সৌভিক মজুমদার, কলকাতা: কয়লাকাণ্ডে অনুপ মাঝি ওরফে লালা-মামলায় স্বস্তিতে সিবিআই। সিঙ্গল বেঞ্চের নির্দেশের উপর অন্তর্বর্তী স্থগিতাদেশ জারি করল ডিভিশন বেঞ্চের। কয়লাকাণ্ডে সিবিআই যাতে কড়া পদক্ষেপ না নিতে পারে, তার জন্য হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন কয়লা ব্যবসায়ী অনুপ মাঝি ওরফে লালা। সেই আবেদন খারিজ করে দেয় বিচারপতি রাজেশ বিন্দল ও বিচারপতি অনিরুদ্ধ রায়ের ডিভিশন বেঞ্চ। এই মামলায় সব পক্ষকে ২৩ মার্চের মধ্যে হলফনামা জমা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। ২৭ এপ্রিল মামলার পরবর্তী শুনানি। পাশাপাশি সিঙ্গল বেঞ্চের বেঁধে দেওয়া সিবিআই তদন্তের এক্তিয়ারের গণ্ডি নির্দেশের উপরও স্থগিতাদেশ জারি করল ডিভিশন বেঞ্চ। যার ফলে রাজ্যের যে কোনও জায়গায় গিয়ে তদন্ত করতে কোনও বাধা রইল না সিবিআইয়ের।
বাংলায় ভোটের মুখে কয়লা পাচারকাণ্ডের তদন্তে গতি বাড়িয়েছে কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা। কিন্তু তা সত্ত্বেও এখনও পর্যন্ত মূল অভিযুক্ত অনুপ মাঝি ওরফে লালার কোনও হদিশ মেলেনি! এই পরিস্থিতিতে রাজ্যের এক্তিয়ারভুক্ত এলাকায় সিবিআইয়ের তদন্ত চালানো নিয়ে কলকাতা হাইকোর্টে মামলা হয়েছিল আগেই। ৩ ফেব্রুয়ারি সেই মামলায় কলকাতা হাইকোর্টের সিঙ্গল বেঞ্চ তার রায়ে জানায়, যেহেতু কয়লা রেলে পরিবহণ করা হয় তাই, ১৯৮৯ সালের রেলওয়ে আইনে রেলের আওতাধীন এলাকা সম্পর্কে যে সংজ্ঞা দেওয়া আছে, সেই এলাকায় সিবিআই তদন্ত চালাতে পারবে। রাজ্য সরকারের নিয়ন্ত্রণাধীন এলাকায় সিবিআই অফিসার পাঠিয়ে তল্লাশি অভিযান চালাতে বা তদন্ত করতে পারবে না। কিন্তু রাজ্যের এলাকায় সিবিআই সমন পাঠাতে পারবে ও সাক্ষীদের জিজ্ঞাসাবাদ করতে পারবে। রাজ্যের আওতাধীন এলাকায় তল্লাশি চালাতে হলে রাজ্যের কাছ থেকে অনুমতি নিতে হবে সিবিআইকে।
সিঙ্গল বেঞ্চের এই নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে ৮ ফেব্রুয়ারি ডিভিশন বেঞ্চে যায় সিবিআই। সেই মামলায় শুক্রবার বিচারপতি রাজেশ বিন্দল ও বিচারপতি অনিরুদ্ধ রায়ের ডিভিশন বেঞ্চ জানিয়ে দেয়, ৩ ফেব্রুয়ারি কলকাতা হাইকোর্টের সিঙ্গল বেঞ্চের তরফে যে নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল তার উপর অন্তর্বর্তী স্থগিতাদেশ দেওয়া হল। এর ফলে রাজ্যের যে কোনও জায়গায় গিয়ে তদন্ত চালাতে সিবিআইয়ের সামনে আর কোনও বাধা রইল না। অন্যদিকে, সিবিআই যাতে তাঁর বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ না করে, এই মর্মে আগেই আবেদন করেছিলেন কয়লা পাচারকাণ্ডে মূল অভিযুক্ত অনুপ মাঝি ওরফে লালা।
এদিন সেই আবেদনও খারিজ করে দেয় কলকাতা হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ। এই মামলায় ২৩ মার্চের মধ্যে সংশ্লিষ্ট সব পক্ষকে হলফানামা জমার নির্দেশ দিয়েছে আদালত। মামলার পরবর্তী শুনানি হবে ২৭ এপ্রিল।
অন্যদিকে, কোনওরকম বিশৃঙ্খলা হলে তা রুখতে এবার রাজ্যের আওতায় রেল স্টেশন, রেললাইন-সহ রেলের মালিকানাধীন এলাকাকেও যুক্ত করা হল। এই মর্মে বৃহস্পতিবার ১৮৬১ সালের পুলিশ আইনের ৩৪ নম্বর ধারা উল্লেখ করে একটি নোটিশও জারি করে নবান্ন।