কৃষ্ণেন্দু অধিকারী, দীপক ঘোষ ও সন্দীপ সরকার, কলকাতা: বিধানসভার মহাযুদ্ধের মুখে বঙ্গ রাজনীতির ময়দানে ফের ক্লাব খয়রাতি নিয়ে কথার লড়াই। সোমবার নেতাজি ইন্ডোর স্টেডিয়ামে ‘খেলাশ্রী’ অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী ঘোষণা করলেন, ভোটের মুখে ৮ হাজার ২৮৯টি ক্লাবকে মোট ৮২ কোটি ৮৯ লক্ষ টাকার অনুদান দেওয়া হবে। অর্থাৎ ক্লাব পিছু ১ লক্ষ টাকা করে অনুদান। এছাড়াও, ৯৪৭টি স্পোর্টস কোচিং ক্যাম্পকে ১ লাখ টাকা করে আর্থিক সাহায্য দেওয়া হচ্ছে। 


এদিন বিরোধীদের কটাক্ষ করে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘৭২০০০ কোটি টাকার প্রকল্প উদ্বোধন। ৩২৯০০০ কর্মসংস্থান হবে। বিনিয়োগের সবচেয়ে বড় দরজা বাংলা। আগামী ৫ বছরে আরও দেড় কোটি কর্মসংস্থান। ভারতে ৪০ শতাংশ বেকার বেড়েছে। বাংলায় ৪০ শতাংশ দারিদ্র্য কমেছে। স্থানীয় ক্লাব, পুলিশের সহযোগিতায় আমফান বিধ্বস্তদের উদ্ধার। কেন্দ্র বাংলাকে কিছুই দেয়নি। ঘর, কৃষিজমি, ফসল নষ্ট হয়েছে, পাশে রয়েছে সরকার। ৮২৮৯ ক্লাবকে ৮২ কোটি ৮৯ লক্ষ টাকা অনুদান। হকির অ্যাস্ট্রোটার্ফের জন্য ২০ কোটি টাকা সাহায্য। ক্লাবকে সাহায্য করলে অন্যদের রাগ হয় কেন ? ৩ বছরে ১ লক্ষ টাকা করে ২৬০০০ ক্লাবকে আর্থিক সাহায্য করেছি। ৩৪টি ক্রীড়াসংস্থাকে টাকা দিয়েছে রাজ্য। দুর্গাপুজোর সময় ক্লাবগুলিকে ৫০০০০ টাকা করে দিয়েছে রাজ্য। ১০০ জন ছেলেমেয়েকে স্পনসর করবে রাজ্য। বিনা পয়সায় স্বাস্থ্যসাথী, বিনা পয়সায় রেশন।’


পাল্টা বিজেপি রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ বলেছেন, ‘আমরা বলছি, টাকা নিন, ভোট আমাদের দিন। আগের ভোটেও তো টাকা দিয়েছে। তা হলে এত ক্লাবের ভোট কোথায় গেল?’


বিজেপি নেতা শমীক ভট্টাচার্য বলেছেন, ‘ক্লাবকে খয়রাতির রাজনীতি নিয়ে বাংলার আর্থ-সামাজিক পরিস্থিতির বদল হবে না।’


২০১২ সাল থেকে বিভিন্ন ক্লাবকে অনুদান দেওয়া শুরু করে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার। এই খাতে সরকারি ভাঁড়ার থেকে এখনও পর্যন্ত দেড় হাজার কোটিরও বেশি টাকা খরচ হয়েছে। বাম ও কংগ্রেসের প্রশ্ন, অর্থের অভাবে যদি উন্নয়ন আটকে যেতে পারে, তাহলে ক্লাবগুলিকে খয়রাতির টাকা সরকারের কাছে আসে কোথা থেকে? বিরোধী দলগুলির দীর্ঘদিনের অভিযোগ, ক্লাবগুলিকে টাকা দিয়ে আসলে ভোট কেনার ট্র্যাডিশন শুরু করেছে তৃণমূল! বিধানসভা ভোটের মুখে ফের মাথাচাড়া দিল সেই বিতর্ক।