মনোজ বন্দ্যোপাধ্যায়, পশ্চিম বর্ধমান: দুর্গাপুর পশ্চিমের বিজেপি প্রার্থীর বিরুদ্ধে দলের অন্দরে অসন্তোষ। বিজেপিরই এক নেত্রীকে নির্দল হিসেবে দাঁড় করালেন বিক্ষুব্ধ বিজেপি কর্মীদের একাংশ। অন্যদিক, প্রার্থী না করায়, এই কেন্দ্র থেকেই নির্দল হিসেবে মনোনয়ন দিলেন কংগ্রেস নেতা।


প্রার্থী না-পসন্দ। তাই নির্দল প্রার্থী দাঁড় করিয়ে, তাঁকে সমর্থনের ভাবনা বিজেপির একাংশের। অন্যদিকে, প্রার্থী না করায়, নির্দল হিসেবে মনোনয়ন জমা দিলেন কংগ্রেস নেতা। দুই ঘটনাকে কেন্দ্র করে, পশ্চিম বর্ধমানে প্রকাশ্যে চলে এল গেরুয়া শিবির ও কংগ্রেসের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব। দুর্গাপুর পশ্চিম বিধানসভা কেন্দ্র থেকে বিজেপির জেলা সভাপতি, লক্ষ্মণ ঘোড়ুইকে প্রার্থী করেছে দলীয় নেতৃত্ব। কিন্তু, লক্ষ্মণ ঘোড়ুইকে নিয়ে দলের অন্দরেই দেখা দিয়েছে অসন্তোষ।


বিজেপি কর্মীদের একাংশের অভিযোগ, তোলাবাজি সহ একাধিক দুর্নীতিতে জড়িত লক্ষ্মণ ঘোড়ুই। তাই তাঁকে প্রার্থী হিসেবে মেনে নিতে পারছেন না দলের অনেক কর্মী। এই পরিস্থিতিতে, একদা লক্ষ্মণের ছায়াসঙ্গী, বিজেপির মহিলা মোর্চার রাজ্য কমিটির সদস্য চন্দ্রমল্লিকা বন্দ্যোপাধ্যায়কে নির্দল হিসেবে দাঁড় করিয়েছে বিজেপি কর্মীদের একাংশ। দুর্গাপুর পশ্চিমের নির্দল প্রার্থী  চন্দ্রমল্লিকা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘নোংরা চরিত্রের লোক। সব প্রমাণ আমার কাছে আছে। কোর্টে প্রমাণ করতে পারি এরকম লোক বিজেপির মুখ হতে পারে না ৷’’


দুর্গাপুর পশ্চিমের বিজেপি প্রার্থী লক্ষ্মণ ঘোড়ুই বলেন, ‘‘অনেকেই ক্যান্ডিডেট হতে চায়। দল আমায় নির্দেশ দিয়েছে। উনি রাজ্য কমিটিতে রয়েছেন।’’ বিজেপির গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব নিয়ে কটাক্ষ করতে ছাড়েনি তৃণমূল। দুর্গাপুর পশ্চিমের তৃণমূল প্রার্থী বিশ্বনাথ পাড়িয়াল জানান, ‘‘অন্যায়ের প্রতিবাদ। ওদের দলের অভ্যন্তরেই অন্যায়। মানুষ বিচার করবে ৷’’


অন্যদিকে, দুর্গাপুর পশ্চিম কেন্দ্র থেকে, সংযুক্ত মোর্চার সমর্থনে, জেলা সভাপতি দেবেশ চক্রবর্তীকে প্রার্থী করেছে কংগ্রেস। তাতে ক্ষুব্ধ, প্রদেশ কংগ্রেস কমিটির সদস্য স্বপন বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর দাবি, ২০১৬ ও ২০২১ দুবছরই তাঁকে প্রার্থী করার প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়। কিন্তু, গত বিধানসভায় বিশ্বনাথ পাড়িয়ালকে প্রার্থী করে কংগ্রেস। কংগ্রেসের টিকিটে জিতে তৃণমূলে যোগ দেন বিশ্বনাথ। এবার দেবেশ চক্রবর্তীকে প্রার্থী করায় নির্দল হিসেবে মনোনয়ন জমা দিয়েছেন স্বপন বন্দ্যোপাধ্যায়।


ভোটের আগে এই ঘটনায় অস্বস্তিতে পড়েছে জেলা কংগ্রেস নেতৃত্ব। দুর্গাপুর পশ্চিমের কংগ্রেস প্রার্থী দেবেশ চক্রবর্তী জানান, ‘‘অনেকেই ক্যান্ডিডেট হতে চায়। আমাকে দল করতে চায় বলে করেছি। আশাকরি সরে দাঁড়াবেন।’’ সিপিএম জেলা কমিটির সদস্য পঙ্কজ রায় সরকার বলেন, কংগ্রেসকেই বিষয়টা দেখতে হবে। ২৬ এপ্রিল পশ্চিম বর্ধমানের সবকটি কেন্দ্রে ভোট। তার আগে, দুর্গাপুর পশ্চিমে বিজেপি ও কংগ্রেসের দ্বন্দ্ব, তৃণমূলকে বাড়তি সুবিধা করে দেয় কি না, সেটাই দেখার।