অরিন্দম সেন, আলিপুরদুয়ার: একদিকে ‘দিদির সাঁকো’, অপরদিকে মোদির!  এই দুই বাশের সাঁকোই গ্রামের রাজনৈতিক অঙ্কের ভরসা বিজেপি-তৃনমূলের। যা নিয়ে শুরু হয়েছে রাজনৈতিক তরজা।


 


আলিপুরদুয়ার জেলার ফালাকাটা বিধানসভার অন্তর্গত গুয়াবরনগর গ্রাম পঞ্চায়েতের বড়োডোবা গ্রাম দিয়ে বয়ে যাওয়া মুজনাই নদীর উপর দুই বাঁশের সাঁকো নিয়েই শুরু হয়েছে রাজনৈতিক তরজা।


 


জানা যায়, ২০১৮ সালের পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগেই তৈরি হয়েছিল তৃনমূল কংগ্রেস পরিচালিত গ্রাম পঞ্চায়েতের উদ্যোগে  নদীর উপর অস্থায়ী বাঁশের সাঁকো। কিন্তু গত পঞ্চায়েত নির্বাচনে ওই বুথ বিজেপি দখল করে। অভিযোগ তারপর থেকে বঞ্চিত এই গ্রাম। এমনকি, সাঁকো তৈরির আইন বদল হওয়ায় সেখানে পঞ্চায়েতের উদ্যোগে অস্থায়ী সাঁকো তৈরিও সম্ভব হয়নি। ফলে, নদীর অপর প্রান্তে বসবাসকারি প্রায় তিনটি বুথের প্রায় ৫ হাজার মানুষকে নির্ভর করে থাকতে হয় এই ভগ্নপ্রায় একটি সাঁকোর উপর।


 


বর্ষায় নদীর জল বেড়ে গেলে সরাসরি ৫০০ মিটার দূরত্বে ফালাকাটা শহরে তাদের প্রায় ৭ কিমি ঘুরে প্রয়োজনীয় কাজে যেতে হয়। স্বাধীনতার এতো বছরেও কোনও সরকারই স্থায়ী সেতু তৈরির উদ্যোগ না নেওয়ায় ক্ষুদ্ধ স্থানীয় মানুষ। এই পরিস্থিতিতে স্থানীয় বিজেপি কর্মীরা নিজেরাই উদ্যোগ নিয়ে তৈরি করেছিলেন পাশাপাশি দ্বিতীয় সাঁকো। যা স্থানীয়ভাবে ‘মোদির সাঁকো’ এবং পুরোনোটি ‘দিদির সাঁকো’ নামেই পরিচিত গ্রামের মানুষের কাছে।


 


আর এই দুই সাঁকো নিয়েই বিধানসভা ভোটের আগে তৃনমূল-বিজেপিতে বিভক্ত গোটা গ্রাম। জানা যায়, এই দুই দলের সমর্থকরা খুব বিপদে না পড়লে অন্য সাঁকো দিয়ে যাতায়াতও  করেন না। ফলে, কাদের সাঁকো দিয়ে কতো মানুষ যাতায়াত করছে, সেই অঙ্কেই নিজেদের শক্তি বুঝে নেবার চেষ্টায় দুই রাজনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বী বিজেপি-তৃনমূল কংগ্রেস।


 


তবে, সেই অঙ্কেও সন্দেহ থাকায়, সাঁকোর প্রান্তে নিজেদের পতাকা লাগিয়েই ভোট প্রচারে ব্যস্ত বিজেপি কর্মীরা। সাঁকো নিয়ে রাজনৈতিক রঙ লাগানোর পথে তৃনমূল কংগ্রেস না হাঁটলেও,  মানুষ তাদের সঙ্গেই আছে এবং তাদের সাঁকো দিয়েই বেশি মানুষ যাতায়াত করছে বলে দাবি ব্লক তৃনমূল কংগ্রেসের। একই দাবি বিজেপিরও। এখন দেখার, শেষ পর্যন্ত কাদের পাল্লা থাকে ভারি।