সুদীপ চক্রবর্তী, উত্তর দিনাজপুর: শরীর জুড়ে প্রতিবন্ধকতার চিহ্ন। আর তা নিয়েই হাসিমুখে ভোটকেন্দ্রের উদ্দেশ্যে রওনা হলেন বিশেষভাবে সক্ষম ভোট কর্মী শামিম আখতার। দুটি হাতের আঙুল-সহ তালু বিকৃত ৷ তাতেও অবশ্য ভোটের কাজ থেকে কেউ তাঁকে পিছু হঠাতে পারেননি ৷ এর পিছনে কারণ, তাঁর অদম্য মানসিক শক্তি ৷


বুধবার ইসলামপুর কলেজের ডিসিআরসি থেকে ভোটের সরঞ্জাম নিয়ে চোপড়ার সোনাপুর বুথে রওনা হওয়ার মুহূর্তে তাঁকে শুভেচ্ছা জানান ইসলামপুরের মহকুমা শাসক তথা মহাকুমা নির্বাচন আধিকারিক সপ্তর্ষি নাগ।


সপ্তর্ষি নাগের কথায়, শামিমকে দেখেই যেন সকলে ভোট দিতে যাওয়ার বিষয়ে উৎসাহিত হন। শামিম আখতার হলেন ইসলামপুর মহকুমার গর্ব । বিশেষ ক্ষমতা সম্পন্ন মানুষটি একজন সরকারি কর্মী । কাজ করেন খাদ্য দফতরে। শামিম আখতারের সমগ্র শরীর জুড়ে প্রতিবন্ধকতার চিহ্ন স্পষ্ট ৷ এর আগেও তাঁর প্রতিবন্ধকতার কারণ দেখিয়ে অনেক ভোট কর্মী শামিমকে সঙ্গে নিতে নারাজ হওয়ায় সমস্যা তৈরি হয়েছিল। কিন্তু এবারে আর সেই সমস্যা দেখা যায়নি।


চোপড়া বিধানসভার সোনাপুরে অন্যান্য কর্মী এবং প্রিসাইডিং অফিসারের সঙ্গে তিনি রওনা হন ভোটগ্রহণ কেন্দ্রের উদ্দেশে। শারীরিকভাবে প্রতিবন্ধকতা থাকলেও মানসিকভাবে যে তিনি কতটা দৃঢ়, তা তাঁর শরীরি ভাষাতেই পরিষ্কার। সম্প্রতি গাড়ি চালানোর জন্য ড্রাইভিং লাইসেন্স করিয়ে তিনি এখন দিব্যি গাড়িও চালান। বুঝিয়ে দিচ্ছেন প্রতি মুহূর্তে মানসিক শক্তির জোর কতটা বেশি থাকলে সব কাজ এভাবেই হাসিমুখে করা যায়। শারীরিক প্রতিবন্ধকতা সেখানে কোনও ফ্যাক্টরই নয়। শামিম আখতার জানান, নিজেও প্রতিমুহূর্তে চ্যালেঞ্জ নিয়ে যাচ্ছেন তিনি। তাঁর মতো যারা আছেন, তাঁরা যেন নির্বাচনের মতো সব ধরণের সরকারি কাজে সকলেই অংশগ্রহণ করেন। এমনটাই আবেদন শামিমের ৷


শামিম আখতার জানান, নিজেও তিনি প্রতিমুহূর্তে লড়াই করে যাচ্ছেন। সকলকেই তিনি প্রতি মুহূর্তে চ্যালেঞ্জে অংশ নেওয়ার আহ্বান জানান৷ শামিমের কথায়, ‘‘চলাই জীবন৷ আর পথ চলতে গেলে চ্যালেঞ্জ গ্রহণ করতেই হবে৷’’