কলকাতা: ডেনিম শার্টের সাদামাটা সাজে চেনা লুক। কেবল আগামী ছবির চরিত্রের সঙ্গে সাযুজ্য রেখেই সাক্ষাৎকার দেওয়ার সময় চোখে রোদচশমা রাখছিলেন তিনি। অনুরোধ করায় এক কথায় বদলে ফেললেন সেটা। কালো ফ্রেমের চশমায় যেন ঝকঝকে দেখাচ্ছিল তাঁকে। দুপুরের খাওয়া ঝটপট মিটিয়ে নিয়েই বসে পড়লেন ক্যামেরার সামনে। একের পর এক সাক্ষাৎকারেও তিনি ক্লান্তিহীন, সমান সপ্রতীভ। নতুন ছবি নিয়ে কথা শুরু হলেও সে কথা গড়িয়ে যায় থিয়েটারের মঞ্চ, রাজনীতি, বলিউডে... প্রতি প্রশ্নে উত্তরে স্বভাবচিত সহজ, সাবলীল অনির্বাণ ভট্টাচার্য্য (Anirban Bhattacharyya)।
'বুলেট সিং' আর পল্টনের চরিত্র ছাড়া অনির্বাণকে কমবেশি একরকম লুকে দেখেই অভ্যস্থ দর্শকদের চোখ। অনুরাগীদেরও বটে। পরমা নেওটিয়া পরিচালিত 'মিথ্যে প্রেমের গান'-এ অনির্বাণের লুক বেশ চমকে দেওয়ার মতোই। একজন সঙ্গীতশিল্পীর ভূমিকায় অভিনয় করছেন তিনি। পর্দায় যে অভীককে দেখা যাবে, সেই অনির্বাণ দর্শকদের অচেনা। একটু হেসে অভিনেতা বললেন, 'আমার এতদিনের অভিনয়ের কেরিয়ারে এই চরিত্রটা একেবারে অন্যরকম আর নতুন। পরমা আমায় এমন একটা চরিত্র অফার করবে সেই ধারণা আমার ছিল না। প্রথমে দীর্ঘদিন চরিত্রটা নিয়ে কথা হতো ওর সঙ্গে। আমার যে একটু ভয় ভয় করেনি এমন নয়। মনে হয়েছিল আদৌ কি মানুষ আমায় এই চরিত্রে পছন্দ করবেন বা আমি কি ফুটিয়ে তুলতে পারব এটা! একটা ছবিতে ১১টা গানের লিপ সিঙ্কস রয়েছে, সেটাও আমার কেরিয়ারে প্রথম। কিন্তু অভিনেতাদের নিজেদের নতুন নতুন চরিত্রে দেখার ইচ্ছা থাকে সবসময়। সেই সবকিছু মিলিয়ে গোটা কাজটা হয়ে যাওয়ার পরে আমার মনে হয় ভালোই হয়েছে। আর যখন নিজেকে পল্টন আর বুলেট সিং হিসেবে পর্দায় দেখেছিলাম, মনে হয়েছিল মানুষটাই যেন বদলে গিয়েছে। মিথ্যে প্রেমের গানেও লুকের ক্ষেত্রে একটা চেঞ্জ ওভার ভীষণ দরকার ছিল। মানুষ সত্যিই আমায় একরকমভাবে দেখতে অভ্যস্থ। চেনা চেহারাটা একটু বদলে বড়পর্দায় এলে মানুষের মনেও একটা অন্যরকম প্রভাব বিস্তার করা যায়।'
'পাঠান' (Pathaan) নিয়ে যেমন বিতর্ক রয়েছে, তার চেয়ে অনেক বেশি রয়েছে উন্মাদনা। কিন্তু এই উন্মাদনা কী বাংলা ছবির বাজারকে ক্ষতি করছে? অনির্বাণ বলছেন, 'আমার ভাবনার সীমাবদ্ধতা থাকতে পারে, কিন্তু 'পাঠান'-এমন একটা মানুষের কাম ব্যাক করার ছবি যাঁকে আমি ভারতের শেষ বিগেস্ট সুপারস্টার বলে মনে করি। শাহরুখ নিজেকে একটা বিরাট প্রতিষ্ঠানের জায়গায় নিয়ে গিয়েছেন। ভিন্ন ভাষাভাষীর মানুষ তাঁকে ভালবাসে, তাঁর সঙ্গে নিজেদের জীবন মিলিয়ে ফেলতে পারে। 'পাঠান' হিট হওয়া শাহরুখ খানের যথোচিত সম্মান। এটাই হওয়ার ছিল। আর মনে করি, বর্তমান ভারতে দাঁড়িয়ে এটা হওয়া দরকার ছিল। আর, আমি যতটুকু বাংলা ছবির ইতিহাস জানি, তাতে আমি বাংলা ছবি নিয়ে খুব গর্বিত। পৃথিবীর সব ইন্ডাস্ট্রির মতো এখানেও সমস্যা, খামতি, অভাব-অনুযোগ রয়েছে। বলিউডেও রয়েছে। ২০২২ যেমন হিন্দি ছবির জন্য খুব খারাপ একটা বছর ছিল। বাংলাতেও তেমন.. কিছু ছবি চলেছে, কিছু চলেনি। তবে বাংলা ইন্ডাস্ট্রির যে লেগাসি আমি জানি, তা নিয়ে আমি ভীষণ গর্বিত। বাংলা ছবি নিয়ে, পরিচালক নিয়ে আর এই ইন্ডাস্ট্রির ক্ষুদ্র একটা অংশ হতে পেরে।'