কলকাতা: 'সায়নী বলে একটি মেয়ে, ফিল্মে কাজ করে, তাকে ধমকাচ্ছে বিজেপি! বাংলাতে ধমকালে লিউকোপ্লাস্টার দিয়ে মুখ বন্ধ করে দেবে বাংলার মানুষ। ক্ষমতা থাকলে সায়নীর গায়ে হাত দিয়ে দেখাক। ক্ষমতা থাকলে টলিউডের গায়ে হাত দিয়ে দেখাক....' ঠিক এই ভাষাতেই আজ পুরুলিয়ার সভা থেকে সায়নী-তথাগত বিতর্কে নিজের অবস্থান স্পষ্ট করে দিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

সায়নী এবং প্রবীণ বিজেপি নেতা তথা অসম ও ত্রিপুরার প্রাক্তন রাজ্যপালের টুইট যুদ্ধ এবং আইনি লড়াই নিয়ে আড়াআড়ি বিভক্ত বাংলার রাজনৈতিক এবং শিল্পীমহল। এমন পরিস্থিতিতে নায়িকার বাক স্বাধীনতার পক্ষেই সওয়াল করতে দেখে গেল মুখ্যমন্ত্রীকে।

সোমবার বীরভূমের হুটমুড়ায় শতাব্দী রায়কে নিয়ে সভা করেন মমতা। সেখানেই বিজেপি-কে তীব্র আক্রমণ করে তিনি বলেন, ‘‘সায়নী বলে একটা মেয়ে ফিল্মে কাজ করে। তাকে ধমকানো হচ্ছে। চমকানো হচ্ছে। আজ সকালেও শুনলাম তাকে ধমকাচ্ছে বিজেপি। এত বড় ক্ষমতা ওদের! ’’



সমস্ত ধমকানো-চমকানো বিজেপি অন্য রাজ্যের জন্য তুলে রাখুক, বাংলায় এ সব চলবে না বলেও গেরুয়া শিবিরকে হুঁশিয়ারি দেন মমতা। তিনি বলেন, ‘‘দিল্লিতে গিয়ে ধমকাও, উত্তরপ্রদেশে গিয়ে ধমকাও, বিহারে গিয়ে ধমকাও। বাংলায় ধমকানোর আশা আসে কোত্থেকে? এখানে ধমকালে বাংলার মানুষ লিউকোপ্লাস্টার দিয়ে মুখ বন্ধ করে দেবে। অত সহজ নয়। ক্ষমতা থাকলে সায়নীর গায়ে হাত দিয়ে দেখাও, ক্ষমতা থাকলে টলিউডের গায়ে হাত দিয়ে দেখাও, ক্ষমতা থাকলে বাংলার সংস্কৃতিপ্রেমী মানুষের গায়ে হাত দিয়ে দেখাও।’’

নাম না করে তথাগতকেও একহাত নেন মমতা। তাঁর কথায়, ‘‘নাতনির বয়সি মেয়েকে প্রতিদিন হুমকি দিচ্ছে। কেন? তার কি স্বাধীন ভাবে কথা বলার অধিকার নেই?’’

ধর্মীয় স্লোগান নিয়ে সম্প্রতি টুইটারে তথাগতর সঙ্গে বাদানুবাদে জড়িয়ে পড়েন সায়নী। তাতে নায়িকার টুইটার হ্যান্ডল থেকে পোস্ট হওয়া ৫ বছর পুরনো একটি গ্রাফিক তুলে আনেন তথাগত, যাতে শিবলিঙ্গে কন্ডোম পরাতে দেখা যায় এক মহিলাকে। গ্রাফিকে বর্ণিত ওই মহিলাকে এডস সচেতনতার বিজ্ঞাপনের ম্যাসকট ‘বুলাদি’ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছিল। তাতে লেখা ছিল, ‘বুলাদির শিবরাত্রি’। গ্রাফিকের ক্যাপশনে লেখা ছিল, ‘ঈশ্বর এর থেকে বেশি কার্যকরী হতে পারেন না’।

৫ বছর আগের ওই পোস্ট তাঁর ধর্মীয় ভাবাবেগে আঘাত হেনেছে বলে এর পর দাবি করতে শুরু করেন। এমনকি রবীন্দ্র সরোবর থানায় সায়নীর বিরুদ্ধে অভিযোগও দায়ের করেন। দাবি করেন, সায়নীর ওই পোস্ট হিন্দু ধর্মের পবিত্রতা নষ্ট করেছে। সায়নী যদিও দাবি করেন, তাঁর টুইটার হ্যান্ডল হ্যাক করে অন্য কেউ ওই গ্রাফিকটি পোস্ট করেন। পরে সেটি সরিয়েও নেন তিনি।