শুভেন্দু ভট্টাচার্য, কোচবিহার: ভোটের মুখে কোচবিহারে প্রকাশ্যে এল তৃণমূলের অন্দরের ক্ষোভ। জেলার ৯টি বিধানসভা আসনের মধ্যে একটিতেও সংখ্যালঘু প্রার্থী না থাকায় ক্ষোভ উগরে দিলেন জেলা তৃণমূলের সাধারণ সম্পাদক। গতকাল ইমাম-মোয়াজ্জেমদের সভায়  তাঁকে প্রার্থী করার দাবি ওঠে।  যদিও তৃণমূলের জেলা নেতৃত্বের দাবি, আলোচনার মাধ্যমে সমস্যা মিটে যাবে। এ নিয়ে কটাক্ষ করতে ছাড়েনি বিজেপি।


 


তৃণমূলে প্রার্থী তালিকা ঘোষণা হওয়ার পর টিকিট না পেয়ে, মঙ্গলবারই একাধিক বিধায়ক ক্ষুব্ধ হয়ে বিজেপিতে যোগ দিয়েছেন! প্রার্থী তালিকা নিয়ে অসন্তোষের সুর কোচবিহারেও! দলের বিরুদ্ধে প্রকাশ্যে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন কোচবিহারে তৃণমূলের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল জলিল আহমেদ। তাঁর ক্ষোভের কারণ,  কোচবিহারের ৯টি বিধানসভা আসনে এবার তৃণমূলের একজনও সংখ্যালঘু প্রার্থী নেই। জেলায় তফশিলিদের জন্য সংরক্ষিত ৫ আসনে তফশিলি প্রার্থী দিয়েছে তৃণমূল। বাকি ৪ আসনে সংখ্যালঘু প্রার্থী নেই।  যে জেলায় সংখ্যালঘু ভোটারের সংখ্যা ২৫ শতাংশের বেশি, সেখানে সংখ্যালঘু প্রার্থী না থাকায়  জেলা তৃণমূলের অন্দরের ক্ষোভ প্রকাশ্যে এসেছে। রবিবার কোচবিহারের ইমাম মোয়াজ্জেম সংগঠনের সঙ্গে এক সভায় জলিলকে প্রার্থী করার দাবি ওঠে। 


 


সারা বাংলা ইমাম-মোয়াজ্জেম কাউন্সিলের সম্পাদক মহম্মদ মহসিন আলি জানান, ‘‘এত বছর ধরে একটা লোক পার্টি করছে।  জেলার একনম্বর সংখ্যালঘু মুখ...সেই আব্দুল জলিল আহমেদ একটা টিকিট পাওয়ার যোগ্য নন!’’


 


কোচবিহারের তৃণমূল কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল জলিল আহমেদ জানান, ‘‘রাজ্য নেতৃত্বে যেভাবে প্রার্থী তালিকা তৈরি করেছে তাতে সংখ্যালঘুদের মধ্যে ক্ষোভ ছড়িয়েছে।  আগামী ১৪ মার্চ মোয়াজ্জেম কাউন্সিল বৈঠক ডেকেছে।  আমিও থাকব। এরা দলের সমর্থক।  তাদের দাবিদাওয়া থাকতেই পারে । প্রার্থী না করলেও অনেক কিছুই করা যায়।  সংখ্যালঘু ভোটের দরকার আছে কি না, তা দেখতে চাই।’’


 


জেলা তৃণমূল সভাপতির অবশ্য দাবি, প্রার্থী তালিকা নিয়ে না কি কোনও সমস্যা নেই। কোচবিহারের তৃণমূল কংগ্রেসের সভাপতি পার্থপ্রতিম রায় জানান, অ্যাঅ্যাআব্দুল জলিল সাহেবের সঙ্গে আমার কথা হয়েছে।  কোনও সমস্যা নেই। সব সমস্যা মিটে যাবে।’’


 


বিজেপি এখনও কোচবিহারের প্রার্থী তালিকা ঘোষণা করেনি। তৃণমূলের অন্দরে এই ক্ষোভ নিয়ে তাদের গলায় কটাক্ষের সুর। কোচবিহারের বিজেপির সাধারণ সম্পাদক সঞ্জয় চক্রবর্তী জানান, ‘‘আমরা অনেকবার বলেছি, তৃণমূল সংখ্যালঘু মানুষের জন্য কোনও কাজ করে না ।  এতদিনে সংখ্যালঘুরা তা বুঝেছেন।  সত্যিই তারা বুঝতে পেরেছেন,  নাকি বিশেষ কাউকে প্রার্থী করার জন্য চাপ দিচ্ছেন, তা দেখতে হবে।’’


 


২০১৬-র বিধানসভা নির্বাচনে তুফানগঞ্জ কেন্দ্রে জয়ী হয়েছিলেন তৃণমূলের ফজলে করিম মিঞা। তিনিই ছিলেন কোচবিহারে তৃণমূলের একমাত্র সংখ্যালঘু বিধায়ক। এবার তিনি টিকিট পাননি।  জেলা তৃণমূল সূত্রে খবর, কোচবিহার দক্ষিণ আসনের দাবিদার ছিলেন আব্দুল জলিল আহমেদ। এই কেন্দ্রে এবার তৃণমূল প্রার্থী করেছে জেলা যুব তৃণমূল সভাপতি অভিজিত্‍ দে ভৌমিককে। আগামী ১০ এপ্রিল কোচবিহার জেলার সবকটি আসনে ভোট।