কলকাতা : অভিষেক বন্দ্য়োপাধ্য়ায়ের দাবি ছিল, তৃণমূলের ঝুলিতে আসবে ৩২টি আসন। বাস্তবে এসেছে ২৯টি আসন। যা তাঁর ভবিষ্য়দ্বাণীর একেবারেই কাছাকাছি। ২০১৪ থেকে ২০১৯-এ তৃণমূলের আসন ৩৪ থেকে নেমে এসেছিল ২২-এ। ২০২৪-এ শক্তি বাড়িয়ে ফের তিরিশের কাছাকাছি পৌঁছে গেল তৃণমূল। ২০১৯-এ লোকসভা ভোটে তৃণমূল ৪৪ শতাংশ ভোট পেয়েছিল। ২০২৪-এ তৃণমূলের প্রাপ্ত ভোটের হার বেড়ে হল প্রায় ৪৬ শতাংশ। আর এর কৃতিত্বের অনেকটাই এবার সেনাপতি অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কেই দিচ্ছে তাঁর দল। নিজের কেন্দ্র ডায়মন্ড হারবার থেকে তিনি এবার সর্বকালীন রেকর্ড ব্যবধানে জয়ী হয়েছেন।
ডায়মন্ড হারবারের সাংসদই এখন তৃণমূলের আসল 'ডায়মন্ড'। অবশ্য় লোকসভা ভোটে তৃণমূলকে এই জায়গায় পৌঁছে দেওয়ার কাজটা কোনওদিক থেকেই সহজ ছিল না। একদিকে, বিজেপির আক্রমণের মোকাবিলা, অন্য়দিকে, তৃণমূলের সংগঠনকে শক্তিশালী করে তোলা। দুটো কাজ সমান্তরালভাবে চালিয়ে গেছেন অভিষেক। একুশের বিধানসভা ভোটের সময় থেকেই তৃণমূলের তারকা প্রচারক অভিষেক বন্দ্য়োপাধ্য়ায়। পঞ্চায়েত ভোটের আগে নবজোয়ার যাত্রা করে চষে ফেলেছিলেন গোটা রাজ্য়। এবারও মমতা বন্দ্য়োপাধ্য়ায়ের সঙ্গে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে প্রচারে ঝড় তুলেছেন তিনি। সেই সঙ্গে বিজেপির আক্রমণের পাল্টা জবাব দেওয়ার ক্ষেত্রেও সামনে থেকে নেতৃত্ব দিয়েছেন দলকে। বিজেপি যখন একশো দিনের কাজ কিংবা আবাসের মতো কেন্দ্রীয় প্রকল্পে দুর্নীতির অভিযোগে সরব হয়েছে, তখন মোদি সরকারের বিরুদ্ধে বঞ্চনার অভিযোগ তুলে অভিষেক বন্দ্য়োপাধ্য়ায় কখনও দিল্লি পৌঁছে গেছেন, কখনও রাজভবনের সামনে ধর্নায় বসেছেন।
এছাড়া লোকসভা ভোটে প্রার্থী ঠিক করা থেকে প্রচারের ব্লু প্রিন্ট তৈরিও করেছেন তিনিই। পার্টর ঘনিষ্ঠ সূত্রে খবর, ব্রিগেডে যে মঞ্চ থেকে পরপর ৪২ প্রার্থীর নাম একলপ্তে ঘোষণা করেছিল তৃণমূল, সেই প্ল্যানিংও নাকি অভিষেকের। এরপর নিজের প্রার্থীদের জেতাতে প্রচারে ছুটে বেরিয়েছেন রাজ্য়জুড়ে। ভোটের আগে জেলায় জেলায় গিয়ে, সাংগঠনিক বৈঠক করেছেন অভিষেক বন্দ্য়োপাধ্য়ায়। ফল ঘোষণার দু'দিন আগেও, ভার্চুয়াল বৈঠকে দলীয় প্রার্থী ও তৃণমূলের জেলা সভাপতিদের সঙ্গে বৈঠক করেন তিনি। মনোবল ধরে রাখতে বলেন। স্ট্রংরুম পাহারা দিতে বলেন। এসবের ফলই কি হাতেনাতে পেল তৃণমূল? আর এই AB - ফ্যাক্টরের জন্যই ওড়িশা দখল করলেও, বাংলা মোদি-শাহের কাছে অধরাই থেকে গেল।
বঙ্গ রাজনীতিতে অভিষেকের গুরুত্ব বুঝেই এবার দিল্লিতে ইন্ডিয়া জোটের বৈঠকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় পাঠাচ্ছেন অভিষেককেই।
আরও পড়ুন :
সন্দেশখালি-বিতর্কের জের কোথায়? বসিরহাটে জয় তৃণমূলের