকে তো আপনার বাবা-মাই মেনে নেননি, আপনার পরিবারকে আগে সামলান, পরে রাজনীতি করবেন।
বিজেপি নেতার এই মন্তব্যের তুমুল সমালোচনা হয় সোশাল মিডিয়ায়। বিতর্কের মুখে পড়ে, তাঁর মন্তব্যের জন্য এবার ক্ষমা চাইলেন বিজেপি নেতা। বললেন, ৭ তারিখ আমি যে কথা তিনি বলেছিলাম তা আবেগের বশে, তারজন্য আন্তরিকভাবে দুঃখিত, রাজনীতি রাজনীতির জায়গায় হোক, কুকথায় নয়।
পূর্ব মেদিনীপুর তৃণমূল কংগ্রেসের কোঅর্ডিনেটর মামুদ হোসেন এর প্রতিক্রিয়ায় বলেছেন, এটা তো জুতো মেরে গরু দান। আন্তরিকভাবে যদি বলে থাকেন তাহলে ঠিক আছে, কিন্তু রাজনীতি করার জন্য যদি একথা বলেন, তাহলে বলব একথা বলা ঠিক হয়নি, আমরাও চাই বাংলার রাজনীতিতে সংস্কৃতি ফিরে আসুক।
ভোটের ময়দানে গরমা-গরম বক্তব্য নতুন কোনও ঘটনা নয়। কিন্তু, একে অপরের বিরুদ্ধে আক্রমণের নামে যে ধরনের মন্তব্য ধেয়ে আসছে, তা ভাষা-সন্ত্রাসেরই নামান্তর, এমনটাই মত পর্যবেক্ষকদের। বদল হোক এই সংস্কৃতির, এমনটাই চায় বঙ্গবাসী।