বিটন চক্রবর্তী, অর্ণব মুখোপাধ্যায় ও সন্দীপ সরকার, কলকাতা: তৃণমূল নেত্রীর নির্বাচনী হলফনামায় ৬টি মামলার কথা উল্লেখ করা হয়নি। তথ্য চাপা দেওয়ার অভিযোগে ব্যবস্থা নেওয়া উচিত কমিশনের। অভিযোগ জানিয়ে কমিশনকে চিঠি দিলেন শুভেন্দু অধিকারীর নির্বাচনী এজেন্ট। ভয় পেয়েছে বিজেপি! মনোনয়ন তরজায় পাল্টা কটাক্ষ করেছে তৃণমূল।
 নন্দীগ্রামের বিজেপি প্রার্থী  শুভেন্দু অধিকারী দাবি করেন, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তাঁর হলফনামায় ৬টা কেসের উল্লেখ করেননি, একটা সিবিআই-এর আর কয়েকটা অসমে, ইলেকশন কমিশনের  মিথ্যে হলফনামা দেওয়ায় ব্যবস্থা নেওয়া উচিত। 


বিধানসভা ভোট ২৯৪টি আসনে। এপিসেন্টার নন্দীগ্রাম। সেখানকার তৃণমূল প্রার্থী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে এবার চাঞ্চল্যকর অভিযোগ তুললেন বিজেপি প্রার্থী শুভেন্দু অধিকারী। 
গত ১০ মার্চ, নন্দীগ্রামের তৃণমূল প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন জমা দেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মনোনয়নে তিনি জানান, তাঁর বিরুদ্ধে কোনও ফৌজদারি মামলা নেই। 
কিন্তু, শুভেন্দু অধিকারীর নির্বাচনী এজেন্টের দাবি, মমতার বিরুদ্ধে ৬টি ফৌজদারি মামলা রয়েছে। এই প্রেক্ষিতে, সোমবার কমিশনে অভিযোগপত্র পাঠান তিনি।দাবি করেন, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রার্থিপদ বাতিল করা হোক!


এদিন এক সভায় শুভেন্দু বলেন, এ জন্যই ওনাকে আমরা মিথ্যাশ্রী বলছি, আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেবে নির্বাচন কমিশন। পাল্টা তৃণমূল সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় দাবি করেন, ওরা ভয় পাচ্ছে, সেজন্য আজ নমিনেশন বাতিলের দাবি জানাচ্ছে।


তবে বেলা গড়াতেই বিতর্ক অন্য দিকে মোড় নেয়! শুভেন্দু শিবিরের অভিযোগপত্রের, ৬ নম্বরে সিবিআইয়ের একটি মামলার কথা উল্লেখ করা হয়।


কিন্তু, সিবিআই সূত্রের দাবি, যে মামলার কথা বলা হয়েছে, তাতে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় অভিযুক্ত নন। ২০০৮ সালে আসানসোলে এক কেন্দ্রীয় সরকারি কর্মীর বিরুদ্ধে বেনামী সম্পত্তি সংক্রান্ত মামলা হয়। সেই মামলায় অভিযুক্ত কেন্দ্রীয় সরকারি কর্মীর স্ত্রী-র নাম মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। পরে তাঁর নাম তোলা হয় চার্জশিটে। 
এই তথ্য সামনে আসার পর তৃণমূল কংগ্রেসের মুখপাত্র কুণাল ঘোষ বলেন, এইভাবে মমতাকে রোখার চেষ্টা হলে,  ২৯১টি পাবে তৃণমূল।


এদিকে নির্বাচন কমিশন সূত্রের খবর, মনোনয়নপত্রের সঙ্গে সম্পত্তি এবং ফৌজদারি মামলার সংক্রান্ত তথ্য, হলফনামার আকারে জমা দিতে হয় প্রার্থীকে। তবে সেই হলফনামায় উল্লেখ করা তথ্যের সত্যতা যাচাইয়ের দায়িত্ব রিটার্নিং অফিসারের নয়। যিনি অভিযোগ করছেন, তাঁকে কাউন্টার এফিডেভিট দিতে হয় রিটার্নিং অফিসারের কাছে। সেই এফিডেফিট ওয়েবসাইটে তুলে দেওয়া হয়। তবে এক্ষেত্রে মনোনয়ন বাতিল হওয়ার কোনও সম্ভাবনা নেই। 


নন্দীগ্রামে আসল যুদ্ধর আগে, এখন মনোনয়ন পত্র ঘিরে নতুন বিতর্ক।