কলকাতা: নিউ আলিপুর থেকে চেতলা যাওয়ার পথে রাস্তায় গাড়ি আটকে কথা বলার চেষ্টা, অশান্তি, তারপর থানায় এফআইআর। রবিবারের বিকেলটা দুঃস্বপ্নের মত মনে হচ্ছে পিঙ্কি বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে। কাঞ্চন মল্লিক ও তাঁর ব্যক্তিগত বিবাদ গড়িয়েছে আইনি পথে। কাঞ্চনের সঙ্গে শ্রীময়ী চট্টরাজের নাম নিয়েও জল্পনা তুঙ্গে। 


পিঙ্কির অভিযোগের পাল্টা এফআইআর দায়ের করেছেন কাঞ্চন মল্লিকও। ব্যক্তিগত সম্পর্কের এই কাদা ছোঁড়াছুড়িতে সবচেয়ে বেশি আহত হচ্ছে ছোট্ট ছেলে, বলছেন কাঞ্চনের স্ত্রী। এবিপি লাইভকে পিঙ্কি বললেন, 'কাঞ্চন ভেবেছে আমি ওর সম্পর্কের কথা সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছি। আর তার পর থেকেই আমায় বার বার ফোন করে বিধ্বস্ত করে তুলেছে। যে গত ৩ মাসে আমায় একবারেও ফোন করেনি, সে ১৫ সেকেন্ড অন্তর অন্তর ফোন করছে। আমি কেবল একটু সময় চেয়েছিলাম কাঞ্চনের থেকে। আমি রাস্তায় দাঁড়িয়ে কথা বলতে চাইনি। নিউ আলিপুর থেকে চেতলা পর্যন্ত আক্ষরিক অর্থে আমায় ধাওয়া করেছিল কাঞ্চন আর ওর বান্ধবী শ্রীময়ী চট্টরাজ। গাড়িতে আমার সঙ্গে ছেলে ছিল। রাস্তার মধ্যে সেই চেঁচামেচি, শ্রীময়ীর ওইভাবে গাড়ি আটকে হুমকি দেওয়া, কাঞ্চনের বান্ধবীর নির্দেশ মত কাজ করা... আমার ছেলে এখনও যেন ভুলতে পারছে না। রাত্রে আমি ঘুম পাড়াতে গেলে আমায় বলছে, আমরা কী দোষ করেছি মা? আমি উঠলে আমায় বলছে তুমি আমার সঙ্গে কথা বলো, আমার একা রেখে যেও না। ভয় করছে। একজন মা হিসাবে ছেলের এই অবস্থা আমায় সামলাতে হচ্ছে। আমি যদি রাস্তার সেই ঘটনার এফআইআর না করতাম, তাহলে আমার ছেলের কাছে বার্তা যেত, যে কেউ তার স্ত্রীকে রাস্তায় দাঁড়িয়ে অপমান করতে পারে। ও-ও পারে। আমি চাই আমার ছেলে বড় হয়ে কাঞ্চনের মত নিজের বাবা সত্ত্বাটাকে ভুলে না যাক।'


কাঞ্চন তাঁর বিরুদ্ধে পাল্টা অন্য অন্য সম্পর্কে জড়ানোর অভিযোগ তুলেছেন। কান্না ভেজা গলায় পিঙ্কি বলছেন, 'আমি আমার ব্যক্তিগত সম্পর্ক নিয়ে কোনও কথা বলতে যাইনি। এফআইআরটা একজন মা করেছে, একজন স্ত্রী নয়। কাঞ্চনের আমার বিরুদ্ধে এত অভিযোগ থাকলে ২৪ ঘণ্টা ফোন বন্ধ রেখে তারপর এফআইআর দায়ের করল কেন? আজ গোটা ইন্ডাস্ট্রি আমার পাশে আছে। সিনিয়র থেকে জুনিয়র, সবাই আমায় ফোন, হোয়াটঅ্যাপ করে বলছে, আমরা তোমার পাশে আছি। পরিবারের লোকজন বলছে, এতদিন বলিসনি কেন! সাবিত্রী চট্টোপাধ্যায় আমার ঠাকুমা। আমি কখনও সেই পরিচয় ব্যবহার করিনি। কাজ পেয়েছি নিজের যোগ্যতায়। তাহলে আমি কেন কাঞ্চন মল্লিকের নাম ব্যবহার করব! কাঞ্চন অভিযোগ করেছে, আমি টাকা চেয়েছি। আমি প্রেম করি। আমায় বলুক কার সঙ্গে প্রেম করি। তার নাম আর পদবি বলুক। আমায় কার সঙ্গে ঘুরতে আর কফি শপে যেতে দেখা গিয়েছে তাঁর নাম বলুক। আর টাকা চাওয়ার প্রমাণ হিসাবে ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট দেখাক, কল রেকর্ড দেখাক, হোয়াটসঅ্যাপ দেখাক। যা খুশি বলে দেওয়া যায় না, প্রমাণ করুক। আমি ওপেন চ্যালেঞ্জ করছি। দুটো সিনের মাঝখানে যেটুকু অবসর পাই, সেখানে ভিডিও কল করে ছেলেকে পড়াই। খাই তো ভাত, শাক আর ডিমসিদ্ধ। আমি খুব অল্পে খুশি। এত রাজনীতির হিসেব আমি বুঝি না। আমার জীবনটা খোলা খাতার মত। আমি যদি ভুল হতাম, এত মানুষকে পাশে পেতাম না।'


কথা বলতে গিয়ে বার বার কেঁদে ফেলছেন পিঙ্কি। তবু নিজেকে সামলে নিয়ে বললেন, 'আমি ভবিষ্যৎ জানি না। তবে, আমার ছেলেটা বাংলায় খুব কাঁচা। আমি সব বিষয় নিজে ওকে পড়াই। ভেবেছিলাম কাঞ্চন ওর বাংলাটা দেখবে। ছেলে ভালো রেজাল্ট করেছিল সেটা কাঞ্চনকে জানিয়েছিলাম। একটা ফোন করে শুভেচ্ছাও জানায়নি। আজ থেকে ছেলের সব দায়িত্ব আমার।'