অরিত্রিক ভট্টাচার্য ও দীপক ঘোষ, কলকাতা: বিজেপির বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রের অভিযোগে সরব তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। চিফ সিকিওরিটি অফিসারকে সরানো নিয়ে তুললেন প্রশ্ন! নিশানায় কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। মিথ্যে অভিযোগ করে, সহানুভূতি আদায়ের চেষ্টা করছেন! পাল্টা আক্রমণ বিজেপির।
পায়ে প্লাস্টার! হেলিকপ্টার থেকে নেমে হুইলচেয়ারে সভামঞ্চে উঠছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এটাই এখন রোজকারের ছবি। এই পরিস্থিতিতে মঙ্গলবার বাঁকুড়ার একের পর এক সভা থেকে নন্দীগ্রামে চোটের প্রসঙ্গ টেনে আবেগ উস্কে দেওয়ার চেষ্টা করলেন তৃণমূল নেত্রী। তিনি বলেন, ‘‘আমি রোজ ২৫-৩০ কিলোমিটার হাঁটি। এখন হাঁটতে পারছি না। পায়ে যন্ত্রণা আছে। কিন্তু যন্ত্রণা নিয়ে আমি ঘরে বসে থাকলে বিজেপি জনতাকে আরও যন্ত্রণা দেবে। তাই এই অবস্থায় আমি বেরিয়েছি।’’
তৃণমূল দাবি করছে, নন্দীগ্রামে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আহত হওয়ার নেপথ্যে রয়েছে গভীর ষড়যন্ত্র। বিজেপি দাবি করছে, সহানুভূতি কুড়োতে দুর্ঘটনাকে হামলা বলে চালানোর চেষ্টা করছে তৃণমূল ৷ আর এই বাগযুদ্ধের মধ্যেই প্রতিটি নির্বাচনী সভা থেকে নন্দীগ্রামের প্রসঙ্গ তুলে বিজেপিকে আক্রমণ করে চলেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তৃণমূলনেত্রী বলেন, ‘‘আমাকে খুনের চেষ্টা করলেই কি সব হবে? আরও গোল্লা পাবে। খেলা হবে। আমার নিরাপত্তার দায়িত্বে যিনি ছিলেন, তাঁকেও সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। ওরা কী চায়? প্রাণে মেরে ফেলতে চায়?’’
মেজিয়ার সভায় মমতার অভিযোগ, কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজ্যে বসে চক্রান্ত করছেন। রাজ্যের স্বরাষ্ট্রসচিবকে কেন নোটিস? নির্বাচন কমিশনের কাজে কেন হস্তক্ষেপ? কেন সরানো হল তাঁর চিফ সিকিওরিটি অফিসারকে?
অমিত শাহর গতকালের সভায় হাজির না হওয়া নিয়েও কটাক্ষ ছুঁড়ে দিয়েছেন তিনি। বলেছেন, জনতা দিল কালি, বিজেপির সব চেয়ার খালি। খুব রেগে গেছে, কাল সারারাত মিটিং করেছে। কোন পুলিশ, এসপি, ডিএম কে সাসেপন্ড করা যায়! তৃণমূলকে গ্রেফতার করা যায়! বাংলা দিল্লি দখলের কাঁটা হবে।
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের লাগাতার আক্রমণের মুখে নিজেদের পুরনো তত্ত্বেই অনড় বিজেপি! তাদের দাবি, সহানুভূতি কুড়োতেই এই সব ভিত্তিহীন কথা আওড়ে চলেছেন তৃণমূল নেত্রী। সব মিলিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নন্দীগ্রামে আহত হওয়ার পর যে ষড়যন্ত্রের তত্ত্বকে হাতিয়ার করেই তৃণমূল ভোটে যেতে চাইছে, তা স্পষ্ট দলনেত্রীর ভাষণ থেকেই।