কাঁথি: ‘আমরা সবাই এই ভারতভূমির সন্তান। এই ভারতে কেউ বহিরাগত নয়।’ কাঁথির সভা থেকে এই কথাই বললেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। 


এদিন পূর্ব মেদিনীপুরের কাঁথিতে জনসভা করেন প্রধানমন্ত্রী। সেখানে তৃণমূল কংগ্রেসের তোলা বহিরাগত-তত্ত্বের সমালোচনা করেন তিনি। বলেন, ‘রবি ঠাকুর, বঙ্গিমের বাংলায় বহিরাগতদের কথা বলছেন মমতা। আমরা সবাই এই ভারতভূমির সন্তান। এই ভারতে কেউ বহিরাগত নয়। এখানে কোনও ভারতবাসী বহিরাগত নয়।’


তৃণমূল জমানায় রাজ্যের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়েও আক্রমণ করেন মোদি। বলেন, ‘দিদির শাসনে বোমা, বন্দুক, বিস্ফোরণের শুব্দই শুনতে পাওয়া যায়। এই ছবি বদলাতে পারে শুধু বিজেপিই।’


মোদি জানান, ‘স্বাধীনতার লড়াইয়ে বাংলার অবদান অনেক। সেই অবদানের স্বীকৃতি দেওয়া বিজেপির দায়িত্ব।’ প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘বাংলায় আজ আসল পরিবর্তন জরুরি। বাংলার প্রত্যেক বাড়ি থেকে একটাই আওয়াজ আসছে। ২ মে দিদি যাচ্ছে, আসল পরিবর্তন আসছে।’


এই নির্বাচনে বিজেপিকে আক্রমণ করতে তৃণমূলের অন্যতম হাতিয়ার হয়েছে খেলা হবে স্লোগান। এদিন সেই বিষয়টিকেও কটাক্ষ করেন মোদি। বলেন,  ‘আপনি খেলুন, আমরা সেবা করব।’ তিনি যোগ করেন, ‘বিজেপির একটাই মন্ত্র, গরিবের বাড়ি, গরিবের সম্মান। দিদি একের পর এক মিথ্যে অভিযোগ করে বেড়াচ্ছেন। নন্দীগ্রামের মানুষকে অপমান করছেন দিদি। নন্দীগ্রামের মানুষ এই অপমানের জবাব দেবেন। আমাদের স্বপ্ন, আমাদের সঙ্কল্প সোনার বাংলা গড়া। 


তৃণমূলের দুয়ারে সরকার প্রকল্পকেও কটাক্ষ করেন মোদি। বলেন, ‘আগে দেখা পাওয়া যেত না, এখন সরকার দুয়ারে দুয়ারে যাচ্ছে। আপনার খেলা ধরা পড়ে গেছে। ২ মে মমতাকে দরজা দেখাবে বাংলার মানুষ। বাংলার মানুষ আপনার কুশাসনের জবাব দিতে তৈরি। মা-বোনেরা তৃণমূলকে সাজা দিতে তৈরি।’


দুর্নীতি ও সিন্ডিকেট নিয়ে রাজ্যকে আক্রমণ করেন মোদি। বলেন, ‘বাংলায় দিদি আপনাদের কোনও হিসেব দিচ্ছেন না। কেউ হিসেব চাইলেই গালি দিচ্ছেন দিদি। দিদি এখন মেদিনীপুরে এসে অজুহাত দিচ্ছেন। আমফানে ক্ষতিগ্রস্তদের জবাব দিতে পারেননি দিদি। ভাইপো উইন্ডোয় কাটমানির টাকা ঢুকে গেছে। বাংলা জানতে চায়, গরিবদের চাল কে লুঠ করেছে।’


মোদির দাবি, তৃণমূল সরকারের জন্যই বাংলার কৃষকরা কেন্দ্রের সুযোগ-সুবিধা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। বলেন, ‘বাংলার কৃষকরা দিদির নির্মমতা ভুলতে পারবেন না। পিএম কিষাণ প্রকল্পের টাকা আসতে দেননি দিদি। বাংলার কৃষকদের সঙ্গে শত্রুতা করেছেন দিদি। তাঁর আশ্বাস, ‘বিজেপি সরকার গড়লেই, ৩ বছরের বকেয়া টাকা পাবেন কৃষকরা।’


মোদির দাবি, ‘বাংলার বিকাশ বিজেপির সঙ্কল্প। বাংলা চায় শিক্ষা, শিল্প, কর্মসংস্থান, নারী সুরক্ষা, কৃষক সম্মান। বাংলায় দরকার বিজেপি সরকার। বিজেপি সব স্কিমকে স্ক্যাম থেকে মুক্ত করবে। কাটমানি নয়, বিজেপি সরাসরি ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে টাকা জমা দেবে।’


সিন্ডিকেটরাজ মেদিনীপুরকে নষ্ট করে দিয়েছে অভিযোগ তুলে মোদি দাবি করেন, ‘বিজেপি রাতারাতি তোলাবাজি শেষ করবে। হলদিয়ার হারানো গৌরব ফেরাবে বিজেপি। বাংলায় ডবল ইঞ্জিন সরকার হবে, সুফল পাবেন মেদিনীপুরের মানুষ।’


তিনি যোগ করেন, ‘জনতার আওয়াজ শুনেই বিজেপির ইস্তেহার তৈরি হয়েছে। দেশের আত্মনির্ভরতার অন্যতম ভরকেন্দ্র মেদিনীপুর। দিদির সরকার আধুনিক কোল্ড স্টোরেজ, ফুড প্রসেসিংয়ের সুবিধে দেয়নি। লোকালের জন্য ভোকাল, এটাই আমাদের সঙ্কল্প।’