পশ্চিমবঙ্গে বেজে গিয়েছে ভোটের বিউগল।  আনুষ্ঠানিকভাবে ভোটযুদ্ধের ঘোষণা হয়ে গিয়েছে। ২৭ মার্চ রাজ্যে শুরু হচ্ছে বিধানসভা ভোট। এক মাস ধরে ৮ দফায় হবে ভোটগ্রহণ। শেষ হচ্ছে ২৯ এপ্রিল। ফল ঘোষণা হবে ২ মে।


এই প্রেক্ষিতে, দেখে নেওয়া যাক, বিগত বিধানসভা ভোটের ফলাফল। আজ এখানে আমরা ফিরে দেখব ২০১১ সালে হওয়া পঞ্চদশ পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভা নির্বাচন।


২০১১ বিধানসভা নির্বাচন রাজ্য রাজনীতির ইতিহাসে স্মরণীয় একটা অধ্যায় হয়ে রয়েছে। এই নির্বাচনেই পশ্চিমবঙ্গে ৩৪ বছরের বাম শাসনের অবসান ঘটেছিল। উত্থান হয় তৃণমূল কংগ্রেস জমানার। মুখ্যমন্ত্রী হন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।


আর এই পরিবর্তনের বীজ বপন হয়েছিল সিঙ্গুর-নন্দীগ্রামের ভূমিতে। তৎকালীন বিরোধী দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে হওয়া এই দুই আন্দোলনই ২০১১ ভোটের ভাগ্য গড়ে দিয়েছিল অনেকটা।


১৮ এপ্রিল থেকে শুরু হয়ে ১০ মে --- মোট ৬ দফায় হয়েছিল ২০১১ সালের ভোটগ্রহণ। সেই সময় মুখ্য নির্বাচন কমিশনার ছিলেন এস ওয়াই কুরেশি। 


১৩ মে ফলাফল ঘোষণা হয়। একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে বামেদের সরিয়ে বিধানসভায় ক্ষমতা দখল করে তৃণমূল। পতন হয়েছিল বিশ্বের সবচেয়ে দীর্ঘমেয়াদী গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত কমিউনিস্ট-শাসিত সরকারের। যে কারণে, আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমে নজর কেড়েছিল ২০১১ বিধানসভা নির্বাচন।


আরও পড়ুন:


WB Election: রেকর্ড সপ্তমবার ক্ষমতা দখল করেছিল বামেরা -- ফিরে দেখা ২০০৬


এক নজরে দেখে নেওয়া যাক, দফা অনুযায়ী ভোটগ্রহণের বিন্যাস--


তারিখ        দফা           আসন


১৮ এপ্রিল     ১              ৫৪
২২ এপ্রিল    ২              ৫০
২৭ এপ্রিল    ৩              ৭৫
৩ মে           ৪             ৬৩
৭ মে           ৫             ৩৮
১০ মে         ৬             ১৪


২০১১ বিধানসভা নির্বাচনে জোট বেঁধে বামেদের বিরুদ্ধে লড়াই করেছিল কংগ্রেস ও তৃণমূল। অন্যদিকে, বিজেপি-নেতৃত্বাধীন এনডিএ জোটও ভোটের লড়াইয়ে নেমেছিল।


এবার নজরে দেওয়া যাক ফলাফলের দিকে--


বিধানসভায় মোট আসন সংখ্যা ২৯৪। বামফ্রন্ট পেয়েছিল মাত্র ৬২টি। ২০০৬ সালে বামেদের দখলে ছিল ২৩৩টি। 


কংগ্রেস-তৃণমূল জোট পেয়েছিল ২২৭টি আসন। এরমধ্যে একা তৃণমূল পেয়েছিল ১৮৪টি। ২০০৬ সালে এই সংখ্যাটি ছিল ৩০।  ২০০৬ সালের তুলনায় ১৫৪ আসন বেশি জিতেছিল ঘাসফুল শিবির। 


কংগ্রেসও লাভবান হয়েছিল। ২০০৬ সালের তুলনায় ২১টি বেশি পেয়ে মোট ৪২টি আসন জিতেছিল হাত শিবির। 


বিজেপি ও গোর্খা জনমুক্তি মোর্চা জোট পেয়েছিল ৩টি আসন। যদিও, এই তিনটিই পেয়েছিল মোর্চা। ২০০৬ সালে এই শিবিরের দখলে ছিল ২৪টি আসন। 


পাঁচ বছর পর ২০১৬ সালে একা লড়াই করে তৃণমূল। অন্যদিকে, কংগ্রেসের হাত ধরে লড়াই চালায় বামফ্রন্ট। কিন্তু, ফল বের হতেই ফের জোড়াফুলের জয়জয়কার। ২০০-রও বেশি আসন নিয়ে ক্ষমতায় ফেরে তৃণমূল। ফের মুখ্যমন্ত্রী হন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। 


ফের একটা বিধানসভা নির্বাচন রাজ্যের দোরগোড়ায়। এবার কী হবে? মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের হ্যাটট্রিক না গেরুয়া-যুগের পত্তন? অপেক্ষায় রাজ্যবাসী...