সঞ্চয়ন মিত্র ও রুমা পাল- মহিলা ভোটারকে বাধা দেওয়ার অভিযোগ। ধাক্কাধাক্কি থেকে হুমকির অভিযোগ। কোথাও আবার গ্রামের মহিলাদের ভোট দিতে বাধার অভিযোগ। অভিযোগ, প্রথমবার ভোট দিতে গিয়ে হুমকির মুখে পড়তে হল অষ্টাদশীকেও। কোথাও আবার আতঙ্কে কথাই বলতে ভয় পাচ্ছেন তৃণমূলের বুথ সভাপতির আত্মীয়রা বলে অভিযোগ।
বিষ্ণুপুরের রামমাখালচক গ্রামের ১০৭ নম্বর বুথ। এখানেই, রাতভর বোমাবাজি ও তাণ্ডব চালানোর অভিযোগ উঠেছে তৃণমূলের বিরুদ্ধে। শুধু তাই নয়, সকালে ভোট দিতে গেলে ভোট হয়ে গেছে বলে ফিরিয়ে দেওয়া হয় বলেও অভিযোগ।
সুমনা মণ্ডল। প্রথমবার ভোটার। প্রথম ভোট নেওয়ার স্বপ্ন নিয়ে বুথে যাচ্ছিলেন। অভিযোগ, মাঝ পথ থেকেই তাঁকে ফিরিয়ে দেওয়া হয়। তিনি বলেন, ‘‘বাড়ি থেকে বেরিয়েছি, দেখি ওরা দাঁড়িয়ে আছে, বলে ভোট দিতে দেবে না। পুরো পাড়া বিজেপি করে বলে রাতে ঝামেলা করেছে। বলছে সন্ধেয় ব্যবস্থা হবে।’’ বিষ্ণুপুরের এক বাসিন্দার কথায়, ‘‘মা বলল, ওরা কোথায় দেখে আয়। তৃণমূলের পার্টি অফিসের পাশ দিয়ে যাচ্ছিলাম, শুনলাম একজন বলছে, ওই পাড়াটাকে শ্মশান বানিয়ে দেব।’’
এই খবর সম্প্রচারিত হওয়ার পরই উদ্যোগী হয় কমিশন। গ্রামে যায় পুলিশ ও কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ানরা। নিরাপত্তা দিয়ে ভোটারদের বুথে নিয়ে আসা হয়। বিষ্ণুপুরের ১২৩ নম্বর বুথে আবার মহিলা ভোটারকে বুথে যেতে বাধা দেওয়ার ভিডিও ভাইরাল হয়েছে। সেখানে দেখা যাচ্ছে, এক মহিলাকে ভোট দিতে যেতে বাধা দিচ্ছেন এক যুবক। শুধু বাধা দেওয়াই নয়, মহিলাকে ধাক্কাধাক্কিও করা হয়। দেওয়া হয় হুমকিও। এই অভিযোগ আসার পরই কমিশন অ্যাকশন টেকেন রিপোর্ট চেয়ে পাঠায়। ঘটনাস্থলে যায় বিশাল পুলিশ বাহিনী। অভিযুক্ত গোরাঙ্গ মাখালকে আটক করেছে পুলিশ।
হাওড়ার বাগনানেও তৃণমূলের বিরুদ্ধে ভোটারদের হুমকি দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। বাগনানের বাসিন্দার কথায়, ‘‘চলে গেলে মারবে, বাড়ি ভাঙচুর করবে তৃণমূল। দু’বার ভোট দিতে আসি, ফিরে আসি, তারপর স্যারেরা নিয়ে যায়।’’ ভোটের আগের রাত থেকেই এলাকায় বোমাবাজি ও তাণ্ডব চলছে বলে অভিযোগ। এলাকা শুনশান।
ভোটের আগের রাতে বাগনানে আক্রান্ত হন তৃণমূলের বুথ সভাপতি। ধারাল অস্ত্র দিয়ে কোপানোর অভিযোগ উঠেছে বিজেপির বিরুদ্ধে। এই ঘটনার পর থেকে আতঙ্কে রয়েছেন তাঁর আত্মীয়-পরিজনরা। তাঁরা কার্যত গৃহবন্দি হয়ে রয়েছেন। সব মিলিয়ে ভোট তৃতীয়াতেও বিরাম নেই সন্ত্রাসের।