উজ্জ্বল মুখোপাধ্যায়, দীপক ঘোষ ও আশাবুল হোসেন,কলকাতা:  প্রথম দফার ভোটে মনোনয়ন পেশের সময়সীমা শেষ হতে বাকি আর এক সপ্তাহ। কিন্তু, বাম-কংগ্রেস-আইএসএফ জোটের জট এখনও কাটল না।রবিবারের ব্রিগেড সমাবেশ থেকে কংগ্রেসের বিরুদ্ধে সুর চড়িয়েছিলেন আব্বাস সিদ্দিকি।  মঞ্চ থেকে নেমে এসেও বলেছিলেন,সনিয়া গাঁধী রাজি।এখান থেকে ঢিলেমি করছে।


সোমবারও ফের সেই সুরই শোনা গেছে আব্বাসের গলায়। তাঁর বিস্ফোরক অভিযোগ, মোদি-দিদি দুজনের সঙ্গেই যোগাযোগ রাখছেন কংগ্রেসের এক নেতা। ভোটের পর উঁচু পদের বিনিময়ে তৃণমূলকে সমর্থন করবে কংগ্রেস।


 


কংগ্রেস সাংসদ প্রদীপ ভট্টাচার্য এর জবাবে বলেছেন, বাজে কথা বলছেন আব্বাস।


এদিকে আইএসএফ-এর সঙ্গে জোট প্রসঙ্গে কংগ্রেসের অন্দরে কার্যত দ্বন্দ্বের সুর। সোমবার কংগ্রেস সাংসদ আনন্দ শর্মা ট্যুইট করে বলেন, আইএসএফ-এর মতো দলের সঙ্গে জোট, কংগ্রেসের মূল নীতি ও আদর্শের বিরোধী। গাঁধী ও নেহরুর ধর্মনিরপেক্ষ মতবাদের সঙ্গে খাপ খায় না। এধরনের বিষয়ে কংগ্রেস ওয়ার্কিং কমিটির ছাড়পত্র নেওয়া উচিত ছিল।সাম্প্রদায়িকতার বিরুদ্ধে লড়াইয়ে বাছবিচারের প্রশ্ন নেই। কংগ্রেসকে সবধরনের সাম্প্রদায়িকতার বিরুদ্ধে লড়তে হবে। এই ব্যাপারে প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতির অবস্থান যন্ত্রণাদায়ক এবং লজ্জাজনক! বিষয়টি স্পষ্ট করা উচিত!


প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী এ ব্যাপারে বলেছেন, আমি বিনা অনুমতিতে এই সিদ্ধান্ত নিইনি।


 


একদিকে, আইএসএফ-কে নিয়ে কংগ্রেসের অন্দরে টানাপোড়েন, অন্যদিকে, আসন সমঝোতা নিয়ে তিন পক্ষের অবিরাম দড়ি টানাটানি চলছে।সোমবার ৪ ঘণ্টার ম্যারাথন বৈঠকের পরেও জোট ঘিরে থেকে গেছে অনেক প্রশ্নচিহ্ন!


যদিও, বাম-কংগ্রেস দু’পক্ষই আশাবাদী, জটিলতা তাড়াতাড়ি কেটে যাবে। অধীর বলেছেন, রকেট বেগে সবটা করে ওঠা যাচ্ছে না, তবে আমরা ৯২টি আসন আমরা সুরক্ষিত করতে পেরেছি, তবে এর মধ্যেও কিছু রদবদলের প্রস্তাব দিয়েছে।


 


বামফ্রন্ট চেয়ারম্যান বিমান বসু বলেছেন, আইএসএফ-এর সঙ্গে কথা হচ্ছে, আসন বন্টন নিয়ে  কিছু  কথা হয়েছে। বাম শরিকদের সঙ্গে আলোচনা করে সব নিষ্পত্তি করা যাবে, আব্বাসের সঙ্গে কথা বলে এমনটাই মনে হয়েছে।


 


সূত্রের খবর,১১০টি আসনের কমে নামতে নারাজ কংগ্রেস। বামেরা আইএসএফ-কে ৩০টি আসন ছাড়লেও, কংগ্রেস তাদের কোটা থেকে ১৫টি আসন ছাড়তে নারাজ।


মালদা, মুর্শিদাবাদ এবং উত্তর দিনাজপুরের মতো জেলায় প্রতিনিধিত্ব চায় আইএসএফ। কিন্তু ওই ৩ জেলায় কংগ্রেস তাদের কোটা থেকে একটি আসনও আইএসএফ-কে ছাড়তে রাজি নয়।


এই প্রেক্ষাপটে আব্বাস সিদ্দিকির আইএসএফ-এর সঙ্গে জোট করা নিয়ে সিপিএম-কংগ্রেসকে নিশানা করেছে তৃণমূল-বিজেপি।


 


বিজেপি রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষের কটাক্ষ, জনাব বিমান বসু, কমরেড অধীর চৌধুরী,এটা ভাল করছেন না।


 


পঞ্চায়েতমন্ত্রী তথা তৃণমূল নেতা সুব্রত মুখোপাধ্যায় বলেছেন, একটা মিথ ছিল, কংগ্রেস-সিপিএম জাতপাতের উর্ধেব রাজনীতি করে, কিন্তু কাল ব্রিগেডে এটা প্রতিষ্ঠিত হয়ে গেল, ওরা জাতপাতের রাজনীতি করে।


২০১৯-এর লোকসভা ভোটে শেষ মুহূর্তে ভেস্তে গেছিল বাম-কংগ্রেস জোট। বিধানসভা ভোটের আগে তারা কতদিনে রফাসূত্রে পৌঁছোয়, সেদিকেই নজর সকলের।