কলকাতা: শ্যুটিং ফ্লোরে তিনি খুঁতখুঁতে। একটা শব্দের জন্য রিশ্যুট করিয়েছিলেন একটা ছবির একটা গোটা গান! তাঁর হাত ধরেই দেব হয়ে উঠেছিলেন নগেন্দ্রপ্রসাদ সর্বাধিকারী। নতুন ছবি 'গোলন্দাজ'-এর গল্পের থেকে অনেক বেশি গল্প রয়েছে ক্যামেরার পিছনে। এবিপি লাইভের কাছে সেইসব অজানা গল্পের ঝাঁপি খুললেন পরিচালক ধ্রুব বন্দ্যোপাধ্যায়।


দেব না থাকলে এই ছবির কথা নাকি ভাবতেনই না ধ্রুব! কেন? এবিপি লাইভের প্রশ্নের উত্তরে পরিচালক বলছেন, 'দেব আর নগেন্দ্রপ্রসাদ সর্বাধিকারীর চেহারার মধ্যে একটা অদ্ভুত মিল রয়েছে। ইতিহাসে আমরা নগেন্দ্রপ্রসাদের শারিরীক যে বর্ণনা পাই, ৬ ফুট ২ ইঞ্চি লম্বা, চওড়া ছাতি। এখনকার সময়ে দাঁড়িয়ে আপনি দেখবেন, ঠিক ওইরকম একটা ব্যক্তিত্ব নিয়ে একটা ছেলে ঘুরে বেড়াচ্ছে। দেব। আরও একটা মিল রয়েছে এই দুই চরিত্রের মধ্যে। ইতিহাস বলছে, নগেন্দ্রপ্রসাদ সারা জীবন মানুষের উপকার করে গিয়েছেন। করোনা পরিস্থিতিতে আমরা দেখেছি দেব কীভাবে সাধারণ মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছে। নিজের অজান্তেই নগেন্দ্রপ্রসাদের পদাঙ্ক অনুসরণ করছে দেব। ওকে এই চরিত্রে কাস্ট করাটা বোধহয় ভবিতব্যই ছিল। ছবিটা দেখতে দেখতে দর্শক ভুলে যাবেন ওটা দেব। মনে হবে, পর্দায় নগেন্দ্রপ্রসাদ সর্বাধিকারীকে দেখছেন সবাই। আর হ্যাঁ, দেবের পুরো কেরিয়ারের ওপর শ্রদ্ধাশীল থেকেই বলছি, গোলন্দাজ-এ পর্দায় যে দেবকে দর্শক দেখবেন, তাঁকে আগে কখনও দেখেননি।'


বার বার দেব বলেছেন, এই ছবি তাঁর প্রথম বায়োপিক। কিন্তু পরিচালক বলছেন অন্য কথা। ধ্রুব বলছেন, 'এটা ঠিক বায়োপিক নয়, একটা হিস্টোরিক ফিকসান। আমার চোখ দিয়ে আমি নগেন্দ্রপ্রসাদকে দেখেছি। ইতিহাস আশ্রিত একটা চিত্রনাট্য এটি। আমার উদ্দেশ্য ছিল, গোলন্দাজ ছবিটাকে অনুপ্রেরণা হিসাবে তুলে ধরা। একইভাবে নগেন্দ্রপ্রসাদ সর্বাধিকারী, যাঁর ইতিহাস কেউ জানতেন না, তাঁকে মর্যাদা আর গৌরব ফিরিয়ে দেওয়া। তবে হ্যাঁ, এই ছবিটা দেবের কাছে বায়োপিক। কারণ ওকে নিজেকে ভেঙে নগেন্দ্রপ্রসাদ সর্বাধিকারী হতে হয়েছে। ওকে বিশ্বাস করতে হয়েছে আমিই নগেন্দ্রপ্রসাদ।'


করোনা পরিস্থিতির আগে শ্যুটিং, তারপর লম্বা বিরতি। পরিচালক বলছেন, 'সবাই নিজের নিজের কাজে ব্যস্ত হয়ে গিয়েছে। আমি কিন্তু ২টো বছর এই ছবিটাকে নিয়েই থেকেছি। পুজো আনন্দের, আর 'গোলন্দাজ'-ও আনন্দের ছবি। আমি চাই এই ছবিটা সবার অনুপ্রেরণা হোক। করোনা পরিস্থিতির পর রুপোলি পর্দা ঘুরে দাঁড়াক 'গোলন্দাজ'-এর হাত ধরেই।'