কলকাতা: দীর্ঘ ৬ বছর নিজের গান শোনানোর জন্য মঞ্চ খুঁজেছেন। বিভিন্ন কোম্পানি গিয়ে শুনতে হয়েছে, 'এই গান চলবে না'। রোজগার ছিল না, ছিল অর্থাভাব। যখন মনে হয়েছে, আগামীকাল কী করব, অদ্ভুতভাবে তখন বাঁচিয়েছে সেই গানই। হঠাৎ করে বিজ্ঞাপনের সুযোগ এসেছে। কয়েক লাইন গেয়েছেন, পারিশ্রমিক পেয়েছেন ৫০০ টাকা। সেটা দিয়ে কয়েকটা দিন চলে গিয়েছে। তারপর আবার লড়াই শুরু। দীর্ঘ ২০ বছর পেরিয়ে এসে এখনও তাঁর মনে হয়, 'বারান্দায় রোদ্দুর' গানটা তাঁর জীবনের ভগবান। পুজোর নতুন গান নিয়ে এবিপি লাইভের সঙ্গে সুরেলা আড্ডায় পুরনো দিন ফিরে দেখলেন সঙ্গীতশিল্পী সুরজিৎ চট্টোপাধ্যায়।


পুজোর সময় মুক্তি পাচ্ছে তাঁর নতুন অ্যালবাম 'গান শোনার গান'। আগমনীর সুরে পর্দায় ফুটে উঠবে কেবলই গানের কলি। শিল্পীর পরিকল্পনা, তিনি কোনও চিত্রায়ণ করবেন না। কেবল গানের কথা থাকবে, আর তাতে ভর করেই নিজের মত চরিত্র কল্পনা করে নেবেন শ্রোতারা। প্রত্যেক শুক্রবার এবিপি আনন্দেই মুক্তি পাচ্ছে অ্যালবামের এক একটি গান। এছাড়াও গোটা অ্যালবাম মিলবে অনলাইনে। সুরজিৎ বলছেন, ' এবার পুজোয় নতুন কিছু করতে চেয়েছিলাম। 'গান শোনার গান' আমার একার অ্যালবাম নয়। এখানে একঝাঁক তরুণ প্রতিভা রয়েছে। গানের সঙ্গে চিত্রায়ণ করা হলে সেটা শ্রোতার কল্পনাকে বেঁধে দেয়। আমরা তা চাইনি।'


কেবল সুরজিৎ নয়, সঙ্গীতের জগতে রা রেখেছেন সুরজিৎ কন্যা অন্বেষাও। শিল্পী বলছেন, 'ও কখনও আমার সামনে গান গাইতে চায় না। আমি অনেক বার বলেছি। তবে বাদ্যযন্ত্রে ওর খুব আগ্রহ। ও ভায়োলিন শিখছে অনেক ছোটবেলা থেকে। গীটার বাজায়, পিয়ানো বাজায়। গানবাজনা নিয়েই থাকে। তবে ও বাঁশি বাজাতে পারে না, আর আমি ভায়োলিন পারি না। আমরা দুজনে একটা চুক্তি স্বাক্ষর করেছি, যে আমরা কেউ কারও জায়গায় ঢুকবে না। ও বাঁশি শিখবে না, আর আমি ভায়োলিন।'


২০ বছর ধরে গানের জগতের সঙ্গে যুক্ত। তবে এই মঞ্চ পাওয়াটা সহজ ছিল না। শিল্পী বলছেন, 'বিভিন্ন কোম্পানি গিয়ে শুনতে হয়েছে, 'এই গান চলবে না'। রোজগার ছিল না, ছিল অর্থাভাব। যখন মনে হয়েছে, আগামীকাল কী করব, অদ্ভুতভাবে তখন বাঁচিয়েছে সেই গানই। হঠাৎ করে বিজ্ঞাপনের সুযোগ এসেছে। কয়েক লাইন গেয়েছি, পারিশ্রমিক পেয়েছি ৫০০ টাকা। সেটা দিয়ে কয়েকটা দিন চলে গিয়েছে। তারপর আবার লড়াই শুরু। শেষে যখন মঞ্চ পেলাম, তখন সেটাকেই আঁকড়ে ধরেছি। বাঁশি শিখেছি, গীটার শিখেছি। মনে হয়েছে এই জায়গাটাকে আর যেতে দেব না।'