সঞ্চয়ন মিত্র, কলকাতা:  স্লোগান  হল এমন শব্দবন্ধ যা মানুষকে উজ্জীবিত করে। আন্দোলনকে আরো শক্তিশালী করে, গতিশীল করে। স্বাধীনতার আগে সমস্ত আন্দোলনেরই অভিমুখ ছিল ভারতের স্বাধীনতা প্রাপ্তি। পরবর্তী পর্যায়ে বিভিন্ন ধরনের আন্দোলন হয়েছে। কখনো খাদ্য আন্দোলন, কখনো বা নকশাল আন্দোলন। সমাজ কে নাড়া দেওয়া এই সমস্ত আন্দোলনে বিভিন্ন সময় বিভিন্ন স্লোগান উঠে এসেছে। অভিনব স্লোগান দেওয়ার নিরিখে বামপন্থীরা যথেষ্ট গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছেন। পরবর্তীকালে বিভিন্ন সময়ে অন্যান্য দক্ষিণপন্থী দলগুলিও সেইসব স্লোগানকে নিজেদের মতন করে তৈরি করে নিয়েছে। একসময়ের দুঁদে ছাত্রনেতা বর্তমানে রাজ্যের মন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায়ের কথায় ছাত্রাবস্থায় প্রতিদিন সন্ধ্যেবেলার কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের সিঁড়িতে বসে তদানীন্তন আর এক ছাত্রনেতা প্রিয়রঞ্জন দাশমুন্সি নানান ছড়া কাটতেন। আর তা থেকেই রাজনৈতিক প্যারোডি এবং কিছু কিছু স্লোগান তৈরি হত।


রাজ্যে তৃণমূল কংগ্রেস ক্ষমতায় আসার পর থেকে রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে গুরুত্বপূর্ণ হয়ে ওঠে বীরভূম জেলা। একই সঙ্গে জুড়ে যায় বীরভূমের তৃণমূল সভাপতি অনুব্রত মণ্ডলের নাম। তিনি বিভিন্ন সময়ে কখনো ‘চড়াম চড়াম’ কখনো বা ‘গুড়- বাতাসা’র মতন শব্দবন্ধ কে তুলে ধরেছেন। বিগত বছর গুলোয় এক একটা নির্বাচনে তাই দিয়েই তৈরি হয়েছে নতুন নতুন রাজনৈতিক স্লোগান। যদিও এই স্লোগানগুলো শুধুই তৃণমূল কংগ্রেসের অন্দরে জনপ্রিয়তা পেয়েছিল। এবার কিছুদিন আগেই বিজেপি কে উদ্দেশ্য করে তিনি ঘোষণা করেন ‘খেলা হবে’।


 




আর সেই স্লোগান অচিরেই তুমুল জনপ্রিয় হয়ে ওঠে। তবে এবার আর শুধুমাত্র তৃণমূল শিবিরে নয় তাঁর ‘খেলা হবে’ স্লোগান জনপ্রিয়তা পেয়েছে ডান-বাম দুই রাজনৈতিক শিবিরেই। কিছুদিন আগে বিজেপির মিছিলেও শোনা গিয়েছিল এই স্লোগান। আজ বাম- কংগ্রেসের যৌথ মিছিলে দেখা যায় কংগ্রেস কর্মীরা ‘খেলা হবে’  স্লোগান তুলেছেন। গতকালও একই ছবি ধরা পড়েছিল বামপন্থী ছাত্র যুবদের নবান্ন অভিযান কর্মসূচিতে। সেখানেও বারেবারে নজর কাড়ে এই ‘খেলা হবে’ স্লোগান। একদা বামপন্থীদের স্লোগান ধার নিতেন অন্যান্য বিভিন্ন দল। এবার তৃণমূল কংগ্রেসের অনুব্রত মণ্ডলের এই ‘খেলা হবে’  স্লোগান ২০২১ এর বিধানসভা নির্বাচনে জনপ্রিয়তার নিরিখে প্রধান স্লোগান হয়ে উঠছে।