আশাবুল হোসেন, সুমন ঘড়াই, দীপক ঘোষ, কলকাতা:  বিধানসভা ভোটে বাংলায় তৃণমূলকেই সমর্থন করবে আরজেডি। নবান্নে মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক করে জানিয়ে দিলেন আরজেডি নেতা তেজস্বী যাদব। তৃণমূলকে সমর্থন করার কথা ঘোষণা করেছেন সমাজবাদী পার্টিও। সমর্থন জানিয়ে চিঠি দিয়েছে এনসিপি-ও।


 সমাজবাদী পার্টির সভাপতি তথা উত্তরপ্রদেশের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী অখিলেশ যাদব বলেছেন, আমার সমর্থকদের বলব, মমতাকে সমর্থন করুন। ফের সরকারে ক্ষমতায় নিয়ে আসুন।


তেজস্বী যাদব  বললেন, পুরো শক্তি দিয়ে মমতাকে জেতাব, এটাই আমার অগ্রাধিকার।


বিধানসভা ভোটের আগে, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে সমর্থনের কথা জানালেন সমাজবাদী পার্টির সভাপতি অখিলেশ যাদব এবং আরজেডি নেতা তেজস্বী যাদব। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পাশে থাকার বার্তা দিয়েছে শরদ পওয়ারের দল এনসিপি-ও।


এর মধ্যে তেজস্বী যাদব কয়েকমাস আগেই বিহার ভোটে বিজেপির মুখোমুখি হন। লালু-পুত্রের নেতৃত্বে বিহারে বৃহত্তম দল হিসেবে উঠে আসে আরজেডি। কিন্তু, কাঁটায় কাঁটায় টক্করে জেতে বিজেপি-জেডিইউ জোট। সোমবার নবান্নে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে বৈঠক করে পূর্ণ শক্তি দিয়ে তাঁকে সমর্থন করবেন বলে জানান তেজস্বী।


 


তেজস্বী যাদব বললেন, আমাদের রাষ্ট্রীয় অধ্যক্ষের নির্দেশ, মমতাকে পূর্ণ সমর্থন করতে হবে। বাংলায় আমাদের যা ক্ষমতা, যত বিহারী আছে, আমাদের যা ক্ষমতা আছে, মমতার সঙ্গে থাকবে। আমাদের প্রথম কাজ বিজেপিকে এখানে আটকানো।


মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়  বলেছেন, তেজস্বী বিহারের বড় কাজ করেছেন, ওরই জেতার কথা ছিল, কিন্তু ষড়যন্ত্র করে ওকে জিততে দেয়নি। লালুজিকে বুঝেশুনে বের হতে দেননি, কারণ উনি বেরোলে জিততে পারত না। আমরা লড়লে তেজস্বী আছে, তেজস্বী লড়লে আমরা আছি। বিহারেও বিজেপির সরকার টিকবে না, আর বাংলাতেও বিজেপি কিছু পাবে না।


বিজেপি আবার এনিয়ে কটাক্ষ ছুড়ে দিয়েছে।


পশ্চিমবঙ্গে আট দফায় ভোট নিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের অবস্থানকে সমর্থন করে, বিভিন্ন ব্যাপারে তৃণমূলনেত্রীকে সতর্ক থাকার পরামর্শ দিয়েছেন সমাজবাদী পার্টির সভাপতি অখিলেশ যাদব। তিনি বলেছেন, মমতার সঙ্গে সহমত, বিজেপির রণনীতি হল বেশি দফায় ভোট করে বেশি করে অশান্তি পাকানো। দিল্লির সরকার ও ফোর্সকে কাজে লাগানো। বুথে আপনার এজেন্টকে ঢুকতে দেবে না। মমতাকে আমার পরামর্শ, যেখানেই এজেন্টকে বের করে দেওয়া হবে, বুঝবেন সেখানে ধোঁকা খাবেন।


 


বিশেষজ্ঞরা বলছেন,রাজ্যের ২৯৪টি বিধানসভা আসনের অন্তত ৭০টি আসনে হিন্দিভাষীদের আধিপত্য। ২০১১-র জনগণনা অনুযায়ী রাজ্যে প্রায় ৬৪ লক্ষ হিন্দভাষী ভোটার আছে।শেষ জনগণনা অনুযায়ী, কলকাতায় অবাঙালি ভোটারের সংখ্যা প্রায় ৫১ শতাংশ।


এরাজ্যে ২৫ শতাংশের বেশি বিহারি-সহ অবাঙালি ভাষাভাষী ভোটার রয়েছেন, এমন ১০টি লোকসভা কেন্দ্রের মধ্যে গত লোকসভা ভোটে ছ’টিতে জিতেছে বিজেপি।


এই প্রেক্ষাপটে অখিলেশ ও তেজস্বীর মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রতি সমর্থনের বার্তা অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। যদিও, বিজেপি এই বিষয়টিতে গুরুত্ব দিতে নারাজ।


২০১৯-এর লোকসভা ভোটের আগে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উদ্যোগে বিরোধীদের ব্রিগেড সমাবেশেও উপস্থিত ছিলেন অখিলেশ যাদব, তেজস্বী যাদব এবং শরদ পওয়ার।


কিন্তু, দেশে মোদি-ঝড়ের সামনে বিরোধী জোট দাঁড়াতে পারেনি। এবার বিধানসভা ভোটে বিজেপির বিরুদ্ধে লড়াইয়ে, অখিলেশ, তেজস্বী, শরদ পওয়ারের সমর্থন কি তৃণমূলকে কোনও সাহায্য করবে? সেই উত্তর দেবে সময়।